২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পাহাড়ে সংঘর্ষ : ফখরুল

-

পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা অন্তর্র্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনায় অনেকে সুযোগ নিচ্ছে। এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করি না।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতিতে কারফিউ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিষয়টি নিয়ে ‘যাদেরকে চেনেন’ তাদের সাথে কথাও বলেছেন। প্রশাসন সেই ‘পরামর্শ’ না মেনে ১৪৪ ধারা দেয়ায় হতাশ হয়েছেন। কারফিউ দিতে দেরি হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, সেখানে আমাদের দলের যিনি সভাপতি ছিলেন (রাঙ্গামাটি বিএনপির শাখা) দীপেন দেওয়ান, উনি আগে এমপি প্রার্থী ছিলেন। তিনি আমাকে ফোন করে বলেছেন যে, ‘স্যার ইমিডিয়েটলি কারফিউ দিতে বলেন, কারফিউ ছাড়া একে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’ এর পর বিষয়টি নিয়ে যাদেরকে চিনি, তাদেরকে জানিয়েছি। কিন্তু পরে কারফিউ হয়নি। ১৪৪ ধারা দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ঠিক ইফেকটিভলি কন্ট্রোল তারা করতে পারেনি। এর মধ্যে এটা (সঙ্ঘাত) বিস্তার লাভ করেছে। এই যে দেরি হচ্ছে, এই দেরিটা কিন্তু ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আলোচনার ভিত্তিতে অন্তর্র্বর্তী সরকার এসেছে। সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই সরকারের যে কাঠামো, তাতে যারা এসেছেন, তাদের বেশির ভাগই টেকনোক্র্যাট, ব্যুরোক্র্যাট, একাডেমিশিয়ান। দু’জন ছাত্রনেতা, কিছু এনজিও কর্মকর্তা। এখানে যেটা দুর্বলতা, সেটা হচ্ছে রাজনৈতিক মুখ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত আলোচনা করে তা কমানো যেত। এটা বোধ হয় বেশি করা যাচ্ছে না, কম (আলোচনা) হচ্ছে। তাতে রাজনৈতিক দুর্বলতা থাকছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে এ ধরনের পরিবর্তনের পর যেটি হয় (সব কিছুতেই হয়), সরকারে একটি সমস্যা দেখা দেয়। স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। সুযোগ সন্ধানীরা সুযোগ নিতে চায়। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে এটা আছে। তদবির বেড়ে যায় খুব। সবাই তখন নতুন সরকারের কাছে যেতে চায়। ফলে আমরা যদি আশা করি, সরকার দ্রুত সুন্দর ও সঠিকভাবে রান করবে, তা ঠিক হবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখনো সব জায়গায় নিরপেক্ষ বা পরিবর্তনের পক্ষের লোক বসানো সম্ভব হয়নি। ফ্যাসিবাদী সরকারের লোকজন রয়ে গেছে। এ বিষয়ে তাদের (সরকার) অজ্ঞতা রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যেহেতু তাদের আলোচনা কম হচ্ছে, তাই দূরত্ব থাকছে। ফলে এ জায়গায় একটা সমস্যা থাকছে। তাই ৫ আগস্টের পর যতগুলো ঘটনা ঘটছে এগুলো বিচ্ছিন্ন নয়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার তাদের (পাহাড়ি) সাথে চুক্তি করেছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান করেনি। পাহাড়িদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এগুলোও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দ্রুততম সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় সমস্যা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বন্ধ কোনো সমাধান না। তবে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করা উচিত।
বাসায় ফিরলেও ‘খালেদা জিয়া খুব সুস্থ নন’
বাসায় ফিরলেও বেগম খালেদা জিয়া ‘খুব সুস্থ নন’ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) সুস্থ না। উন্নত চিকিৎসায় কবে বিদেশে নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে ডাক্তাররা এখন পর্যন্ত ফিট টু ফ্লাইং- মনে করছেন না। সে জন্য বিদেশে যেতে ওনার বিলম্ব হচ্ছে।
এভারকেয়ার হাসপাতালে ৬ দিন ভর্তি থাকার পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের বাসায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মেডিক্যাল বোর্ড তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলেও তিনি বাসায় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন। অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement