ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় কুষ্টিয়ায় জনমনে আতঙ্ক
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- ২৬ আগস্ট ২০২৪, ২০:৫৫
ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেয়ায় কুষ্টিয়া অঞ্চলের মানুষের মাঝে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বিপৎসীমার সোয়া ২ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। প্রশাসন এ বিষয়ে নজর রাখছে।
তবে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলার উদয়নগর বিজিবির বিওপি ক্যাম্প ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, নদীর তীরবর্তী কুষ্টিয়া অঞ্চলের দুয়েকটি পয়েন্ট ছাড়া সবগুলোর অবস্থা ভালো রয়েছে। এর মধ্যে দৌলতপুরে বিজিবির উদয়নগর বিওপি ক্যাম্প ভয়াবহ ঝুঁকিতে মধ্যে রয়েছে। এই ক্যাম্পটির তিনপাশে পদ্মা নদী। এই ক্যাম্পর ৫০ গজের বাইরে পানির অবস্থান।
এদিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (ফরিদপুর অঞ্চল) ওই স্থানটি পরিদর্শন করেন।
প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান আরো জানান, ভেড়ামারা উপজেলার মসলেমপুর এলাকার বাঁধের ভাঙনরোধে গতকয়েক দিন ধরে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। কুষ্টিয়া শহররক্ষা মঙ্গলবাড়ির বাঁধে গত সপ্তাহে পর্যাপ্ত বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বুঝা যাবে ফারাক্কার পানির প্রতিক্রিয়া।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরা প্রস্তত রয়েছি।’
বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ জানান, উদয়নগর বিওপি ক্যাম্প ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ক্যাম্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যাম্পের তিনপাশে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এক দিকে মাত্র ৫০ গজের বাইরে পানি প্রবেশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ক্যাম্পের গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সরাতে শুরু করেছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে সেখানে অতিরিক্ত সৈনিক মোতায়েন রাখা হয়েছে।’
তিনি জানান, ক্যাম্পটি নদীতে বিলিন হলে ওই ক্যাম্পের আওতায় সীমান্তবর্তী এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়বে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীল বলেন, ‘ফারাক্কার পানি বৃদ্ধিতে কুষ্টিয়ার ওপর কী প্রভাব পড়বে তা এ অবস্থায় বলা মুশকিল। তবে রক্ষা বাঁধগুলো ভালো রয়েছে। আশা করি তেমন কোনো সমস্যা হবে না।’
তিনি জানান, মঙ্গলবার দুর্যোগ প্রতিরোধ কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সোমবার দুপুরে সেখানে ১২ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ফারাক্কার পানি আসায় এর পরিমাণ বৃদ্ধির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে সোমবার বিকেলে ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ার খবরে পুরো জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফারাক্কার প্রভাবে রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও পাবনায় সর্বোচ্চ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রবল স্রোতের কারণে নদীর তীরবর্তী মানুষের মাঝে দারুণ শঙ্কা কাজ করছে।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমীন সুলতানা বলেন, ‘ফারাক্কার কারণে নদীভাঙন বা বন্যা পরিস্থিতির অবনতি মোকাবিলায় প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা