চৌগাছায় নারী কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে ক্লোজড হলেন ওসি পায়েল
- এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
- ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৫৮
যশোরে নারী কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পায়েল হোসেনকে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ৪৫ দিন আগে তিনি চৌগাছা থানায় যোগদান করে ছিলেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে টর্সার সেল তৈরি, ঘুষবাণিজ্য, রিমান্ড বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নিরীহ মানুষকে হয়রানি এবং নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক নারীকে নিয়ে তার একটি কুরুচি পূর্ণ ভিডিও ভাইরাল হয়। এসব অভিযোগের ফলে তাকে যশোর পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে। একই সাথে এ ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন যশোরের পুলিশ সুপার।
জানা গেছে, পায়েল হোসেন গত ১৭ নভেম্বর ঢাকার রমনা থানা থেকে বদলি হয়ে চৌগাছা থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। সবশেষে ২৮ ডিসেম্বর শনিবার সকাল থেকে পাঁচ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওসি পায়েল একটি মোবাইলে কথা বলছেন আবার কখনো হাসতে হাসতে ওই নারীকে বিভিন্নভাবে অশালীন অঙ্গ ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এ সময় তারা দু’জনই ভিন্নরকম কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। ওসি পায়েল হোসেন একপর্যায়ে নিজের গোপনাঙ্গ প্রর্দশনী করতে দেখা যায়। ভিডিও নিয়ে এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। ২৯ ডিসেম্বর সারা দিন চৌগাছায় টপ অফ দ্যা টাউন ছিল ওসি পায়েল হোসেনের ভিডিও।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অভিযানে চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিনের পৌর শহরের বাড়ি ফারানা টাওয়ার সারা রাত অবরুদ্ধ করে রাখেন। তিনি জসিম উদ্দিনের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেয়ায় জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন। মাসিলা গ্রামের পারভেজ আহমেদ সোহাগ নামের এক যুবককে তুলে এনে ৩২ ঘণ্টা গোপন সেলে আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক ও নির্যাতনের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা আদায় করেন। পরে তাকে ডাকাতি ও মাদক মামলায় আসামি দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন।
২৩ নভেম্বর সিংহঝুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মল্লিককে গ্রেফতার করে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন ওসি পায়েল হোসেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।
১৭ ডিসেম্বর জীবন হোসেন লিপু এবং তার বন্ধু বাবুলের ছোট ভাই হারিয়ে গেলে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। দু’দিন পর ওসি বাবুলকে ডেকে নিয়ে জানান, হারানো ব্যক্তিকে উদ্ধারে অতিরিক্ত এসপির জন্য দু’লাখ টাকা লাগবে। নিরুপায় হয়ে ভাইকে খুঁজে পেতে বাবুল ৫০ হাজার টাকা দেয়। পরে ওই হারানো ব্যক্তিকে পরিবারের সদস্যরাই উদ্ধার করলেও ওসি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তারা টাকা ফেরত চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাবুল ও জীবনকে দালাল আখ্যা দিয়ে তাদের ছবি থানার নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালায়। পরে মোবাইলে গুলি করার হুমকি দিয়ে তাদের চৌগাছা ছাড়তে বাধ্য করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ওসি পায়েল হোসেন বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে একটি দালাল ও মাদক কারবারি চক্র আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।’
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে যশোরের পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ওসি পায়েলের কর্মকাণ্ডে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা