জুলাইয়ে দর্শনা থেকে ঢাকায় চলবে জোড়া ট্রেন
- মনিরুজ্জামান সুমন, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
- ২৫ মে ২০২৪, ১৬:৪৬
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে দর্শনা-চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী দুটি ট্রেন এ রুট দিয়ে সরাসরি চলাচল শুরু করবে। ফলে যাত্রী ভোগান্তি কমবে। সময় বাজবে ৫ ঘণ্টা। দর্শনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতের সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা ১০ মিনিট আর চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা। এদিকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা-দর্শনায় আসতে একই সময় লাগবে। ফলে যাত্রী ভোগান্তি অনেক কমে যাবে। যা এর আগে এ রুটে যাতায়াতে কমপক্ষে ১০ ঘণ্টার মতো সময় লাগত।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-দর্শনা রুটে ট্রেন থাকছে দুটি।
বর্তমানে দেশে লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তঃনগর এই চার ধরনের ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ট্রেনের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩৯ পয়সা আর আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া নন-এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর কিলোমিটার প্রতি এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা।
খুলনা থেকে ঢাকা কুষ্টিয়া, মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর রেলস্টেশন হয়ে ঢাকাগামী সরাসরি চলাচলকারী তিনটি ট্রেন চিত্রা, বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস সরিয়ে নিয়ে যশোরের রুপদিয়া বা পদ্মবিলা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।
অন্য দিকে খুলনা থেকে রাজশাহী, উত্তরবঙ্গ চিলাহাটি ট্রেন আগের মতোই চলাচল করবে বলে জানান রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
দর্শনা-ঢাকা রুটে প্রথম ট্রেনটি দর্শনা থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছবে দুপুর ১২টায় এবং ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে দর্শনায় পৌঁছবে বিকেল ৪টায়। দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে দর্শনায় পৌঁছবে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এবং দর্শনা থেকে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছবে পরদিন সকাল ৫টায়।
তবে নতুন দুটি ট্রেন চালু হওয়াতে স্টেশন সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্টেশন পার্শ্ববর্তী আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কমতে পারে বলেও তারা ধারণা করছেন। চুয়াডাঙ্গা স্টেশন সংলগ্ন এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকার তিনটি ট্রেন যদি এ রুটে বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে আমাদের ব্যবসা কমবে। কারণ যে দুটি ট্রেন চলাচল করবে ওই সময় কেউ সেভাবে হোটেলে থাকবে না।
এছাড়া দর্শনার স্টেশন এলাকার ভ্যানচালক করিম মিয়া বলেন, দর্শনা থেকে নতুন ট্রেন চালু হলে আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। কারণ খুলনা থেকে অনেক যাত্রী দর্শনা বর্ডার হয়ে ইন্ডিয়া যায়। নতুন রুট চালু হলে আমাদের ভাড়াগুলো কম হবে।
দর্শনা হল্টস্টেশনে ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, সড়ক লাইনের মতো ট্রেন লাইনও ভাগ হচ্ছে, আগে আমরা টিকিট সময় মতো পেতাম না, ব্লাকে কিনতে হতো, এই দুটি ট্রেন চালু হলে আমাদের সুবিধা হবে যাত্রী-টিকিট সময় মতো পাব বলে আশা করি। এছাড়া ঢাকায় যাওয়ার জন্য সময়ও কম লাগবে।
এছাড়া ঢাকা জর্জ কোর্টের অ্যাডভোকেট দর্শনার সন্তান আবু সাইদ বলেন, নতুন দুটি ট্রেন চালু হওয়াতে আমাদের মতো ঢাকাগামী ও ঢাকায় কেন্দ্রিক কাজ থাকা ব্যক্তিদের সুবিধা। কারণ এই দুটি ট্রেন যে সময় চলাচল করবে, একজন ব্যক্তি দিনে ঢাকা যেয়ে কাজ শেষ করে আবার দিনে বাসায় চলে আসতে পারবেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন টিকিট চেকার (টিটি) বলেন, রেলওয়ে কতৃপক্ষ যে মাস্টার্স প্ল্যান করছে, এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। আমাদের ডিউটি পরিবর্তন হবে এবং আমি মনে করি দর্শনার চেকপোস্টের যাত্রীদের তাদের গন্তব্যে দ্রুত যেতে সুবিধা হবে। আর সব ট্রেনই যেহেতু চুয়াডাঙ্গা হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে সবাই সুবিধা পাবে।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মো: মিজানুর রহমান বলেন, শুনেছি বাংলাদেশ রেলওয়ের মাস্টার প্ল্যান চালু হলে এ রুটের তিনটি ট্রেন যশোর হয়ে ঢাকা যাবে। আর আমাদের রুটে নতুন শিডিউল করে দুটি ট্রেন দেয়া হবে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো আদেশ-নির্দেশ এখনো পায়নি।
দর্শনা রেলওয়ে বুকিং সহকারী মিন্টু কুমার রায় বলেন, চলতি বছর জুলাই থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মাস্টার প্ল্যান চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ নতুন রুটের কর্যক্রম শুরু হলে আমাদের রেলওয়ে কর্মরত ব্যক্তিদের অনেক সুবিধা হবে। ট্রেনের চাপ কম থাকবে, এতে দুর্ঘটনার হারও কমে আসবে। বিশেষ করে দর্শনা চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া যাত্রীদের সুবিধা হবে। দিনের দিনে ঢাকাতে যেতে পারবে, আবার দিনে কাজ শেষ করে চলে আসতে পারবে। অন্যদিকে ট্রেনের টিকিটও সব সময় সহজে মিলবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা