২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

লাইলাতুল কদর

-

ইসলামে ‘শবে বরাত’ বা ‘ভাগ্যরজনী’ আছে। তবে বুঝার ভুলের কারণে কিছু লোক এটা পালনের জন্য ভুল রাতকে বেছে নিয়েছেন। অবশ্য কুরআন ও হাদিস সম্বন্ধে যারা জ্ঞান রাখেন, তাঁরা জানেন এবং বলেন যে, ‘সৌভাগ্যের রাত’ হচ্ছে রমজানের শেষ ১০ দিনের কোনো এক বেজোড় মর্যাদাপূর্ণ রাতÑ অর্থাৎ কদরের রাত, যেটা ফার্সিতে ‘শবে কদর’ এবং আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’।
শব (ফারসি)/লাইল (আরবি), অর্থ রজনী বা রাত।
বরাত (ফারসি)/মুবারক বা মোবারক (আরবি), অর্থ বরকত বা ভাগ্য/সৌভাগ্য।
কদর অর্থÑ মর্যাদাপূর্ণ, সম্মানিত, মহিমান্বিত, মহামহিমান্বিত, মাহাত্ম্যপূর্ণ। অর্থাৎ শবে কদর বা লাইলাতুল কদর হচ্ছে মহিমান্বিত রজনী।
কদরের রাত যে প্রকৃত সৌভাগ্যের রজনী, এ কথা সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় পবিত্র আল কুরআনের সূরা কদর এবং সূরা দোখানে (দুখান) দু’টি সূরা পাশাপাশি রেখে গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়লে। সূরা কদরে আল্লাহ্ বলেছেন,‘নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি কদরের রাতে (মহিমান্বিত রজনীতে) [আয়াত-১] কদরের রাত (মহিমান্বিত রজনী) হাজার মাসের চেয়েও সেরা (আয়াত-৩); এ রাতে রুহ ও ফেরেশতারা নেমে আসে প্রতিপালকের অপার অনুগ্রহ নিয়ে (আয়াত-৪); ঊষালগ্ন পর্যন্ত বর্ষণ করে সমস্ত অকল্যাণ থেকে নিরাপত্তা ও শান্তি (আয়াত-৫)।
সূরা দোখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,‘আমি এই কুরআন নাজিল করেছি এক মোবারক (বরকতময় বা সৌভাগ্যের) রাতে (আয়াত-৩); সেই মোবারক রাতে প্রজ্ঞাময়তা দ্বারা (সত্য ও মিথ্যার) প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুস্পষ্ট ফায়সালা করা হয় (আয়াত-৪)। সূরা আদ দোখানে ‘কদর’ (মর্যাদাপূর্ণ) এর স্থলে ‘মোবারক’ (বরকতপূর্ণ) উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘লাইলাতুল কদর’কেই ‘লাইলাতুল মোবারক’ বলা হয়েছে।
সূরা দোখানের উল্লিখিত আয়াতগুলোর তাফসিরে শায়খ আবদুল আজিজ বিন বাজ র., ইবনে কাসির ও আল্লামা শাওকানি র.সহ বেশির ভাগ মুফাসসির রমজানের শবে কদরকে বুঝিয়েছেন। সহিহ বুখারি হাদিস নং ১১৪৫ এবং মুসলিম হাদিস নং ৭৫৮-এর আলোকে অনেক হাদিসবিদ শাবান মাসের মধ্য রাতকে বরাতের রাত হিসেবে অস্বীকার করেছেন।
তবে হ্যাঁ, ইসলামে প্রত্যেক চান্দ্র মাসেরই মধ্যবর্তী তারিখকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়Ñ কারণ, সেই তারিখগুলোতে রাসূল সা: রোজা রাখতেন। তবে শাবানের মধ্যরাতে শবে বরাত উপলক্ষে নবীজী সা: কোনো নির্দিষ্ট ইবাদত করেছেন বলে সহিহ হাদিসে প্রমাণিত হয়নি কিংবা তাঁর সাহাবিদের থেকেও কিছু বর্ণিত হয়নি। শায়খ আবদুল আজিজ বিন বাজ র. বলেন,‘এ রাতের ফজিলত বর্ণনায় কিছু দুর্বল হাদিস এসেছে, যার ওপর ভিত্তি করে কোনো কিছু করা বৈধ নয়। আর এ রাতে বিশেষ সালাত আদায়ে বর্ণিত সব হাদিসই জাল’। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন,‘যদি আমার দ্বীনে এমন কিছুর উদ্ভব ঘটে, যা এর মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’ (অর্থাৎ ‘বিদআত’। আরবি ‘বিদআত’ মানে নতুন কিছু উদ্ভাবন বা সংযোজন) (বুখারি ২৬৯৭)। তবে শাবানের মধ্যরাত নির্দ্বিধায় এবং নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে আল্লাহ ্প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং গুনাহ থেকে মুক্তি চাওয়ার জন্য বান্দাদের আহ্বান করেন। এখানে ভাগ্য লিখনের কোনো বিষয় নেই। আর এ রাত এত মর্যাদাপূর্ণ হওয়ার বিশেষ কারণ হলো- এক বর্ণনা মতে, এ রাতে পবিত্র আল কুরআন লাওহে মাহফুজ থেকে চতুর্থ আসমানে জিবরাইল ফেরেশতার কাছে প্রেরিত হয়। তারপর ৬১০ সালে জিবরাইল ফেরেশতার মাধ্যমে কুরআন প্রথম আসমানে অর্থাৎ পৃথিবীর আসমানে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নিকট নাজিল হয়। অর্থাৎ নবীজীর কাছে প্রথম ওহি আসে কদরের রাতে (রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের কোনো এক বেজোড় রাতে) এবং তাঁর কাছে সম্পূর্ণ কুরআন শরিফ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ধাপে ধাপে নাজিল হয় ২৩ বছর ধরে।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement
রাজশাহীতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব আড়াইহাজারে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৬ শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন ১৩ বছর বয়সী বৈভব সিলেটে ট্রাক ও বাসচাপায় নিহত ২ মানিকগঞ্জে প্রলোভন দেখিয়ে শাহাবাগে লোক নেয়ার মূলহোতা দবিরসহ আটক ৫ মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক

সকল