যেকোনো মূল্যে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে : তারেক রহমান
- খুলনা ব্যুরো
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:১০

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সংস্কার নিয়ে অযাচিত আলোচনা দীর্ঘায়িত হলে রাষ্ট্রের মূল সমস্যাগুলো আড়াল হয়ে যেতে পারে। তর্ক-বিতর্ক করতে গিয়ে এমন কিছু যেন না হয়, যাতে স্বৈরাচার কিংবা দেশের ভালো যারা চায় না, তারা সুযোগ পেয়ে যায়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে অনুষ্ঠিত খুলনা মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, বিশেষ করে গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সকলকে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করতে হবে যাতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসে। আজ আমরা দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চা করছি। দলকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। দলের ভেতরে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করলে দলের ভিত্তি যেমন শক্তিশালী হবে তেমনি দল পরিচালনার দায়িত্ব যখন ধীরে ধীরে সঠিক ব্যক্তিদের কাছে ফিরে যাবে তারা দলকে নেতৃত্ব দিলে দল সুন্দরভাবে এগিয়ে যেতে পারবে। ঠিক একইভাবে দেশের ভেতরে যদি আমরা গণতান্ত্রিক চর্চা করি, ভোটের চর্চা করি তাহলে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের কথা বলবে, দেশের সমস্যার কথা বলবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘অতীতে কি হয়েছে আমরা দেখেছি, কিভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে। কিভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন হয়েছে। আমাদের বহু সহকর্মীকে আমরা হারিয়েছি। বিশেষ করে জুলাই-আগস্ট মাসে আমরা দেখেছি কিভাবে নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন হয়েছে। কিভাবে ১৪০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন আজকের এই মুক্ত পরিবেশ উপহার দেয়ার জন্য। কিন্তু আমাদেরকে থেমে থাকলে চলবে না, সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
দেশের সবকিছু ধ্বংস করে স্বৈরাচার পালিয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া একটা কথা বলেছিলেন যে, এই স্বৈরাচার সবকিছু ধ্বংস করে দেশ থেকে পালিয়ে যাবে। তার বহু বছর আগের বলা সেই কথা আজ পরতে পরতে সত্য হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেল নারী উন্নয়ন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য খাতে কী কী করবেন তা উল্লেখ করেন তারেক রহমান। অন্তবর্তী সরকারকে এসব বিষয়ে নজর দেয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। গণতন্ত্র যত প্র্যাকটিস হবে তত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে।’
সম্মেলনে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান সম্মেলনের উদ্বোধক ও বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। এ সময় নেতাকর্মীরাও হাত উঠিয়ে ধানের শীষে ভোটের প্রতিশ্রুতি দেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হয়। খণ্ড খণ্ড মিছিল সহকারে নানা কালারের ক্যাপ, টি-শার্ট, প্ল্যাকার্ড হাতে আসেন নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ ১৬ বছর পর এ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত দেখা যায়।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা সৈয়দা নার্গিস আলী, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরজ্জামান মন্টু, কাজী মিজানুর রহমান, কে এম হুমায়ুন কবীর, হাফিজুর রহমান মনি, শেখ মোহাম্মদ আলী বাবু, মুর্শিদ কামাল।
সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা। সাংগঠনিক প্রতিবেদন পড়ে শোনান মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন। শোক প্রস্তাব পড়ে শোনান সৈয়দা রেহানা ঈসা।
বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে শুরু হয় কাউন্সিল অধিবেশন। সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে লড়ছেন ১২ জন। ভোটার রয়েছেন ৫০৫ জন।
এর আগে খুলনা মহানগর বিএনপির সবশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৩ নভেম্বর। আর ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর গঠিত হয়েছিল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি।