২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বেনাপোলে বন্দর শ্রমিক‌ সর্দারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

-

বেনাপোল স্থলবন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক সর্দার রকিব উদ্দীন নকি মোল্লাকে এক কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে শ্রমিক ইউনিয়নের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে রাখে সাধারণ শ্রমিকরা। রোববার বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। পরে ৭০ লাখ টাকা দিতে রাজি হওয়ায় তার বাঁধন খুলে দেয়া হয়।

অভিযুক্ত শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা বেনাপোল স্থলবন্দর ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের ক্রেন সাইডের গ্রুপ সর্দার। তিনি বেনাপোলের বড়আচড়া গ্রামের মৃত সকু মোল্লার ছেলে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ঘটনায় সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সাধারণ শ্রমিকেরা বলছেন, রক্ত ঘাম ঝরিয়ে শ্রমিকদের উপার্জনের টাকা তিনি আত্মসাৎ করে গাড়ি, বাড়ি সম্পদ করেছেন। অথচ তাদের টাকা ফেরৎ দিচ্ছেন না। বার বার সময় নেয়ার পরও টাকা দিতে চাচ্ছে না। মে মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে টাকা দেয়ার কথা ছিল ওই শ্রমিক সর্দারের। শনিবার টাকা না দেয়ায় তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় ইউনিয়ন অফিসে। বিক্ষোভ মিছিলও করে সাধারণ শ্রমিকরা। রোববার সকালে নকি মোল্লা অফিসে আসলে তাকে ধরে নিয়ে কোমরে দড়ি দিয়ে ইউনিয়ন অফিসের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেধে রাখা হয়। পরে আত্মসাতকৃত প্রায় দেড় কোটি টাকার মধ্যে সমঝোতা করে ৭০ লাখ টাকা দিতে রাজি হওয়ায় তাকে মুক্ত করে দেয়া হয়। অভিযুক্ত নকি মোল্লা কোরবানি ঈদ পর্যন্ত সময় চাইলে তাকে ১৫ দিনের সময় দেয়া হয়। টাকা না দেয়া পর্যন্ত তাকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান শ্রমিকরা।

বেনাপোল বন্দরের ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি খলিলুর রহমান জানান, এর আগে অনেকবার টাকা পরিশোধের কথা বলেও টাকা না দেয়ায় তাকে সাধারণ শ্রমিকেরা খুঁটির সাথে বেঁধে রেখেছে। টাকা পরিশোধ না করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা যায়, সাধারণ শ্রমিকদের টাকা সঞ্চয়ের নামে জমা রাখতেন শ্রমিক সর্দার নকি মোল্লা। এছাড়া বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনার নামে তিনগুণ টাকা বেশি দেখিয়ে রশিদ জমা দিতেন। সবমিলিয়ে এক কোটি ৩২ লাখ টাকা তার কাছে পাওনা।

কিন্তু তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় সহজে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারত না। এখন একদিকে করোনা অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড় আমফানে সর্বশান্ত হয়ে দেয়ালে তাদের পিট ঠেকে যাওয়ায় মুখ খুলেছে শ্রমিকরা।

সাধারণ শ্রমিকরা বলেন, প্রভাবশালী শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে তারা সব সময় শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন। প্রতিবাদ করলে কাজ হারাতে হয়। শ্রমিক নেতাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও যাদের রক্তে ঘাম ঝরিয়ে টাকা আয় হয় তাদের কোনো পরিবর্তন হয় না। সব সময় দুঃখ দুর্দশার মধ্যে তাদের দিন পার করতে হয়। এর আগেও প্রায় দুই কোটির মত টাকা আত্মসাৎ করেন আর এক শ্রমিক নেতা। এ নিয়ে মামলা ও আইন আদালত হলেও প্রমাণের অভাবে টাকা ফেরৎ পায়নি শ্রমিকরা। আর সাধারণ শ্রমিকদের সে সাহস নেই শ্রমিক নেতাদের কাছে টাকা জমা রেখে প্রমাণ হিসেবে রশিদ চেয়ে নেয়ার। আর কিছু শ্রমিক নেতা সে সুযোগ গ্রহণ করে টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন।


আরো সংবাদ



premium cement