শরীরে ছররা গুলি নিয়ে ব্যথায় দিন কাটাচ্ছেন আব্দুস সোবহান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:০৫
অসংখ্য ছররা গুলির ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন আব্দুস সোবাহান (৪০)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হয়ে এখনো ব্যথায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন আব্দুস সোবাহান। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হলে সাভার থানার মুক্তির মোড় এলাকায় বিকেল ৪টায় দিকে বিজয় মিছিলে অংশ নেন তিনি। এসময় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তার সারা শরীরে বিদ্ধ হয়। একইসাথে গুলিবিদ্ধ হয় তার ছেলে ইমন ইসলামও (১৪)। বর্তমানে আর্থিক সঙ্কটে চিকিৎসা করাতে না পেরে শরীরে থাকা ছররা গুলি নিয়ে নিজের বাড়িতে অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে তার।
আব্দুস সোবহানের বাড়ি মাগুরার শালিখা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের কাটি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল আলার ছেলে। ডিপ্লোমা ব্রান্ডের গুঁড়ো দুধ কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে চাকরির সুবাদে ঢাকার সাভার এলাকায় থাকতেন। পরিবার নিয়েই থাকতেন তিনি ।
স্বৈরাচার সরকার পতনের পর স্ত্রী সাগরিকাকে ও ছেলে ইমন ইসলামকে নিয়ে যোগ দেন আনন্দ মিছিলে। সেখানেই তার সারা শরীরে পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি বিদ্ধ হয়।
আহত আব্দুস সোবহানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঢাকার সাভার এলাকার মুক্তির মোড়ে স্ত্রী সাগরিকা ও ছেলে ইমন ইসলামকে সাথে নিয়ে মিছিলে যোগ দেন তিনি। মিছিল চলাকালে পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করার জন্য ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় তার শরীরে অসংখ্য ছররা গুলি লাগে।
তিনি বলেন, আমার সন্তানও গুলিবিদ্ধ হয়। ছররা গুলি আমার দুই পায়ে, বুকে, পিঠেসহ সারা শরীরে লাগে। এ সময় আমার ছেলের ঠোঁটে ও নাভিতে গুলি লাগে। তবে আমার স্ত্রী অক্ষত ছিল। সে সুস্থ আছে।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ডিপ্লোমা ব্রান্ডের গুঁড়া দুধ কোম্পানির সেলসম্যানের চাকুরি ছেড়ে দিয়েছেন সোবহান। এখন অর্থ সঙ্কটে পড়েছেন তিনি। বর্তমানে তার ডান পায়ে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। চলতে ফিরতে সমস্যা হচ্ছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার পর তিনি সাভার এনাম মেডিক্যাল, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকা মেডিক্যালসহ সোহরাওয়ার্দী হাসপতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সর্বশেষ মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সোবহান।
এদিকে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছররা গুলি থাকায় যন্ত্রণায় হাঁটা চলায় কষ্ট হচ্ছে তার। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। এখন শরীরে থাকা গুলি বের করতে অপারেশন করতে হবে। এর জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু বসতবাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জমি বা সম্পদ নাই যা বিক্রি করে তিনি চিকিৎসা করাবেন। বর্তমানে আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটছে আব্দুস সোবহানের।
তিনি বলেন, আমি যেন ভালো চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হতে পারি, পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বাঁচতে পারি এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই।
আব্দুস সোবহানের স্ত্রী সাগরিকা বলেন, আন্দোলন শুরু হলে স্বামী সন্তানসহ আমরা আন্দোলনে অংশ নেই। গত ৫ আগস্ট আমার স্বামী ও সন্তান পুলিশের ছোঁড়া ছররা গুলিতে বিদ্ধ হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এখন অর্থের অভাবে মাগুরাতে নিজ বাড়িতে রয়েছি। আমার স্বামী পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। এ অবস্থায় সংসার চালানো ও স্বামী সন্তানের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি সরকারের কাছে তার স্বামী সন্তানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা