০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`

চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গে আরো দু’জনের মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় নতুন ১২ জন করোনা আক্রান্ত
চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গে আরো দু’জনের মৃত্যু -

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা উপসর্গ নিয়ে দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। শামীম রেজা ও হামিদা বেগম নামে দু’জন হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সোমবার রাত ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিসে ৩২ জনের রিপোর্ট এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ১২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ ও বাকি ২০ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬৮ জনে।

গতকাল জেলায় নতুন আক্রান্ত ১২ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৪ জন ও দামুড়হুদা উপজেলার ৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৮ জন ও নারী ৪ জন। বয়স ৩২ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগী গ্রামের রশিদুল ইমলামের ছেলে শামীম রেজা (২৪) ও চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুন্সিপাড়ার মৃত দাউদের স্ত্রী হামিদা বেগম (৭০)। সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় শামীম রেজা ও দুপুর ১২টার দিকে হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়।

জানা যায়, হামিদা বেগম দীর্ঘদিন যাবত সর্দি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে হামিদা বেগমের শরীরে করোনা উপসর্গ পরিলক্ষিত হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালের ইয়োলো জোনে ভর্তি করেন। ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মৃত্যু হয় তার।

এদিকে সোমবার সকাল ১০টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে শামীম রেজাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। শামীম রেজার শরীরে সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট করোনা উপসর্গ থাকায় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসপাতালের ইয়োলো জোনে ভর্তি রাখেন। ইয়োলো জোনে ভর্তির ৩০ মিনিটের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: শামীম কবির জানান, হামিদা বেগম ও শামীমের দীর্ঘদিন যাবত সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভর্তি করেন। সেখানে ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় শামীম ও দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৃদ্ধা হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর নিহতের শরীর থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং করোনা প্রটোকলে নিহতদের দাফনকার্য সম্পন্ন করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।

এদিকে গতকাল আক্রান্ত ১২ জনের মধ্যে সদর উপজেলার পিডাব্লিউ অফিসের ১ জন, মহিলা কলেজপাড়ার ১ জন, সরোজগঞ্জ গ্রামের ১ জন ও কোর্টপাড়ার ১ জনসহ ৪ জন। দামুড়হুদা উপজেলার দশমীপাড়ার ৩ জন, রঘুনাথপুরের ১ জন, দামুড়হুদা আশা অফিসের ১ জন, নতুন হাউলী গ্রামের ২ জন ও বিষ্ণুপুরের ১ জনসহ ৮ জন রয়েছে।

জানা যায়, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ গত রোববার করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ৮০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল রাত ৯টায় উক্ত ৮০টি নমুনার মধ্যে ৩২ জনের ফলাফল এসে পৌঁছায়।

গতকাল করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৮৪টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। সদর উপজেলা থেকে ৫৬টি, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৬টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৮টি ও জীবননগর উপজেলা থেকে ১৪টি নমুনাসহ সংগৃহীত ৮৪টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতলে পাঠিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৩ হাজার ৯৯৪টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৩ হাজার ৮৭৬টি, পজিটিভ ৮৬৮ জন, নেগেটিভ ২ হাজার ৮৫৮ জন। জেলায় এ নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা ৪২২ জন ও মৃত্যু ১৩ জন।


আরো সংবাদ



premium cement