চৌগাছায় আওয়ামী লীগ নেতার দখল থেকে ৪৩ বিঘা জমি উদ্ধার
- চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা
- ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪২
যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী লীগ নেতা ও ভূমিদস্যূদের অবৈধ দখল থেকে ৪৩ বিঘার একটি জলমহাল উদ্ধার করেছে উপজেলা ও ভূমি প্রশাসন। ভূমিদস্যূ আওয়ামী লীগ নেতা জলমহালটির শ্রেণি (জলমহাল থেকে ধানী) পরিবর্তন করে নিজেদের দখলে নিয়েছিল।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহানের নেতৃত্বে এই জমি (জলমহাল) অবৈধ দখলমুক্ত করে লাল পতাকা এবং সাইনবোর্ড টাঙিয়ে সরকারের দখলে নেয়া হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস ও চৌগাছা সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌগাছা পৌরসভার চৌগাছা মৌজার জে এল নম্বর-১১-এর এস এ খতিয়ান নম্বর- ৪০০, ৪১০, ১২৭৩, ১৬৪৬, ১৮৫৩, ১১৪৮, ৩১৭০, ২৭৬, ২৪৮, ২৬০২, ২৭৪, ১৮৮, ১৫৯৩, ৯৮০, ২৪৬১, ২৫৫২ ও ৪৬৪ খতিয়ানের এস এ দাগ নম্বর-২২৯৩। যা আর এস খতিয়ান ১-এর ২৭টি আলাদা দাগে ১৪.১০০ একর জমি জলমহাল হিসেবে ছিল। এই জলমহাল দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের ফজলুর রহমান, খসদেল হোসেন, শামীম হোসেন, কালাম হোসেন ও নবাব আলী অবৈধভাবে দখল করে আসছিলেন। এদের নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা। তারা জোরপূর্বক দখলে রেখে মাছ চাষ করতেন। শুধু দখলই নয়, এই জলমহালের জমি স্থানীয় প্রভাবশালী এ ভূমিদস্যূরা ভূমি অফিসের অসাধু কর্মচারীদের সহায়তায় রেকর্ড করে নেন। একইসাথে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ধানী জমি হিসেবে নিজেদের নামে রেকর্ড করেন তারা। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে চৌগাছা সদর ভূমি অফিস রেকর্ড সংশোধন করে জলমহালে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিসকেস করেন। এরপর অবৈধভাবে নিজেদের নামে দখলকারী ব্যক্তিরা দেওয়ানি মামলা করে। তবে মামলায় তারা আদালতে হেরে যান। এরপরও অবৈধভাবে জলমহালটি দখলে রেখেছিল ওই ভূমিদস্যূরা।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় জনসাধারণকে সাথে নিয়ে উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাস্টার কামাল আহমেদ এ জমিটি সকলের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেন। পরে জনগণের তোপের মুখে অবৈধ দখলদার ও ভূমিদস্যূ চক্রটি এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা সেখানেই মাছ চাষ করতে থাকেন। এদিকে, মিসকেস ও দেওয়ানি মামলা নিস্পতি হয়ে যাওয়ায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান জলমহাল দখলমুক্ত করে সরকারের দখলে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সবশেষ সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহানের নেতৃত্বে ওই জলমহাল সরকারের দখলে নেয়া হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহান বলেন, ‘জমিটি দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় ভূমিদস্যূরা অবৈধভাবে রেকর্ড করে দখলে রেখেছিল। মিসকেসের মাধ্যমে আমরা রেকর্ড সংশোধন করে খাস খতিয়ানে নিয়েছি। আজ সেটি দখলমুক্ত করা হলো।’
তিনি জানান, এখন জমিটির শ্রেণি পরিবর্তন করে আবার জলমহালে রূপান্তর করার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। এরপর এটি ইজারা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, ‘উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে জমিটি দখলমুক্ত করা হলো। এটি আমাদের বড় অর্জন। এটি ধানী শ্রেণিতে আছে এখন এটির শ্রেণি পরিবর্তন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখল থেকে সরকারি সম্পদ ফিরিয়ে আনার এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা