জনকল্যাণমূলক সরকার গঠনে দেশ উপকৃত হবে : জামায়াত আমির
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:০৫, আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৬
জনকল্যাণমূলক সরকার গঠনে দেশ উপকৃত হবে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াত একার পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়, দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জনকল্যাণমূলক সরকার গঠন করতে পারলে দেশ উপকৃত হবে। দেশ ভালো হলে দেশের মানুষ হিসেবে আমরা উপকৃত হব।’
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জেলা জামায়াতের আয়োজনে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা আবুল হাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সুজাউদ্দিন জোয়ার্দার।
এ সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য যশোর অঞ্চল পরিচালক মো: মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো: শাহাবুদ্দিন, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আল্লামা শামীম সাঈদী, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়দেব বিশ্বাস, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া অ্যান্ড ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক আ ছ ম তরিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া কুওয়াতুল ইসলাম আলীয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেক বেশি, একদিকে জনসংখ্যা অন্যদিকে রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ। এই দু’য়ের সমন্বয় সাধনে আমাদের দেশের গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু আমরা দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বেড়াজালে পড়ে দেশের ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। দুর্নীতি ও দুঃশাষন একে অপরের সম্পূরক ছিল। সর্বশেষ দুঃশাসনের কঠিন অধ্যায় এদেশের মানুষের জানা রয়েছে। শুধু ক্ষমতার জন্য এই দুঃশাসন জনগণের উপর চালিয়ে দেশের সব অর্গানকে বিকল করে দেয়া হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা রাজনীতি করে তাদের রাজকীয় মনোভাব হতে হবে, সুশৃঙ্খল হতে হয়। কিন্তু একজন রাজনীতিবীদ হয়ে আমি লজ্জিত বিগত সরকারের দুঃশাসনের দেখে। রাজনীতিবিদ হতে হলে দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘বিগত সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে একেবারেই ভন্ডুল করে রেখেছিল। যারা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছিল তাদের সন্তানেরা এই দেশে লেখাপড়া করে না। তাই তারা এই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কি কাজ করবে?’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর ভয়াবহ জুলুম করেছে কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা পুলিশকে সহযোগিতার জন্য আমাদের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছিলাম। আমরা পুলিশকে সহযোগিতা করতে চাই। ক্ষতিগ্রস্ত থানাগুলোতে আমাদের নেতা-কর্মীরা পাহারা দিয়েছে। শুধু কি তাই, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তায় আমাদের নেতা-কর্মীরা কাজ করেছেন। বিশেষ করে এবারকার পূজা বন্ধ রেখে দেশের মধ্যে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছিল, আমি নিজে ধর্মীয় নেতাদের সাথে কথা বলে তাদের যাবতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে দেশে এবারের শারদীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে, যা বিরল।’
তিনি বলেন, ‘কারোর ওপর জুলুম হোক এটা কামনা করি না। প্রকৃত দোষীর উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের কোনো নিরপরাধ মানুষকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা যাবে না। তবে প্রকৃত দোষীর শাস্তি নিশ্চিতে জামায়াত কঠোর থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইজ্জত সম্মান দেয়ার মালিক সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্মান দেন আবার প্রয়োজনে কেড়ে নেন। আওয়ামী লীগ এই দেশের ১৮ কোটি মানুষকে প্রতিপক্ষ ভেবে নির্যাতন করেছে। মানুষের জন্য তাদের মায়া ভালোবাসা ছিল না বলেই আন্দোলনের সময় নির্বিচারে ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালিয়েছে। শত শত মায়ের বুক খালি করেছে হাজার হাজার আহত হয়েছে জাতি, এই জঘন্য অপরাধের কথা কখনো ভুলবে না। আমাদের সন্তানদের আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।’
এ সময় জেলা জামায়াত আয়োজিত সুধী সমাবেশে আলেম-ওলামা, চিকিৎসক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, প্রকৌশলী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষরা অংশ নেন।