জমি রক্ষায় বিষের বোতল হাতে ও কাফন পরে কৃষকদের বিক্ষোভ
- আতিয়ার রহমান, জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা)
- ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৯:৫৫
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মাঠের তিন ফসলী জমিতে ৫০ মেঘাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির জন্য কৃষকদের ফসলী জমি বিক্রি করতে বাধ্য করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
কৃষকরাও ২০১৮ সাল থেকে তাদের জমিতে সোলার প্লান্ট করতে দিবে না মর্মে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন । কিন্তু প্রভাবশালী মহল থেমে নেই তাদের কার্যক্রম থেকে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে শুরু হলে দুপুরের দিকে এ বিষয়টি পরিদর্শন করতে এলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্তকারী টিম।
তিন ফসলী মাঠের জমিকে ২০১৮ সালে জীবননগর উপজেলার সাবেক কৃষিকর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভুয়া অকৃষি জমির প্রতিবেদন তৈরি করে সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রতিবেদন দেন।
সে বছর থেকেই একটি প্রভাবশালী চক্র এই আবাদি কৃষি জমিতে সোলার বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের জন্য উঠে পড়ে লাগে।
বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিমের জমি পরিদর্শন করাকে কেন্দ্র করে কাফনের কাপড় গায়ে দিয়ে, বিষের বোতল হাতে নিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে করলো কৃষ্ণপুর গ্রামবাসী।
এ সময় মাঠের জমি পরিদর্শনকালে গ্রামবাসী উত্তেজনার ঝড় তোলেন। দীর্ঘ সময় ধরে তারা বিষের বোতল হাতে নিয়ে ও কাফনের কাপড় পরে পরিবারপরিজনদের সাথে নিয়ে মানববন্ধনও করে। এ সময় গ্রামের প্রান্তিক কৃষকরা জানায় আমরা জীবন দেব, রক্ত দেব তবুও আমাদের ফসলের জমি দেব না।
কৃষ্ণপুর গ্রামে ভূমি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিম গ্রামে প্রবেশের পর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সাল থেকে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাইকিলিক্ট এনার্জি লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ৬০০ বিঘা তিন ফসলী জমিতে ৫০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করে আসছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা কৃষ্ণপুর গ্রামের উল্লেখিত জমি যে তিন ফসলী জমির স্বপক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু তার পরেও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর এমপি ওই কোম্পানির পক্ষে গত ১৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে ভূমি মন্ত্রণালয় বরাবর একটি ডিও লেটার দেন।
ওই ডিও লেটার পাওয়ার পর গত ১৬ মে ভূমি মন্ত্রণালয় জয়েন সেক্রেটারি যুগ্মসচিব মোছাম্মাৎ মমতাজ বেগমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
ওই তদন্ত কমিটি সদস্যরা বৃহস্পতিবার কৃষ্ণপুর গ্রামের মাঠে সরজমিনে পরিদর্শন করতে যান। তদন্ত কমিটির সদস্যরা কৃষ্ণপুর গ্রামের মাঠে প্রবেশ করলে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ গ্রামবাসী তদন্ত কমিটির কাছে জমি অধিগ্রহণ না করার জন্য আবেদন
জানায়। এবং গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বলে জমি অধিগ্রহণ হলে তার জীবন দেবে তবু জমি দেবে না।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির শান্ত রাখতে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। এনিয়ে গত ২০২২ সালে ওই কোম্পানির পক্ষে জনৈক আবু তাহের জবা গ্রামের তিন শতাধিক কৃষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় কৃষকরা আদালতে বারান্দায় প্রতিনিয়ত ধর্ণা দিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গার কৃষ্ণপুর গ্রামে জমি পরিদর্শনকালে উত্তেজনা জয়েন সেক্রেটারি বললেন কৃষি বিভাগের তদন্ত এবং আমি যা দেখলাম সে অনুসারে প্রতিবেদন দেব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা