সুন্দরগঞ্জে পানিবন্দী ৩০ হাজার পরিবার
- রেজাউল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ
- ০৬ জুলাই ২০২৪, ১৬:১০
সুন্দরগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বন্যার্তদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবা ও পশু খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে এ পর্যন্ত পানিবন্দী পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩০ টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবার। পানিবন্দী পরিবারগুলো ইতোমধ্যে উচু স্থানে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে উঠে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে। গৃহপালিত পশুপাখি, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশু ও প্রসূতি নারীদের নিয়ে নিদারুণ কষ্টে রয়েছে বন্যার্ত মানুষেরা। পানি বাড়ায় চরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকালেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সবগুলো চর ডুবে গিয়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সেই সাথে চরের সবগুলো ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। বন্যা এলে তিস্তার শাখা নদীর আশপাশ ডুবে যায় পানিতে। বন্যা এলেই শুরু হয় নদী ভাঙন। চলতে থাকে বছরব্যাপী। নদী পাড়ের মানুষের দাবি, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ দিনেও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। যার কারণে প্রতি বছর কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজার হাজার একর ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও বানভাসীদের কষ্ট বেড়েছে। সরকারিভাবে যে বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা একেবারেই অপ্রতুল। অনেকে ঘরের টুইয়ের মধ্যে বসবাস করছে। চরের মানুষ বিশেষ করে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছে মানুষেরা।
হরিপুর ইউনিয়নের জহুরুল ইসলাম বলেন, পানি বাড়ার সাথে সাথে চরের মানুষ কষ্ট বাড়তে শুরু করে। হরিপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গোটা চরাঞ্চল এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার চরমভাবে বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী বেশিভাগ পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে এখনো বসতবাড়ি ছেড়ে যায়নি। ঘরের চকির ওপর এবং টুইয়ের মধ্যে বসবাস করছে।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মোজাহারুল ইসলাম জানান, পানি বাড়ায় তার গোটা ইউনিয়ন প্রায় ডুবে গেছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বন্যা দুর্গত মানুষের তালিকা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। বানভাসী মানুষের বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য, চিকিৎসা সেবার অভাব দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: ওয়ালিফ মণ্ডল জানান, বন্যা কবলিত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে ৪ হাজার ৯০০ পরিবারের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ পরিবার উচু স্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাঁধে এবং আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ৩০ টন চাল ও ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১১ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা