যবিপ্রবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক নেতাকে প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টা

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ এফ এম সাইফুল ইসলামকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টার প্রতিবাদে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে যশোর-চৌগাছা সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা "স্বৈরাচারের ঠিকানা যবিপ্রবিতে হবে না", " ড. সাইফুলের ঠিকানা যবিপ্রবিতে হবে না", "স্বৈরাচারের দোসরেরা হুঁশিয়ার সাবধান" স্লোগান দেয়।

জানা যায়, ড. সাইফুল ইসলাম সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা। তার স্ত্রী আওয়ামী শাসনামলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুম।

এর আগে সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারী) অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে যবিপ্রবির প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টার সংবাদ গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরে এর প্রতিবাদে মশাল-মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও মঙ্গলবার ও বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি করেছে তারা।

গণিত বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন আলী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে রাতের ভোটের মূল কারিগর ছিল ড. সাইফুলের স্ত্রী নাজমানারা খানুম আরা। এছাড়াও ড. সাইফুল ইসলাম সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা। স্বৈরাচারের দোসরকে যবিপ্রবিতে নিয়ে আসলে রোববার থেকে ক্যাম্পাস অচল করে দেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন বলেন, আজকে আমরা সাতশ’র অধিক শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর নিয়েছি। তারা কেউই স্বৈরাচরের কোনো দোসরকে এই ক্যাম্পাসে চায় না। তারপরেও যদি ড. সাইফুলকে প্রো-ভিসি বানানোর চেষ্টা করা হয় তবে আন্দোলন আরো কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।

যশোর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবীব আহমেদ শান বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসরদের বিভিন্ন জায়গায় পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। সেই একই ধারাবাহিকতায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও আওয়ামী দোসর পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, যবিপ্রবিতে কোনো স্বৈরাচারের দোসরকে পুনর্বাসন করতে দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা লাল কার্ড দেখাচ্ছি।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী শাসনামলে ২০১২ সালে স্ত্রী নাজমানারার লবিংয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান ড. সাইফুল ইসলাম। ক্রপ বোটানি অ্যান্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগের এই অধ্যাপক সিকৃবিতে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের নেতা ছিলেন। আওয়ামী প্যানেল থেকে দুইবার সিকৃবির সিন্ডিকেট সদস্য (২০১৪-১৬ ও ২০২২-২৪ সালে) নির্বাচিত হন তিনি।