১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে : জামায়াত সেক্রেটারি

খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে জামায়াত সেক্রেটারি -

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘নানা ষড়যন্ত্র করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে। ৫ আগস্টের চেতনায় জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এ ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে হবে।’

রোববার খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ সব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আগে পুলিশ বিভাগ, শাসন বিভাগ, সংবিধান ও প্রশাসনের মৌলিক সংস্কার ছাড়া সামনে এগোনো সম্ভব না।’

তিনি বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়ার পর নানা সময়ে অডিও-ভিডিও প্রকাশ করে ষঢ়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা। নূর হোসেন দিবসকে কেন্দ্র করে সারাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে ফ্যাসিবাদী দল। তা প্রশাসন ও ছাত্র-জনতা নস্যাত করে দিয়েছে। দেশের বাইরে থেকে যত চক্রান্ত করা হোক, যতই মিথ্যাচার করা হোক, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জাতিকে অস্থির করার চেষ্টা করা হোক, আমরা আশাবাদী বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদকে চিনেছে, ফ্যাসিবাদী দলকে চিনেছে, ফ্যাসিবাদের মাস্টার মাইন্ডকেও চিনেছে। তাদেরকে এদেশের মানুষ কখনো আর গ্রহণ করবে না।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রশাসনের ভেতরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর আছে জানিয়ে বলেন, ‘আইন উপদেষ্টা ড. প্রফেসর আসিফ নজরুলকে সুইজারল্যান্ডে হেনস্থা করা হয়েছে। সেখানে তার সিকিউরিটি কোথায়? তার প্রটোকল কোথায়? সে দেশে নিযুক্ত অ্যাম্বেসডর কোথায়? বিদেশের মাটিতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাথেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি সেখানে যেসব অশ্লীল কথাবার্তা বলা হয়েছে, তাতেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চরিত্র ফুটে উঠেছে।’

বিগত ১৬ বছরে দেশের মানুষ আওয়ামী বর্বরতা দেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘দেশ-বিদেশ থেকে একটি চক্র বলার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়। পূজার সময় অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত ছিল। এ জন্য জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ছোট করার চেষ্টা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে অন্য ধর্মের লোকেরা নিরপদ নয় এবং বাংলাদেশ এখন মৌলবাদীরা চালাচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করেছিল। কিন্তু সফল হতে পারেনি।’

খুলনা প্রেসক্লাবে হামলার বিষয়ে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘খুলনা প্রেসক্লাবের মতো একটি দল-মতের ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলায় আমি বিচলিত ও বিষ্মিত।’

খুলনা প্রেসক্লাবের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকারি অনুদানে একটি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পেতে প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিকে আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত হবো।’

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক ও সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুলসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য ও ক্লাবের সিনিয়র সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।

মতবিনিময়কালে খুলনা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক ও সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি বেলাল হোসাইন রিয়াদ, মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজি, ছাত্রশিবিরের মহানগরী সেক্রেটারি এস এম নুরুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার ক্ষতিগ্রস্থ খুলনা প্রেসক্লাবের উন্নয়নের জন্য ক্লাবের কর্মকর্তাদের হাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে পাঠানো তিন লাখ টাকা হস্তান্তর করেন।


আরো সংবাদ



premium cement