শীতে জবুথবু যশোরের সীমান্ত অঞ্চল, বিপাকে সাধারণ মানুষ
- মো: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:১১
শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু অবস্থা যশোরের সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের। তীব্র ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষরা। তাই শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে যশোরের সীমান্ত অঞ্চলের মানুষরা ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের কম দামী কাপড়ের দোকানগুলোতে।
উপজেলার বেনাপোল, নাভারন, শার্শা, বাগআচড়ার বাজারে ফুটপাতের দোকানগুলোতে বেড়েছে কেনাকাটা। তবে দাম চড়া হওয়ায় শীতবস্ত্র কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে তাদের বেচা-কেনা। এ বছর আগে থেকেই ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বিক্রেতারা বেশ খুশি।
বাগআচড়া বাজারের ফুটপাতের দোকানি আরাফাত আলি বলেন, ‘এখানে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষই বেশি আসেন। তবে বর্তমানে মধ্যম আয়ের মানুষরাও আমাদের কাছে আসছেন।’
সরেজমিনে বাগআচড়ার ইজিবাইক চালক মফিজুর রহমান, , কৃষক মোহাম্মদ আলি, দিনমজুর মনিরুল ইসলামসহ অনেকের সাথে কথা হয়।
জামতলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তুহিন হোসেন বলেন, ‘শপিংমল ও শো-রুমগুলোতে সুন্দর সুন্দর কাপড় রয়েছে। তবে তার দাম আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। এজন্য ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটা করতে আসি। এখানে পুরাতন কাপড়ের পাশাপাশি সুন্দর নতুন কাপড়ও পাওয়া যায়।’
সামটা গ্রামের ভ্যানচালক সুলতান আলি বলেন, ‘উত্তরে বাতাসে শরীর অবশ হয়ে যায়। ভ্যান চালানোর সময় জাম্পার না পরলে ঠান্ডা বাতাসে ভ্যান চালানো যায় না। তাই ঘুরে ফিরে দেখছি। এখনো কিছু কিনতে পারিনি।’
বেনাপোলের লালমিয়া সুপার মার্কেটের আর ফ্যাশন কর্নারের মালিক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। বেচাবিক্রি মোটামুটি ভালো। শীত যত বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়ও তত বাড়ছে।’
বেনাপোল বন্দরের হ্যান্ডেলিং শ্রমিক বরকত আলি বলেন, ‘ছেলের জন্য একটা সোয়েটার কিনেছি। আর আমার জন্য একটা জাম্পার কিনব। ঘুরে ফিরে দেখছি। এখনো পছন্দ মতো পাইনি।’
নাভারন বড় মসজিদের সামনে ফুটপাতের ওপর পুরনো কাপড়ের স্তুপ সাজিয়ে বসে আছেন দোকানি সায়েদ আলি। তিনি জানান, পুরনো কাপড়ের মধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর, কোট, মাফলার, হাত-মোজা ও পা-মোজা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কম দামের নতুন কাপড়ও বিক্রি করেন তিনি।
তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, দোকানে কৃষক, দিনমজুর, কৃষক, নির্মাণশ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকেরাই বেশি আসেন। এছাড়া মধ্যম ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষরাও আসেন।
জহুরুল হক নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়ে গেছে। আমরাও চাহিদা মতো কাপড় রাখার চেষ্টা করছি। তবে এ বছর দোকানে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই ফিরে যাচ্ছেন।’
নাভারন বড় মসজিদের সামনের ফুটপাত থেকে একটি পুরনো জ্যাকেট কিনে ফিরছিলেন বাগআচড়ার টেংরা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘শীতের মধ্যে ভোরবেলায় ইজিবাইক নিয়ে বের হই। ঠান্ডায় খুব কাহিল হয়ে যাই। ভেবেছিলাম দেড় থেকে দুই শ’ টাকার মধ্যে একটা জাম্পার কিনব। এসে দেখি অনেক দাম। শীতের মধ্যে তো কাজ করাই লাগবে। তাই সাড়ে ৩০০ টাকা দিয়ে জাম্পারটা কিনেছি।’
খলিলুর রহমান নামে একজন কলেজ শিক্ষক নাভারন নিউমার্কেটে এসেছেন ছেলের জন্য জ্যাকেট কিনতে। তিনি বলেন, ‘ছেলের জন্য শীতের কাপড় কিনেছি। একটি জ্যাকেট, একটি মাফলার ও একটি হাতমোজা কিনলাম। দাম অন্যবারের চাইতে এবার একটু বেশি।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা