‘ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে’
- মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
- ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:০২
বাগেরহাটে বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ফারাক্কার প্রভাবে বিপর্যস্ত সুন্দরবন ও পশুর নদ : আন্তঃসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন ও সার্ভিস বাংলাদেশের আয়োজিত এ সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।
সেমিনারে বক্তরা বলেন, ইউনেস্কো সুন্দরবনের ক্ষতির ১ নম্বর কারণ হিসেবে গঙ্গা নদীর উজানে ভারতের নির্মাণ করা ফারাক্কা ব্যারাজকে চিহ্নিত করেছে। ফারাক্কা ব্যারাজ নির্মাণের পর থেকে সুন্দরবনের নদী-খালে মিষ্টি পানির প্রবাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তাই সুন্দরবনের জীববৈচিত্র রক্ষা করতে হলে গঙ্গা নদী দিয়ে মিষ্টি পানির প্রবাহ বাড়াতে হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো: নূর আলম শেখ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসরকে এম রব্বানী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যক্ষ মো: সেলিম, প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, ড. অসিত বসু, ড. অপর্ণা অধিকারী, মোংলা সরকারি কলেজের প্রভাষক খান আরিফুজ্জামান, প্রভাষক খাদিজা আক্তার ও সার্ভিস বাংলাদেশের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মিলন।
এছাড়া আরো বক্তব্য দেন নবলোকের প্রদীপ বিশ্বাস, সিএনআরএস-এর রাখি, জেলে সমিতির বিদ্যুৎ মণ্ডল, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার নাজমুল হক, হাছিব সরদার, রাসেল শেখ ও নারীনেত্রী কমলা সরকার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী বলেন, আন্তঃসীমান্ত নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে। পলি পড়ে নদী-খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সভ্যতার সুযোগ যত গ্রহণ করছি প্রকৃতি তত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দূষণ রোধে প্লাস্টিক রিসাইকেল এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, আমরা স্লুইস গেটের মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করে রেখেছি। প্রকৃতি নির্ভর সমাধানের বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। খাদ্যের অভাব এবং দূষণের কারণে পশুর নদের ইলিশ মাছ ছোট হয়ে যাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে মো: নূর আলম শেখ বলেন, আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারত ও অন্য দেশগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তঃসীমান্ত নদীর সংখ্যা যথাক্রমে ৫৪টি ও তিনটি। ৫৪টি নদীর মধ্যে ৩৬টি নদীর উপর ভারত মোট ৫৪টি ব্যারাজ এবং ড্যাম তৈরি করেছে। আন্তঃসীমান্ত নদ-নদীতে বাঁধ বা কোনো প্রতিবন্ধকতা নির্মাণের জন্য কিছু আন্তর্জাতিক আইন আছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই এ আইনগুলোর কোনো তোয়াক্কা করছে না। তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘের পানি প্রবাহ আইনে (১৯৯৭) বাংলাদেশকে অনুস্বাক্ষর করার আহ্বান জানায়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে বাপা, সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও সার্ভিস বাংলাাদেশের আয়োজনে ফারাক্কা বাঁধের অভিঘাতে বিপর্যস্ত সুন্দরবন ও পশুর নদ রক্ষার দাবিতে মোংলা নদীতে নৌ-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা