২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

সাতক্ষীরায় মৎস্য ঘের ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি

সাতক্ষীরায় মৎস্য ঘের ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি - সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় আমফানের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে গোটা সাতক্ষীরা জেলা। উপকুলীয় চারটি উপজেলার কমপক্ষে ২৩ টি পয়েন্টে বেড়িবাধ ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি আম ফসল। বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক কাঁচা ঘর বাড়ি। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।

গত মঙ্গলবার রাত থেকে গোটা জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। নেই যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট ব্যবস্থা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সাতক্ষীরার ব্রান্ড খ্যাত আমের। শহরের কামাননগরে গাছ চাপা পড়ে করিমন নেছা নামের এক নারী ও বাকাল সরদার পাড়ায় মৃত আব্বাস আলীর ছেলে শামসুর রহমান (৬৫) মারা গেছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মাপুকুর, গবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি ২৩ স্পটে কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া কালিন্দি আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চাউলখোলা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০ ফুটের মত এলাকা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। কামালকাটি ও চন্ডিপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাধ ওভারফ্লো হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।

এছাড়া গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখানি,নাপিতখালী ও লেবুবুনিয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রকাটি, কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, হিজলা, দিঘলাররাইট, কোলা ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকছে বলে নিশ্চিত করেছেন আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা। বেড়িবাধ গুলো মেরামতের চেষ্টা চলছে।

সাতক্ষীরা জেলার প্রায় সব এলাকায় কমবেশী গাছপালা ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের তারের ওপর গাছ পড়ায় এবং খুটি উপড়ে পড়ায় জেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিসেবা। অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ী ও টিনের চাল উড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘন্টায় ১০০-১২০ কিলোমিটার গতিবেগে বিকেল ৪টার পর থেকে সুন্দরবন উপকুলে আমফান আছড়ে পড়ে। এরপর সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত ১৪৮ কিলোমিটার গতিবেগে পশ্চিম দিকে ঝড়ো হাওয়াটি জেলা শহরের ওপর আঘাত হানে।

এদিকে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, আমফানের কারণে নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে নদীর প্রবল জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দাঁতনেখালি, দূর্গাবাটি, পদ্মপুকুর , গাবুরার ও কৈখালী বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। কয়েকটি স্থানে নদীর বেড়ি বাধ ওভারফ্লো হয়ে বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত করে। কাঁচা ও টিনের ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ-গাছালি উপড়ে রাস্তা-ঘাট ও বাড়ী ঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে ১৪৫টি সাইক্লোন সেল্টার ও ১ হাজার ৭০০ টি স্কুল কলেজসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ লাখ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় ১২ হাজার সেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি ১০৩ জনের মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত রয়েছে।

মরিচ্চাপসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ও গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলার দয়ারঘাট, হাজরাকাটি, কুড়িকাউনিয়া, মনিপুরি ও বিছট এলাকার ভেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সাথে নিয়ে তালিকা তৈরির কাজ করছে। তাদের কাছ থেকে তালিকা পেলে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির চিত্র জানা যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাধগুলো জরুরী সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানান জেলা প্রশাসক।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারত আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় দিয়েছে : ডা. তাহের জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক নজরুল ইসলামকে রংপুরে বদলি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো শিবিরের প্রকাশনা উৎসব সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের নাতি গ্রেফতার সিলেটে ৪৩৬ বস্তা চিনিসহ আটক ৩ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মশিউর কারাগারে রাবিতে কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল সিলেটের অপেক্ষা বাড়িয়ে খুলনার বড় জয় বেরোবিতে পরীক্ষা না দিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী পাসের ঘটনায় সেই শিক্ষককে অব্যাহতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার বাংলাদেশকে সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করল সুইজারল্যান্ড

সকল