২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইবিতে জেলা সমিতির কমিটি নিয়ে বারবার দ্বন্দে মারামারি

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নীলফামারী জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির কমিটি নিয়ে দ্বন্দকে কেন্দ্র করে বারবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষ থেকে নিজেদের ভুক্তভোগী দাবি করে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া দুই পক্ষই মঙ্গলবার পৃথক পৃথক সময়ে প্রধান ফটক অবরোধ করেন।

জানা যায়, সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে পূর্বশত্রুতার জেরে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আশিক ইকবাল সাদের সাথে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মোরসালিন মুনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মোরসালিনের সাথে থাকা তার বন্ধুরাসহ সাদকে মারধর করে বলে অভিযোগ সাদের। এ সময় সাদের সাথে থাকা তার বান্ধবীর হাতের আঙ্গুল কেটে যায়। সাদের অভিযোগ মুনের হাতে অস্ত্র ছিল। তবে মুন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে এ ঘটনার বিচার চেয়ে মঙ্গলবার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাদ ও তার বান্ধবী আনিকা আশরাফী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক গোলাম রাব্বনীর নির্দেশনায় এ মারধর হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সাদ।

এছাড়া অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে প্রধান ফটক অবরোধও করেন তার বন্ধুরা। তবে গোলাম রাব্বানীর দাবি এ ঘটনার সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এদিকে নিজেকে মারধরের শিকার দাবি করে সাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোরসালিন। এছাড়া তার পক্ষে প্রধান ফটক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী।

33

সাদ ও মোরসালিনের মধ্যে পূর্বশত্রুতা ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন দু’জনই। সাদের দাবি, প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর গোলাম রাব্বানী ও মোরসালিনরা তাকে র‌্যাগিং করা নিয়ে দ্বন্দের সূত্রপাত ঘটে।

এদিকে মোরসালিনের দাবি, সাদ জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সিনিয়রদের গালিগালাজ করেছিল, তার রেকর্ড আমাদের কাছে আছে।

এ বিষয় নিয়ে তাদের সাথে বিভিন্ন সময়ে সিনিয়ররা বসে সমাধান করেছে। এদিকে গত বছরের জুন মাসে জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির কমিটি গঠনের সময় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা পদ দাবি করেন অনেকে। কিন্তু তাদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করলে তাদের ক্ষোভ আরো বেড়ে যায় বলে জানান মোরসালিন।

মোরসালিন জানান, গত রমজানে জেলা সমিতি কর্তৃক নীলফামারীতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করলে সাদ, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের মারুফ ও সৈকত ইফতারের পর সেখানে ৮-১০ জন ছেলে নিয়ে আসে। এ সময় তারা আমাদের কোনো কারণ ছাড়াই বেধড়ক মারধর করে। এ সময় জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সাবেক সেক্রেটরি আসাদুজ্জামান নুরকেও মারধর করে তারা।

আসাদুজ্জামান নুর বলেন, তাদের ব্যক্তিগত কিছু ক্ষোভ ও কমিটিতে তাদের না রাখার কারণে মোরসালিন, সাকলাইন আর রাব্বানীকে গত রমজানে আমার চোখের সামনে কুকুরের মতো মেরেছে। সাদ, মারুফ আর সৈকতের নেতৃত্বে তাদের উপস্থিতিতে টোকাই দ্বারা এ কাজ করা হয়। আমি ঠেকাতে গেলে আমকে মারধর করেছে তারা।

এদিকে মারধরের কথা অস্বীকার করে সাদ বলেন, জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই, আর তাদেরকে কে মেরেছে সেটাও আমি জানি না। কিন্তু এ ঘটনার পর মোরসালিনরা সৈকতকে ট্রেনের ভেতর মারধর করেছে। এদিকে সোমবার আমাকে আবারো মারতে এসেছে।

এদিকে এ বিষয় নিয়ে দুই দুই বার ফটক অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলায় ফেসবুকে এর প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, এই বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের কার্যক্রম চলছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।


আরো সংবাদ



premium cement