বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের ওপর এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জের অভিযোগ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ জুন ২০২৪, ১২:৩৪
বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় ওই জায়গায় পাসপোর্ট যাত্রীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করার অভিযোগ উঠেছে সেখানকার দায়িত্বরত আর্মস ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল ৭টার দিকে বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে অনেক যাত্রী সাথে থাকা ব্যাগ ফেলে ছোটাছুটি শুরু করেন। এতে কিছু সময় যাত্রী যাতায়াত বন্ধ থাকে।
পাসপোর্ট যাত্রীদের উপর হামলার খবর পেয়ে সরেজমিনে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে দেখা যায়, আর্মস ব্যাটালিয়ন ও আনসার সদস্যরা আকস্মিক নারী-পুরুষদের লাঠিচার্জ করছেন। পোর্টথানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, আজ সকাল ৭টার দিকে প্রতিদিনের মতো বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে ভারতগামী যাত্রীর দীর্ঘ লাইন ছিল। হঠাৎ ছিটেফোটা বৃষ্টি শুরু হলে ভিজে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে যাত্রীরা লাইনভেঙে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের বারান্দায় উঠে যায়। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত যাত্রীর ঠাসাঠাসিতে টার্মিনালের সামনের গ্লাস ভেঙে একজন আর্মস ব্যাটালিয়নের সদস্যের হাত কেটে যায় এবং সামান্য আহত হয়। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে আর্মস ব্যাটালিয়নের পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে যাত্রীদের ওপর এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জ করে। এতে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। কিছু সময় যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও পরে আবার স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী যাতায়াত শুরু হয়।
ঢাকার পাসপোর্ট যাত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য সকাল ৭টায় ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ সামান্য বৃষ্টি শুরু হলে লাইন থেকে সরে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের বারান্দায় উঠেন। এ সময় আর্মস পুলিশ ও আনসার সদস্যরা আমাদের এলোপাতাড়ি মারতে থাকে আর ধাক্কা দেয়। পরে জানলাম একজন পুলিশ সদস্য সামান্য আহত হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে।
ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী আনন্দ মন্ডল বলেন, ‘বৃদ্ধ বাবা-মা-শিশুদের নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর কষ্ট পুলিশ ও আনসাররা বুঝবে কি করে। ওনারা টাকার বিনিময়ে লাইন ছাড়া লোক পার করার কাজে ব্যস্ত থাকে। বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দেখা উচিত।
পাসপোর্ট যাত্রী কামনা বালা জানান, ‘হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রাস্তা থেকে একটু উপরে উঠেছি। প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের বারান্দায় উঠতে পারবো না তাহলে ৬০ টাকা কিসের জন্য নেয়া হলো। এখানে পুলিশ সদস্যদের যাত্রীদের মারধরের আচরণ মেনে নেয়া যায় না।’
পাসপোর্ট যাত্রী ইন্দ্রজিত জানান, ‘বাধ্য হয়ে বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশীরা ভারতে যান। পুলিশ এবং আনসারদের এমন অন্যায় আচরণ মেনে নেয়া যায় না। সুষ্ঠুভাবে যাতে যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারেন সে বিষয়ে দুই দেশেরই গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।
বেনাপোল বন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত আর্মস ব্যাটালিয়নের ইনচার্জ বাদল চন্দ্র বলেন, ‘আজকে যাত্রীর অনেক ভিড় ছিল। এ কারণে তাদেরকে লাইনে আনতে গিয়ে হইতো কিছু ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আমার সদস্যরা কারো উপরে লাঠিচার্জ করেনি।’