‘আমার মনি ওই যে গিলো, আর আলো না’
- জালাল উদ্দিন হাককানী, মহম্মদপুর (মাগুরা)
- ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৪৮
বয়স ১৬ বছর। নবম শ্রেণিতে পড়ে মাজেদুল ইসলাম। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। স্কুল বন্ধের ছুটিতে পরিবারের আর্থিক সংকুলান দিতে জাহাজে লস্কারের কাজ নেয় সে। ১১ দিন পেরোতেই তার হত্যার খবর আসে।
৩ মাস হয়েছে বিয়ে করেছেন সজিবুল ইসলাম (২২)। এর আগে জাহাজে চাকরি করলেও স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে আবার জাহাজে যান তিনি। বেতন বাড়বে, আনন্দে সংসার জীবন কাটাবেন। এমন সময় তাকেও হত্যার খবর আসে পরিবারের কাছে।
গত সোমবার চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের কাছে সারবোঝাই এমভি আল বাকেরা জাহাজে গলা কাঁটা পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। আরো তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। দু’জনকে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। আহত রয়েছে কয়েকজন। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের মাজেদুল ইসলাম ও সজিবুল ছিলেন তাদের মধ্যে দু’জন। তাদের দুই পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সদস্যরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সজিবুল ইসলাম যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচুর রহমানের ছেলে এবং সজিবুল ইসলাম পলাশবাড়িয়া গ্রামের দাউদ মুন্সীর ছেলে।
মাজেদুল ইসলামের মা মুক্তি বেগম জানান, ‘আমার মাজেদুল কেবল নাইনি পড়ে। স্কুল বন্ধ দেছে। কইছিল মা, আমি এই বন্ধের সময় বসে না থাহে জাহাজে যাই। কিছু টাহা হবি। আমার মনি ওই যে গিলো, আর আলো না। ফোন দিছি বন্ধ কয়। আমার ছেলেরে হত্যার বিচার চাই।’
সজিবুল ইসলামের বাবা দাউদ মুন্সী জানান, ‘আমার মেঝ ছেলে সজিব। ৩ মাস হইছে তারে বিয়ে দিছি। সে কোর্স করছে পরীক্ষা দিয়ে জাহাজের মাস্টার হবে। তার বেতন বাড়বি। মা-বাবা বউ নিয়ে সুখে থাকবে, কিন্তু তা আর হলো না।’
স্ত্রী প্রিয়া বলেন, ‘আমাদের নতুন বিয়ে হইছে। আমার স্বামী আমার মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিল। সে বলছিল পদোন্নতি হলে বেতন বাড়বে। আনন্দে থাকব। এখন ভবিষ্যৎ নিয়েই আমি দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। সামনে কী কবর জানি না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা