যশোরে আলোচিত সেই রফিক ও স্ত্রী ঝর্নার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- যশোর অফিস
- ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:০২
যশোরের বহুল আলোচিত সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝর্না ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, তথ্য গোপন ও সহায়তা করার অভিযোগে দুদক যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন দু’টি মামলা করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো: আল আমিন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী ঝর্নার বিরুদ্ধে সাত কোটি ২৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫২ টাকা আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসাথে তিনি দুদকের কাছে আট কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার নয় টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, টিএসআই রফিকের বিরুদ্ধে ৭০ হাজার ৫০০ টাকা আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসাথে তিনি দুদকের কাছে ৩৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন বলে উল্লেখ করেছে দুদক। রফিকুল ইসলাম বর্তমানে ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলা সূত্রে আরো জানা গেছে, টিএসআই রফিক ১৯৮৭ সালের ১০ অক্টোবর পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল পদে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে এটিএসআই, ২০১৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে টিএসআই এবং ২০২১ সালের ২৮ জুন ফের পদোন্নতি পেয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তার কাছে সম্পদ বিবরণীর তথ্য চায় দুদক।
এর প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৬ মে অভিযুক্ত রফিক তার সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তার নিজ নামে ১৯টি দলিল মূলে ক্রয়কৃত গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সুকতাইল মৌজায় মোট ২৫২ দশমিক ০৪ শতক কৃষি জমি (মূল্য ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯২৫ টাকা) স্থাবর সম্পদ এবং উপহার হিসেবে পাওয়া ৯০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন মালমাল ক্রয় বাবদ দুই লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অর্থাৎ তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ১৫ লাখ এক হাজার ৪২৫ টাকা। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানকালে সাবেক টিএসআই রফিকের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৭০ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ পেয়েছে, যা তিনি নিজ দখলে রেখে দুদক আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অপরদিকে, অভিযুক্ত ঝর্না ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ উপার্জনের সত্যতা পাওয়ায় তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে দুদক কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন তিনি। এতে দেখা যায়, ঝর্না ইয়াসমিন নিজ নামে গোপালগঞ্জে একটি বাড়ি, যশোর পৌর এলাকায় দু’টি বাড়ি ও দোকান, রাজশাহীতে একটি বাড়ি ও ঢাকার সেনপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট, ১২টি দলিল মূলে ক্রয় করা ৪২৯ দশমিক ৫৪৪ শতক জমিসহ মোট দু’কোটি ৪৭ লাখ ২২ হাজার ৬৭৯ টাকার স্থাবর সম্পদ (যার মধ্যে জমির মূল্য এক কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ৩৭ টাকা এবং স্থাপনা নির্মাণে বিনিয়োগ ৭৮ লাখ ২৫ হাজার ৫৪২ টাকা) থাকার তথ্য এবং বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা, উপহার হিসেবে পাওয়া ৯০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ একটি টয়োটা কার, যার মূল্য ১১ লাখ টাকাসহ মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখান। সর্বমোট সম্পদ দেখান দুই কোটি ৬১ লাখ ৭২ হাজার ৬৭৯ টাকার। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পেয়েছে সাত কোটি ২৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫২ টাকার। তার স্বামী অভিযুক্ত সাবেক টিএসআই রফিক পুলিশ বিভাগে কর্মরত থেকে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন করে তা স্ত্রী ঝর্না ইয়াসমিনের নামে অর্জন দেখিয়েছেন। একইসাথে তিনি দুদকের কাছে আট কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার নয় টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে দুদক সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেনের আবেদনে আদালত ২১ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ (সংশোধনী ২০১৯)-এর বিধি-১৮ মোতাবেক রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝর্না ইয়াসমিনের অবৈধ সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন। বিষয়টি জানতে পেরে রফিক তার সম্পদ বিক্রির পাঁয়তারা করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় তার গরুর খামার থেকে গরু বিক্রি করেন। যা স্থানীয় জনতা ধরে ফেলে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা