প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিল বকেয়া, হেল-দোল নেই প্রশাসনের
- টি এইচ জায়িম, ইবি
- ০৬ জুন ২০২৪, ১৫:৩৯
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নব-নির্মিত ডরমেটরির কাজ শেষের দুই বছর পেরুলেও কক্ষ বরাদ্দ দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, নির্মাণকাজ শেষের পর সেখানে কক্ষ বরাদ্দ পেতে আবেদন করেও শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
তবে, কক্ষ বরাদ্দে প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষুব্ধ হয়ে অবৈধভাবে তালা ভেঙে ১৬টি বাসা দখল করেন কতিপয় শিক্ষক-কর্মকর্তা। ডরমেটরি দখলের পর বরাদ্দ ছাড়াই সেখানে অবৈধভাবে এক বছর যাবত অবস্থান করছেন তারা। এ সময়ে তারা কোনো প্রকার ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল না দেয়ায় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে দখলকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের। তবে, এ ব্যাপারে কোনো হেল-দোল নেই প্রশাসনের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর জানিয়েছে, ২০২২ সালের জুন মাসে ডরমেটরি-২ এর সকল নির্মাণকাজ শেষে প্রকৌশল দফতরের কাছে ভবন হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর সেটি প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেয় সেই দফতর।
নির্মাণকাজ শেষের পর ভবনে কক্ষ বরাদ্দ পেতে বাসা বরাদ্দ কমিটির কাছে আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। এ দিকে, নির্মাণকাজ শেষের এক বছরেও কক্ষ বরাদ্দ না দেয়ায় গত বছরের ২১ জুন তালা ভেঙে ওই ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার ১৬টি বাসা দখল করে শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
কক্ষ দখলকারী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বাসা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও কক্ষ বরাদ্দে কর্তৃপক্ষের ঢিলেমির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এ দিকে, প্রকৌশল দফতর জানিয়েছে, অবৈধভাবে বাসা দখলের পর শিক্ষক-কর্মকর্তারা লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। তবে অনুমোদিত কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তা সেখানে না থাকায় সে বিল তুলতে পারছে না দফতরটি।
এ বিষয়ে প্রকৌশল দফতর থেকে প্রশাসনের কাছে নোট দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান মেলেনি।
এ দিকে, এক বছরে অবৈধভাবে দখলকৃত দুই কক্ষবিশিষ্ট ১৬টি বাসার কোনো ভাড়া তুলতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অ্যাস্টেট দফতর জানায়, এসব বাসার মাসিক ভাড়া ১৭৫০ টাকা। সে হিসাবে এক বছরে ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া পড়েছে এসব বাসায়। কিন্তু, এক বছরেও এসব বাসার ভাড়া উত্তোলন ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাসা বরাদ্দের বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ফলে অবৈধ পন্থায় বাসাগুলোতে বাধাহীনভাবে অবস্থান করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা।
অবৈধভাবে বাসা দখলকারী এক কর্মকর্তা বলেন, ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল নেয়ার জন্য কোনো নির্দেশনা দেয়নি প্রশাসন। আমরা অবৈধভাবে এখানে থাকতেও চাই না, কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসন কর্তৃক বাসা বরাদ্দের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না। তারা আমাদের নামে বাসা বরাদ্দ না দিলে আমরা বাসা ছেড়ে চলে যাব। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তটা তো প্রশাসনকে দিতে হবে।
অ্যাস্টেট শাখার প্রধান শামসুল ইসলাম জোহা জানান, ‘তালা ভেঙে ডরমেটরিতে বাসা দখলের পরই অ্যাস্টেট শাখা থেকে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের ভূমিকার কারণে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। ভিসি স্যার কয়েকদিন আগে প্রধান প্রকৌশলী ও অ্যাস্টেট প্রধানকে ডেকেছিল। তিনি আমাদেরকে ওই শিক্ষক-কর্মকর্তাদের লিস্ট দিতে বলেছে। আমরা তা জমা দিয়েছি।
তবে এ ব্যাপারে অ্যাস্টেট ও প্রকৌশল দফতর কর্তৃক অবগতির বিষয়টি অস্বাীকার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-ভিসি ও বাসা বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রকৌশল দফতর বা অ্যাস্টেট শাখা থেকে আমাদের কাছে লিখিতভাবে এই ভবন হস্তান্তর করা হয়নি। ওখানে কে উঠেছে বা অবস্থান করতেছে তা আমাকে লিখিতভাবে জানানো হয়নি। অ্যাস্টেট অফিস লিখিতভাবে আমাকে জানালে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা