২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

প্র শ্নো ত্ত র

-

প্রশ্ন : আমার প্রশ্ন হলো আমি নামাজ পড়ি, কিন্তু আমার বন্ধুদের, বড় ভাইদের অনেকে নামাজ পড়ে না। তাদের কি গাফিলতি আছে? আর আমার মাঝে মধ্যে নামাজ কাজা হচ্ছে। আমার কি গাফিলতি আছে?
ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর : নামাজ যে কারণে পড়ি না তার প্রথম কারণ হলো নামাজ যে কত মজার জিনিস তা বুঝি না। অনেকে মনে করে, নামাজ একটি বোঝা। এমন অনেকে আছে যারা রোজা রাখে কিন্তু নামাজ পড়ে না। যুবকদের অনেকে আল্লাহর জন্য না খেয়ে রোজা রাখা কঠিন মনে করে না। কিন্তু নামাজের জন্য পাক জামাকাপড় পরো, অজু করোÑ এসব কঠিন মনে করে। এখানে বুঝতে হবে, নামাজ আসলে কত মজাদার। এটি বুঝলে নামাজ না পড়ে থাকতে পারবে না। যেমন আমরা যে খাই সে খাওয়া মুখে রাখার ১০ মিনিট সময় মজা পাই। কিন্তু এর জন্য উপার্জন করা, বাজার করা, রান্না করা অনেক কষ্ট। আবার খাবার শেষে গ্যাস হয়, হজমে সমস্যা হয় তাতেও অনেক কষ্ট। কিন্তু এত কষ্টের জন্য আমরা কি খাওয়া বন্ধ করে দেই? ১০ মিনিটের মজা এত কষ্টের পরও ছাড়তে পারি না। আর নামাজের পুরোটাই মজা। আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো, আল্লাহর সাথে কথা বলা, আল্লাহর কাছে দোয়া করা। এই মজাটি বুঝতে হবে। বুঝতে হবে নামাজ আল্লাহর জন্য কাজ নয়। নামাজ আমার কাজ। নামাজ পড়লে আমার আচরণ ভালো হয়, মনে শান্তি আসে ও দুনিয়া সফল হতে পারি। আখিরাতে সফল হই। দ্বিতীয়ত, নামাজকে আমরা কঠিন মনে করি। সূরা কুরআন শেখা প্রভৃতি। আসলে নামাজ সহজ এবাদত। সূরা না জানলে শিখতে থাকবে, যতদূর জানি তা দিয়েই পড়ব। নামাজ সবচেয়ে উপকারী, কল্যাণময়, মজাদার এবাদত। এ কথাটা বুঝতে হবে। বন্ধুদের বোঝাতে চেষ্টা করবে। অনেকে বুঝতে চাইবে না। দুনিয়াতে সবচেয়ে মজা হলো মায়ের সাথে কথা বলা। অনেক দুষ্ট ছেলে মায়ের কাছে যেতে চায় না। সে এ মজাটা বুঝতে পারে না। বুঝলে মায়ের কাছে বারবার যেতে চাইবে। তোমরা বন্ধুদের নামাজের কথা বলো। এটি সহজ। সূরা কিরাআত যতদূর জানে তা দিয়েই নামাজ পড়তে বলো। এতে মনে শান্তি ও শক্তি পাবে। আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন। দুনিয়াতে সফল হবে, আখিরাতে কল্যাণ হবে। দ্বিতীয়ত, এটি বুঝতে হবে যে, যে উপকার বা কল্যাণ করে তাকে ধন্যবাদ দিতে এমনিতে মন চায়। কেউ বিপদে সাহায্য করলে তাকে ধন্যবাদ দিতে মন চায়। আমাদের সবচেয়ে বড় উপকার করেন আল্লাহ তায়ালা। তার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে না? তোমরা যারা হঠাৎ নামাজ কাজা করে ফেল এটা অনেক সময় অবহেলার কারণে হয়। এটি হওয়া উচিত নয়। অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো যদি নামাজ কাজা হয়, সময় মতো ঘুমাতে গেছো, নিয়ত ছিল নামাজ পড়ার কিন্তু একবারও ঘুম ভাঙেনি। এতে সওয়াব নষ্ট হবে, কিন্তু গুনাহ হবে না। ইচ্ছা করে নামাজ কাজা করা খুবই গুনাহর কাজ। খুবই অন্যায় কাজ। গোনাহর এই অনুভূতি যত জোরালো হবে ততই নামাজ কাজা তুমি করতে পারবে না। যেমন এখন অনেকেই ধূমপান করে। প্যাকেটে লেখা থাকে ধূমপানে মৃত্যু আনে। তার মানে লেখাটি সে বিশ্বাস করেনি। যখন এ কথা বিশ্বাস করবে তখন কখনো ধূমপান করতে পারবে না। আগুনে হাত পুড়ে জানে বলে আগুনে কেউ হাত দেয় না। এখন আল্লাহর কাছে হাজিরা না দিলে কী ক্ষতি হবে সে উপলব্ধি যদি তোমার গভীর হয় তবে আর নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে থাকতে পারবে না। ঘুম এমনিতেই ভেঙে যাবে। তোমরা ভোর ৪টায় যদি ঢাকায় যাওয়ার নিয়ত করো দেখবে তার আগে এমনিতেই ঘুম ভেঙে গেছে। এ ধরনের অভিজ্ঞতা সবার আছে। নামাজ কাজা হলে গুনাহ হবে এর পরও ঘুম ভাঙে না মানে নামাজ কাজা হলে গুনাহ হবে এর প্রতি ঈমান শক্ত হয়নি।
আল সুন্নাহ ট্রাস্টের ভিডিও ক্লিপ থেকে অনুলিখন


আরো সংবাদ



premium cement