২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ডিমের আমদানি শুল্ক কমলেও প্রভাব পড়ছে না বাজারে

ডিমের আমদানি শুল্ক কমলেও প্রভাব পড়ছে না বাজারে - সংগৃহীত

ভারত থেকে আমদানির পরও যশোরের বাজারে ডিমের দাম কমেনি। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। বছর-জুড়ে অস্থিতিশীল ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে নয় লাখ ৮৯ হাজার ৩১০টি ডিম আমদানি করা হলেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি যশোরের বাজারে।

মঙ্গলবার বেনাপোলের বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪ টাকা দরে। যদিও সরকার খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে ১১ টাকা ৮৬ পয়সা।

গত বুধবার পর্যন্ত আমদানিকৃত ডিমে শুল্কহার দিতে হয়েছে ৩১ শতাংশ। ডিমের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার আমদানিকৃত ডিমে শুল্কহার কমিয়ে দেয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে দিতে হচ্ছে ১৩ শতাংশ। আগে প্রতিটি ডিমে শুল্ক দিতে হতো এক টাকা ৮৩ পয়সা, আর বর্তমান দিতে হচ্ছে মাত্র ৭৭ পয়সা।

ভারত থেকে প্রতিটি ডিম কেনা হচ্ছে পাঁচ টাকা ৮০ পয়সা। শুল্কহার ৭৭ পয়সা এবং অন্যান্য খরচ ও লভ্যাংশ এক টাকা ধরলেও প্রতিটি ডিমের খরচ পড়ছে সাত টাকা ৫৭ পয়সা।

বেনাপোল বাজারের ডিম ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যেভাবে ডিম কিনছি সেভাবেই বিক্রি করছি। সরকার ইতোমধ্যে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে- পাইকারি বাজারে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা বাজারে আমাদের বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছেন ১১ টাকা ৮৬ পয়সা। কিন্তু আমরা ডিম কিনছি ১২ টাকা ৮০ পয়সায়। সেখানে আমরা বর্তমান ১৪ টাকায় বিক্রি করছি।’

আমদানিকৃত ডিমের ব্যাপারে জানতে চাইলে নজরুল বলেন, ‘বেনাপোল বাজারে আমদানিকৃত কোনো ডিম আমরা পাই না। আমরা যেভাবে ডিম কিনছি, সেভাবেই বিক্রি করছি।’

অপর ডিম ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘ফার্মের মালিকরা যদি সরকারের নির্ধারণ করা রেটে ডিম আমাদের দেয়, আমরাও সরকারের নির্ধারিত রেটে ডিম বিক্রি করতে পারব। এক সপ্তাহ আগে আমরা প্রতিটি ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি করেছি। বর্তমান এক টাকা কমিয়ে ১৪ টাকা বিক্রি করছি। আসলে আমরা যেভাবে কিনছি, তার ওপর কিছু লাভ ধরে বিক্রি করছি। এর কারণে প্রতিনিয়ত খরিদ্দারদের সাথে আমাদের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। প্রশাসন আমাদের ওপর নজরদারি না করে যদি ফার্মে ফার্মে অভিযান চালিয়ে ভাউচার চেক এবং তদারকির ব্যবস্থা করে তাহলে হয়তো ফার্মের মালিকরা সরকার নির্ধারত রেটে ডিম বিক্রি করবে।’

বেনাপোল বাজারে ডিম কিনতে আসা আব্দুল মোমিন বলেন, ‘সরকার পতনের পর থেকে ডিমের বাজার একেবারেই অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডিমের দাম। সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডিমের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ দিকে নজর দিতে হবে।’

অপর ক্রেতা খলিলুর রহমান বলেন, ‘ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৪ টাকা করে কিনতে হচ্ছে।’

ভারত থেকে ডিম আমদানিকারকের প্রতিনিধি ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ জানান, ভারত থেকে আমদানিকৃত ডিমে শুল্কহার ছিল ৩১ শতাংশ। সেই হিসাবে প্রতিটি ডিমে এক টাকা ৮০ পয়সা করে শুল্ককর দিতে হয়েছে সরকারকে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুল্কহার কমানো হয়েছে। শুল্কহার কমানোয় এখন টোটাল ডিউটি দিতে হচ্ছে ১৩ শতাংশ। এখন প্রতিটি ডিমে শুল্ককর দিতে হচ্ছে মাত্র ৭৭ পয়সা, যা আগে দিতে হতো এক টাকা ৮৩ পয়সা।

তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে ডিম আমদানিতে সকল আমদানিকারকের অনুমতি দিলে ডিম আমদানি আরো বেশি হতো এবং বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসত বলে আমি মনে করছি।’

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সাড়ে সাত টাকা দরে ভারত থেকে মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। গত বছরের ৫ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচটি চালানে নয় লাখ ৮৯ হাজার ৩১০টি মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement