গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া মহম্মদপুরের সেই কলেজছাত্রী মারা গেছেন
- মহম্মদপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা
- ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:০০
মাগুরার মহম্মদপুরে গায়ে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া সেই কলেজছাত্রী আখি আক্তার (১৮) মারা গেছে।
দীর্ঘ ১৬ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ার পর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়। সেখানেই তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে তার বাবা আকরাম মোল্যা জানান।
আখি উপজেলা সদরের কাজী সালিমা হক মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় হাত-পা বেঁধে ওই ছাত্রীর শরীরে ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া যায় তার সাবেক স্বামী নাজমুল মোল্যার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ১৭ আগস্ট মহম্মদপুর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়। এতে ছাত্রীর সাবেক স্বামী-শ্বশুরসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো তিনজনের নাম উল্লেখ করেন ছাত্রীর দাদা মো: রতন আলী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে উপজেলার কেড়িনগর গ্রামের ওই মেয়েটির সাথে একই গ্রামের মাসুদ মোল্যার ছেলে নাজমুল মোল্যার প্রেমের সম্পর্কের জেরে বিয়ে হয়। তবে বিয়ের সাত মাস পরেই তাদের ছাড়াছাড়ি হয়।
মামলার এজাহারে ছাত্রীর দাদা রতন আলী বলেন, প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হলেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হয়নি। বিয়ের সাত মাস পর নাজমুলকে তালাক দেয় আখি। বিষয়টি নাজমুল মেনে নিতে পারেনি। কিছুদিন পর থেকে তাকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সে। আকলিমা এতে রাজি না হওয়ায় কিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় ‘অ্যাসিড মারা’, ‘ঘরে আগুন’ দেওয়া হুমকি দেয় নাজমুল। বিষয়টি আখি তার পরিবারকে জানায় বলে এজাহারে দাবি করা হয়।
এর মধ্যে গত ১৫ আগস্ট বিকালে ওই ছাত্রী বাথরুমে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা নাজমুলের লোকজন আখির ব্যবহৃত ওড়না দিয়ে তাকে বেঁধে ডিজেল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়। এসময় তার চিৎকারে স্বজন ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলেও তার শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার ১৬ দিন পর তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর মামলা প্রধান আসামি সাবেক স্বামী নাজমুল মোল্যা পলাতক রয়েছেন।
সরেজমিনে গেলে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। তবে ঢাকার ওই হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার আগে আখির দেয়া বক্তব্যের সাথে সাবেক স্বামীর স্বজনদের বক্তব্য মেলে না। পরিবারের সদস্যদের কাছে রেকর্ড করা বক্তব্যে আখি বলেন, ‘কেউ পেছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরেছে আর কেউ আমার গায়ে পানি (ডিজেল) ঢেলে দিয়েছে। তারপর গায়ে আগুন লেগে গেছে।’
মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস ওই ছাত্রীর মৃত্যু তথ্য নিশ্চিত করেন জানান, বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট রহস্য আছে। তবে তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই রহস্য উন্মোচিত হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা