২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

অস্থির পুঁজিবাজারে পয়েন্টের সাথে ফিরেছে বাজার মূলধন

-

- ডিএসইর মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ২৪২ কোটি টাকা
- গত এক বছরের তুলনায় ডিএসইর সূচক ইতিবাচক পথে

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনেও দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা কমছে না। বাজারের সার্বিক পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরাও হতাশ। তবে দৈনিক গড় লেনদেনে টাকা ও শেয়ারের পরিমাণ কমেছে আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তাহে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে সংস্কার ও কিছু পদক্ষেপের কারণে পুঁজিবাজারে ক্রেতার সমাগম বেড়েছে। যেখানে সপ্তাহের শুরুতে বিক্রেতার ভিড়ে বিক্রির চাপে ছিল পুঁজিবাজার। শেষ দিনে এসে সেই চাপ সমান সমান হয়ে গেছে।
সাপ্তাহিক লেনদেনে দুই বাজারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগের সপ্তাহের মতোই অস্থিরতায় কেটেছে গেল সপ্তাহের পুঁজিবাজার। অনিশ্চয়তার আতঙ্ক ছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহ শেষে ঢাকা স্টকের বা ডিএসইর বাজার মূলধন শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ বা দুই হাজার ২৪২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বেড়ে এখন ছয় লাখ ৯৫ হাজার ৫৭১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৯৩ হাজার ৩২৯ কোটি তিন লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে সূচক বাড়লেও সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে আরো একটু পয়েন্ট পেয়েছে। তবে কমেছে বেচাকেনা এবং দৈনিক ও মোট লেনদেন। সূচক ডিএসইএক্স ৮.৭৫ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৫.৬৯ পয়েন্ট, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২.১৩ পয়েন্ট এবং এসএমই সূচক ৪১.৫৬ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। গত সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন আরো কমেছে। মোট ১৫১ কোটি ১৯ লাখ ৫০ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর এসএমইতে আরো কমে ২৮ কোটি ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছে।
প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬১৩ কোটি আট লাখ ৭০ হাজার টাকার। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৬৪৪ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার টাকার; অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা ৩১ কোটি ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা কমে গেছে। বিদায়ী সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৫২ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার। তার আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল তিন হাজার ২২১ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা; অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ২৩.৮৭ শতাংশ বা ৭৬৯ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গড়ে শেয়ার লেনদেন কমেছে ১৮.৭৭ শতাংশ। গেলো সপ্তাহে ৬৯ কোটি আট লাখ ৯০ হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। তার আগের সপ্তাহে ৮৭ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজারটি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ৩০ হাজারটি লেনদেন কম হয়েছে। পুরোসপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ২১৩টির এবং ৪২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে লেনদেনে আসেনি ১৬টি কোম্পানি।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সপ্তাহটিতে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৭.৯৯ শতাংশ বেড়েছে। অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬.১৮ শতাংশ, সোনালি পেপারের ১৪.২৫ শতাংশ, ডমিনেজ স্টিলের ১৪.০৫ শতাংশ, সোনালি আঁশের ১২.৩৭ শতাংশ, এসকে ট্রিমসের ১১.৭৬ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের ১১.৫১ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের ১০.৬০ শতাংশ, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডের ৯.৮৬ শতাংশ এবং এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৯.২৭ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
দর পতনের শীর্ষ ১০ : ডিএসইতে সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৪.২৩ শতাংশ কমেছে। সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে হামি ইন্ডাস্ট্রিজের ১৪.০১ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ১১.৬৩ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ১০.২৮ শতাংশ, এমবি ফার্মার ১০.১৭ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৯.০৯ শতাংশ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের ৮.৩৩ শতাংশ, লিব্রা ইনফিউশনের ৭.৯৪ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের ৭.৯১ শতাংশ এবং উসমানীয়া গ্লাস শীট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ৭.৫৫ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।
লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি : ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সোনালি আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৬ কোটি ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.২৯ শতাংশ। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লিনডে বাংলাদেশ লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রতিদিন গড়ে ১৮ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ২.৯৬ শতাংশ। এছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে সি পার্ল হোটেলের ১৫ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১৪ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্রাক ব্যাংকের ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার টাকা, ইসলামী ব্যাংকের ১৪ কোটি ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর ১২ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ইবনে সিনা ফার্মার ১২ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং সোনালী পেপার এন্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের ১০ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আর চট্টগ্রাম স্টকে আবার উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে সূচকগুলো। সিএএসপিআইতে ৫১.৮৭ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২৮.৫২ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। এক কোটি চার লাখ ৩২ হাজার ৭২৩টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে ৪২ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার ৪৪২ টাকা বাজারমূল্যে। আগের সপ্তাহের তুলনায় এই লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। ৩২১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও ১৪২টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫২টির এবং ২৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল। বাজার মূলধনে অংশীদারিত্বের এ শ্রেণীর বেড়ে ৭৮.৬০ শতাংশ, বি শ্রেণীর কমে ১৭.৭৬ শতাংশ, এন শ্রেণীর কমে ২.৯৮ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর কমে ০.৬৬ শতাংশে এসেছে। শুধু এ শ্রেণীর বাজার মূলধনে অংশীদারিত্ব বেড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
রাজধানীতে সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু তোফাজ্জল হত্যা : ঢাবির ৬ শিক্ষার্থীর দায় স্বীকার কুমিল্লা-১০ বিনির্মাণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে : ইয়াছিন আরাফাত উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতেছিল আ’লীগ : হামিদ আজাদ ভাইকে হত্যা করাতে ১৪ মাসের ষড়যন্ত্র ভান্ডালজুড়ি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে খুলনায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিক রনো ও তার পরিবার চট্টগ্রাম পানগাঁও নৌরুট জনপ্রিয় করার উদ্যোগ

সকল