০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫
`

নওয়াপাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যু

নওয়াপাড়ায় বেসরকারি হাসপাতালে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যু - নয়া দিগন্ত

যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া ফাতেমা নামে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভুল অপারেশনে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম ইতি বেগম (২২)।

রোববার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর মৃত্যুর পর উত্তেজিত জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে। পরে অভয়নগর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মৃত ইতি বেগম দর্শনা উপজেলার রাজের স্ত্রী ও অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামের আরশাব শেখের মেয়ে।

এ বিষয়ে মৃত ইতির পক্ষে রফিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অনিয়মের কোনো শেষ নেই, প্রায়ই ওই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মানুষের মৃত্যু হয়। আমরা এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না, আমরা চাই ভুল চিকিৎসার অবসান হোক এবং এই মৃত্যুর সঠিক বিচার চাই। ইতির একটি ৭ বছরের ছেলে রয়েছে।

জানা গেছে, ২৯ জুন ইতি গর্ভবতী অবস্থায় ওই হাসপাতালে ভর্তি হন, শনিবার রাতেই খুলনা বিভাগের পরিচালক ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ তাকে ‘সিজারিয়ান’ অপারেশন করলে একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়। পরে রাত ৩টার পর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় ওই নারী ভীষণ অসুস্থ হয়ে। এ অবস্থায় রোববার খুলনায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ। স্বজনরা খুলনা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

আরো জানা গেছে, এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ফাতেমা হাসপাতাল ঘেরাও করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বসাবসি করে মীমাংসার আশ্বাসে উত্তেজিত জনগণ শান্ত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওয়াপাড়া ফাতেমা হাসপাতালে এর আগেও ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে অনেক রোগীর মৃত্যু হলেও অজানা কোনো কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যে কারণে দিন দিন ওই হাসপাতালে বাড়ছে মৃত্যু। এবার ঘটলো ইতির মৃত্যু। জরুরিভাবে ওই হাসপাতালের সকল অনিয়ম বন্ধ করতে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন সচেতন মহল।

ইতির মৃত্যুর বিষয়ে ফাতেমা প্রা: হাসপাতালের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম জানান, ‘ডাক্তার সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করার পরেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আমরা খুলনা পাঠিয়েছি, ওই রোগীর আইসিইউ খুব দরকার ছিল, আমাদের চিকিৎসায় কোনো ভুল নেই।

ডাক্তার মঞ্জুরুল মোরশেদ মোবাইল ফোনে জানান, ‘ভুল চিকিৎসা নয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আমরা দ্রুত খুলনায় পাঠিয়েছি, কিন্তু এভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হবে ভাবতেও পারছি না,’ বলেই তিনি লাইন কেটে দেন।

অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।


আরো সংবাদ



premium cement