২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শিশুর জন্য দোয়া করুন

-

আজকের কোমলমতি শিশুরা আগামী দিনের কল্যাণের প্রতীক। তারা একদিন বড় হয়ে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা করে নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কার করবে। তাদের আবিষ্কার পরিবার-সমাজের দৃশ্যপট পাল্টে দেবে। এ সমাজের শিশুরা যেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের হাল ধরতে পারে, এর জন্য সবাইকে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে হবে। দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন। শিশুদের জন্য দোয়া করার প্রসঙ্গটি কুরআনেও এসেছে। প্রত্যেক নবী-রাসূল সুসন্তান লাভের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতেন। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেখানে (দাঁড়িয়েই) জাকারিয়া তাঁর প্রভুর কাছে দোয়া করলেন, হে আমার প্রভু, তোমার কাছ থেকে আমাকে (তোমার অনুগ্রহের প্রতীক হিসেবে) একটি নেক সন্তান দান করো, নিশ্চয়ই তুমি (মানুষের) ডাক শুনো’ (সূরা আল-ইমরান : ৩৮)। ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে নেককার সন্তান দান করুন। অতঃপর তাকে আমি পরম ধৈর্যশীল একজন পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম’ (সূরা সাফফাত : ১০০-১০১)। ‘যখন ইবরাহিম (আল্লাহর কাছে) দোয়া করলেন, ‘হে আমার প্রভু এ (মক্কা) শহরকে নিরাপত্তার শহরে পরিণত করো এবং আমাকে আমার সন্তান-সন্ততিদের মূর্তিপূজা করা থেকে দূরে রেখো’ (সূরা ইবরাহিম : ৩৫)।
প্রত্যেকটি শিশুকে আল্লাহ তায়ালা তার বাবা-মাকে নেয়ামতস্বরূপ দান করেন। আল্লাহর দেয়া নেয়ামত শিশুকে সঠিক সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে দিতে হবে। শিশুরা যদি ঠিক মতো বেড়ে উঠতে না পারে, ভবিষ্যতে পরিবারের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কোনো কোনো শিশুর অন্যায় অপরাধের জন্য কখনো কখনো তার বাবা-মাকে সমাজের কাছে অপমানিত হতে হয়। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতত্রব তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করো। আর যদি তোমরা মার্জনা করো, এড়িয়ে যাও এবং ক্ষমা করে দাও তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু’ (সূরা তাগাবুন : ১৩-১৪)।
শিশুদের জন্য দোয়া করা রাসূল সা:-এর সুন্নত। রাসূল সা: শিশুদের জন্য নিজে দোয়া করতেন এবং অন্যকেও শিশুদের জন্য দোয়া করতে বলতেন। হজরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূল সা:-এর কাছে ছোট শিশুদের আনা হতো। আর তিনি তাদের মঙ্গলের জন্য দোয়া করতেন’ (বোখারি-মুসলিম : ৫৯১৫)।
মহানবীর আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে শিশুদের মঙ্গলের জন্য দোয়া করতে হবে। আজকাল বহু শিশু নানা সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের কেউ কেউ শিশুদের মাদক বহন করার কাজে ব্যবহার করছে। আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হলে, শিশুদেরকে বিপথগামিতার পথ থেকে ফেরাতে হবে। তাদের মঙ্গলের জন্য দোয়া করতে হবে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার রব! আমাকে সালাতকায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দোয়া কবুল করুন’ (সূরা ইবরাহিম : ৪০)। ‘হে আমার পালনকর্তা! আমাদের স্ত্রীদের থেকে এবং আমাদের সন্তানাদি থেকে আমাদেরকে চোখের শীতলতা ও আত্মার প্রশান্তি দান করো এবং আমাদেরকে মুত্তাকিদের জন্য আদর্শস্বরূপ বানাও’ (সূরা ফুরকান : ৭৪)। রাসূল সা: শিশুদের মঙ্গলের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং আমরাও শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া করব।
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement