রাসূলুল্লাহ সা:-এর অনুসরণ
- ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর
- ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
(গত সংখ্যার পর)
আমরা ইবাদত করব আল্লাহর। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। আমরা যা কিছু করব তা অবশ্যই রাসূল সা:-এর দেখানো পদ্ধতিতেই করব। সোয়াব দেবেন আল্লাহ; কিন্তু তরিকা রাসূলুল্লাহ সা:-এর হতে হবে। রাসূল সা:-এর সাহাবিরা যদিও জান্নাতুল বাকি বলেননি, তারা বলেছেন শুধু বাকি বা জান্নাতুল গারকত। আমরা যদি শুধু বাকি বলি তবে আমাদেরকে বেয়াদব বলা হবে। এটা তো বলা হলো রাসূল সা: সাহাবি রা:-দেরকে বলা হলো। অন্য একজন সাহাবি, আমি যখন জান্নাতুল গারকতে ফিরে রাসূলের কাছে যেতে চাইলাম কিছু সাহাবি বাধা দিচ্ছিলেন, আর রাসূল সা: বললেন, ওকে আসতে দাও, দেখি ও কী বলে। তখন লোকটি রাসূল সা:-এর কাছে গিয়ে উটের লাগাম টেনে ধরে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে এমন কিছু কাজ বলেন, যে কাজ করলে আমি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে পারব এবং জান্নাতের কাছে যেতে পারব। আমরা প্রশ্ন করি ঝগড়াঝাটির, কিন্তু সাহাবি রা: গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করতেন; যাতে জীবনের মোড় ঘুরে যায়। রাসূল সা: তাকে বললেন ঠিকমতো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে, রমজানের রোজা রাখবে, জাকাত আদায় করবে, হজ করবে, সকল মানুষের সাথে ভালো আচরণ করবে। তুমি মানুষের কাছ থেকে যে আচরণ আশা করো অন্যের সাথে তুমিও তেমন আচরণই করবে। তোমার সাথে যে আচরণ করলে তোমার কষ্ট হয় অন্যের সাথে তুমি তেমন আচরণ করবে না। এবার আমার উটের লাগাম ছাড়ো আমি যাই। দ্বীনের মূল হলোÑ আল্লাহর ফরজ ইবাদত করো, মানুষের সাথে ভালো আচরণ করো, ইনশা আল্লাহ তুমি জান্নাতে যেতে পারবে।
মুশকিল হলো আমাদের দেশে ফরজ যেন হারিয়ে গেছে। আল্লাহ কুরআনে বললেন, প্রথমেই পড়ো, আর আমরা পড়তে চাই না, আমরা শুনতে চাই। পড়াশোনার নিয়ম আল্লাহ বলে দিয়েছেন, আল্লাহ কুরআনুল কারিমে ভালো মুমিনের পরিচয় বর্ণনা করেছেন, যারা কথা শুনে, শুনেই সব কথা মানে না, যেগুলো ভালো কথা সেগুলোই মানে। তাহলে মুমিনের প্রথমেই পড়তে হবে এবং শুনতে হবে। তবে শুনেই লাফ মারা যাবে না; মুমিনকে শুনে বোঝার মতো একটা যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এখন আপনারা বলবেন, হুজুররা এক একজন এক এক কথা বলে। আমরা কোন দিকে যাবো? দেখুন, আমরা বাজারে গিয়ে যাচাই-বাছাই করে তারপর ক্রয় করি, কেউ বাজার না করে ফিরে আসি না। বাজার যদি যাচাই করে করতে পারি তাহলে কোন হুজুর সঠিক কথা বলছেন, তা যাচাই করতে পারব না কেন? তাহলে কি ঈমানের চেয়ে বাজার করা- আলু, পটোল, মাছ ইত্যাদি কেনা আপনার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
আল্লাহর জান্নাত পেতে হলে আপনাকে যাচাই-বাছাই করার ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। যখন বাজারের থেকে আল্লাহর প্রেমের দাম, জান্নাতের দাম আপনার কাছে বেশি হবে তখনই কেবল আপনি প্রকৃত মুমিন হতে পারবেন। আপনি সাধ্যমতো চেষ্টা করলে অবশ্যই আল্লাহ পুরস্কার দেবেন। দুনিয়ায় ঠকার ভয়ে এত যাচাই-বাছাই করতে পারলে কেন অনন্ত জীবনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারব না। কেন আল্লাহর পছন্দনীয় আমল করতে পারব না। আল্লাহর চেয়ে আপন কেউ নেই, তাই মালিকের সাথে ব্যবসায় করতে হলে আপনার মনটা আল্লাহর খুশির জন্য প্রস্তুত করতে হবে। আপনাকে চেষ্টা করতে হবে- আল্লাহ আমি আমার সাধ্যমতো জান্নাত কিনতে চেষ্টা করেছি, ঈমানকে সহি রাখার চেষ্টা করেছি। আল্লাহ বান্দার মনের অস্থিরতা দেখতে চান যে, তার বান্দা তারই রাজিখুশির জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। আল্লাহকে বলতে হবে- আমি উম্মি মানুষ, ভালো বুঝি না, কিভাবে তোমার পথে চললে তুমি রাজিখুশি হও, কী পড়লে সঠিক পথ পাওয়া যাবে, কার কাছ থেকে জানলে আমার প্রশ্নের উত্তর পেতে পারিÑ এ পেরেশানি আমার মধ্যে থাকতে হবে। এই আবেগ যদি আমাদের মধ্যে থাকে ইনশা আল্লাহ ভুল থাকলেও আল্লাহ মাফ করবেন। আমাদের শুনতে হবে এবং যাচাই করতে হবে। আমাদের জন্য সব সময়ের জন্য যা দরকারÑ আমরা কম মূল্যের জমি কিনতে গেলেও অর্জিনাল দলিল, পর্চা, পেছনের রেকর্ড দেখি, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দৌড়াই অথচ জান্নাতের জমি ক্রয়ের জন্য যে যা বলল কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই তা নিয়ে নিলাম বা সে অনুযায়ী আমল করতে লাগলাম। এটা কি কোনো বুদ্ধিমানের কাজ? এতে করে কি জান্নাতের কোনো মূল্যায়ন করলেন, না অবমূল্যায়ন করলেন? আল্লাহ আপনার কাছ থেকে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কিনবেনÑ এ জন্য আসল দলিল কুরআন দেখব, সুন্নাহ দেখব, আসল দলিল সাহাবাদের দেখব। দুনিয়ার জীবনে দুই লাখ টাকা হেরে গেলে এমন কিছু লস হয় না। আমার বাবা জমি কিনতে গিয়ে লস খেয়েছিলেন; কিন্তু তাতে এমন কী ক্ষতি হয়েছে, আমরা তো বড় হয়ে গেছি ? জান্নাতের জমি কিনতে গিয়ে যদি লস হয় তবে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। দুনিয়ায় তো আমরা কিছু করতে পারি না। পরের জন্য, আওলাদের জন্য জীবন শেষ করে দিলাম, আখেরাতের জন্য সামান্য যে কাজ সেটাও যদি পরকালে গিয়ে না পাই তো এর থেকে কষ্টের এর থেকে দুঃখের কী আছে? এর চেয়ে হতভাগা আর কে হতে পারে? কাজেই ভাইয়েরা। আমার অনুরোধ হলো, জান্নাতকে দাম দেন। আল্লাহর বেলায়েতকে দাম দেন, আল্লাহ খুব সহজে মেনে নেন, শুধু আল্লাহ আপনার দিলের অবস্থা জানতে চান।
অনুলিখন : হেলাল বিশ্বাস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা