চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বজ্র প্রতিরোধে সেন্টার নির্মাণ
- দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) সংবাদদাতা
- ১৯ জুন ২০২০, ১৭:১১, আপডেট: ১৯ জুন ২০২০, ১৭:০৮
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাতে মাঠে কাজরত অবস্থায় জীবন যায় চাষিদের। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলে বজ্রপাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন কৃষকরা।
বজ্রপাত থেকে চাষিদের জীবন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তাদের নিজ উদ্দোগে ‘বজ্র প্রতিরোধ সেন্টার’ তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে এটি বাস্তবায়ন হলে মাঠে কর্মরত চাষিরা দুর্যোগকালীন সময়ে এর সুফল ভোগ করতে পারবে। জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটাচ্ছে অনেক বেশি। বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বজ্র প্রতিরোধ সেন্টার নামের একটি নিরাপদ বলয় তৈরীর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। মুলত মাস দুয়েক আগে উপজেলার চাকুলিয়া গ্রামের নান্নু মিয়াসহ বেশ কয়েকজন চাষি মাঠে কর্মরত অবস্থায় বজ্রাপাতে মারা যান। এর পর থেকে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হঢ। এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলার গ্রামীণ জনপদের ছুটিপুর, জয়রামপুর, কুড়–লগাছি, হৈবতপুর ও নাপিতখালী মাঠে বজ্র প্রতিরোধ সেন্টার নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে । এটি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উপজেলার ছুটিপুর গ্রামের ভেদাগাড়ীর মাঠে বজ্র প্রতিরোধ সেন্টারের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে।
উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বজ্র সেন্টারের কাজ শেষ হলে গ্রামের চাষিরা মাঠে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ দুর্যোগকালীন সময় আকাশে মেঘ ও বিদ্যুৎ চমকাতে দেখলে দ্রুত নিরাপদ বজ্র প্রতিরোধ সেন্টারে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হবেন। বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বজ্র প্রতিরোধে সেন্টারের ১ কিলোমিটারের মধ্যে (লাইটেনিং এরেসটারটি) বা বজ্র প্রতিরোধে কাজ করবে। বজ্র প্রতিরোধে সেন্টারের পাশাপাশি থাকবে বিশুদ্ধ পানির টিউবয়েলসহ একটি ডাস্টবিন। মাঠে ব্যবহৃত নানা ধরনের বীজ প্যাকেট, সারের পলিথিন ও অব্যবহৃত বোতল জাতীয় প্লাস্টিক এই ডাষ্টবিনে জমা হবে। পরে তা ফেলে দেয় হবে।
উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আজিজুল হক বলেন, এলাকার চাষীরা মাঠে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে। সে সময় চাষিদের মাথার ওপর থাকে না কোনো সুরক্ষার ছাউনী। নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে লেগে যায় অনেক সময়। ঝড় বৃষ্টির কবলে পড়ে বজ্রাঘাতে চাষির মৃত্যু হয়। দিনদিন বজ্রপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ প্রানহানির ঘটনা ঘটছে অহরহ। গ্রামের মাঠে কাজ করা অবস্থায় চাষিদের জীবন বজ্রপাতের কবল থেকে বাঁচতে উপজেলা কৃষি বিভাগের বজ্র প্রতিরোধে সেন্টার তৈরির পরিকল্পনাকে এলাকার চাষিসহ সাধারণ মানুষ সাধূবাদ জানিয়েছেন। সেইসাথে আশ্বাস দিয়েছেন সার্বিক সহযোগিতার। প্রতিটি ইউনিয়নে এটি বাস্তবায়ন হলে মাঠের কর্মরত চাষিরা দুর্যোগকালীন সময়ে এর সুফল ভোগ করতে পারবেন।
উপজেলা কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা মো: মনিরুজামান বলেন, বজ্রাঘাতে চাষির মৃত্যুর ঘটনা দেশে বেড়েই চলেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত কেড়ে নিচ্ছে গ্রামের মাঠে কাজ করাবস্থায় সহজ-সরল চাষির জীবন। মাঠ পর্যায়ে খোলা আকাশের নিচে বজ্রপাত থেকে চাষিদের জীবন রক্ষার্থে কাছাকাছি কোনো নিরাপদ স্থাপনা না থাকায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে।
প্রাকৃতিক এ দুর্যোগময় মুহুর্তে মাঠে অবস্থানরত চাষিদের বজ্রপাত থেকে জীবন বাঁচাতে বজ্র সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বজ্রপাতের সময় বজ্র সেন্টারের ১ কিলোমিটারের মধ্যে (লাইটেনিং এরেসটারটি) বা বজ্র প্রতিরোধে কাজ করবে। প্রাথমিক পর্যায়ে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মাঠে বজ্র সেন্টার নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ছুটিপুর গ্রামের বজ্র সেন্টার নির্মাণের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে শেষ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে বজ্র সেন্টারগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হলে চাষাবাদের নানা পরামর্শসহ চাষিদের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে বিশুদ্ধ পানির টিঊবয়েল ও ডাস্টবিন। ‘বজ্র থেকে বাঁচি’ এই প্রতিপাদ্যকে বাস্তবায়নের জন্য চাষিদের কল্যাণে প্রাথমিকভাবে নিজস্ব অর্থায়নে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি সার্বিকভাবে বাস্তবায়ন হলে মাঠে-ঘাটে, বিল-বাওড়ে ও গ্রাম গঞ্জের কৃষক, জেলে, চাষিসহ অন্যান্য পেশাজীবীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগময় মুহুর্তে বজ্রপাত থেকে সুরক্ষার জন্য নিরাপদে থাকবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা