পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন টাওয়ার নদীতে
- আ ফ ম নুরুল কাদের, কুষ্টিয়া
- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১:৩১
কুষ্টিয়ায় মিরপুরে পদ্মা নদীর ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন টাওয়ার নদীতে বিলীন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সাহেব নগর গ্রামের পদ্মা নদীর তীরে ৩২ নম্বর টাওয়ারটি বিকট শব্দে ভেঙে নদীতে পড়ে যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার ভাঙন থেকে এলাকাকে মুক্ত করতে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবিতে এলাকাবাসী কুষ্টিয়া-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দু’ঘণ্টা ধরে সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বাপ্পী, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিরপুর-ভেড়ামারা) সার্কেল আব্দুল খালেক, মিরপুর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা বলেন, দ্রুত বর্তমান পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে অতিরিক্ত বালু ও জিও ব্যাগ ফেলা হবে। একইসাথে আগামী টেন্ডারের কাজ শুকনো মৌসুমেই শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিলে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন। পরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সাহেবনগর গ্রামের নুর হোসেন জানান, আমরা ভয় ও আতঙ্কে দিন পার করছি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চোখের সামনেই জাতীয় গ্রিডের ৩২ নম্বর টাওয়ার ভেঙে পড়ে। ৩৩ নম্বর টাওয়ারও ঝুঁকিতে রয়েছে যেকোনো সময় ওই টাওয়ারটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়াও আরো চারটি টাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জনান তিনি।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, ‘সাহেবনগর বেড়িবাঁধসহ ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ ফেলার কাজ চালু থাকা অবস্থায় টাওয়ারটি ভেঙে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছি।’
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলাকাবাসীকে জানান, ‘আমরা জানি আপনারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। আমরা আপানাদের পাশে আছি। আশা করছি দ্রুত এই পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করার কথাও বলেন তিনি।’
এদিকে বিকেলে কুষ্টিয়া সেনা ক্যাম্পের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুর রহমান স্থানীয় নদী রক্ষা কমিটিকে ক্যাম্পে ডেকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন এবং সরকারের পক্ষ থেকে তা দ্রুত সমাধানের কথা জানান।
এদিকে কুষ্টিয়ার বটতৈল গ্রীডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব নয়া দিগন্তকে জানান, নদী ভাঙনের খবরে আমরা কয়েক দিন আগে থেকেই ওই লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রেখেছিলাম। এ লাইনে ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুর গ্রিডের বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়। নদীতে বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙে যাওয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান।
পদ্মা নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অপু জানান, এলাকাবাসীর আশঙ্কা ছিল টাওয়ার ভেঙে নদীতে চলে যাবে, পরে তাই হলো। আমাদের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রয়েছে।
তিনি আরো জানান, মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া, তালবাড়িয়া ও বারুইপাড়া ইউনিয়নের মির্জানগর, নওদা খাদিমপুর, বাহিরচর, সাহেব নগর, ঘোড়ামারা, রানাখড়িয়া গ্রামের হাজার হাজার একর আবাদি জমির ফসল নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। গ্রামের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ, কবর, এবং দেশের উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়কটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা