১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ভারত থেকে আমদানি হলেও দেশীয় বাজারে ডিমের দাম কমছে না

ভারত থেকে আমদানি হলেও দেশীয় বাজারে ডিমের দাম কমছে না - ছবি : নয়া দিগন্ত

ভারত থেকে আমদানি হলেও যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলে ডিমের দাম কমেনি। রোববার বেনাপোল ও নাভারণ বাজারে দেখা গেছে, প্রতি পিস ডিমের দাম চার টাকা বেড়ে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা ডিম সাদা রঙের এবং এ ডিম সাধারণত কিনে থাকেন বেকারি ব্যবসায়ীরা। সাধারণ ক্রেতারা বাদামি রঙের ডিম বেশি পছন্দ করেন। আমদানি করা পণ্য সাধারণত পাইকারি বাজারে দাম কমায়, তবে এবার ডিমের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। ভারত থেকে ডিম আমদানি হলেও পাইকারি বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।

সাদা ডিম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশে দিনে এক কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর ৬১ হাজার ৯৫০ পিস, চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর দু’লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস, ৬ অক্টোবর দু’লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস এবং ৭ অক্টোবর দু’লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। এ নিয়ে চার চালানে মোট সাত লাখ ৫৭ হাজার ৪৭০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা ডিম সাদা রঙের এবং এ ডিমের চাহিদা কম। সাদা ডিমের দাম কিছুটা কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা একটু বেশি থাকে। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বাদামি ডিমের চাহিদা একটু বেশি। তাই সাদা ডিম আমদানি হলেও ভোক্তা পর্যায়ে ডিমের দাম কমছে না।

বেনাপোলের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিনয় কৃষ্ণ জানিয়েছেন, দেশে প্রতিদিন লাখ লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। সাদা ডিমের দাম কম থাকায় বেকারিতে এর চাহিদা বেশি। কিন্তু দেশে বাদামি ডিমের চাহিদা বেশি। বাদামি ডিমের ওজন ৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম হয়ে থাকে, আর সাদা ডিমের ওজন ৫০ থেকে ৫৫ গ্রাম। ভারত থেকে আমদানি করা ডিমের বিক্রয় যথাযথভাবে না হলে আমদানিতে আগ্রহ কমতে পারে।

ডিম ব্যবসায়ী মো: নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বর্তমানে ডিমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে এবং চাহিদাও ভালো। তবে বাড়তি দরে ডিম কিনতে হচ্ছে, যার প্রভাব পাইকারি ও খুচরা বাজারে পড়ছে।

শার্শার নাভারণ এলাকার বাসিন্দা মো: আব্দুল মান্নান বলেছেন, ভারত থেকে ডিম আমদানি করে লাভ কী? খুচরা দোকানগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাদামি রঙের ডিম ১৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার ।

বেনাপোলের খুচরা ডিম ব্যবসায়ী রাসেল বলেন, সিন্ডিকেট চক্র ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে ডিমের বাজার চড়া। এসএমএস-এর মাধ্যমে সিন্ডিকেট চক্র ডিমের দর নির্ধারণ করেন, এদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের ডিম কিনে আনা এবং বিক্রি করার মূল্য খতিয়ে দেখতে হবে এবং পাইকারি ও খুচরা বাজারে সমানতালে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ডিমসহ সব কিছুর দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ইয়াছমিন জানিয়েছেন, তারা নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছেন। ক্রয়-বিক্রয় রশিদ, মূল্য তালিকা, বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে কি না সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ডিমের দামে কোনো কারসাজি হচ্ছে কি না তাও যাচাই করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement