২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দরুদ ও সালামের ফজিলত

-

প্রত্যেকটি আমলের ভিন্ন ভিন্ন গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। দরুদ পড়া ও সালাম দেয়া একটি উত্তম আমল। এরও ভিন্ন গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। দরুদ পড়ার মাধ্যমে রাসূল সা:-এর দ্বীনের প্রতি ঈমান ও মহব্বত বৃদ্ধি পায়। কুরআনেও দরুদ ও সালাম দেয়ার ওপর তাগিদ দেয়া হয়েছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাক ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর ওপর দরুদ পাঠান; হে ঈমানদার ব্যক্তিরা, তোমরাও নবীর ওপর দরুদ পাঠাতে থাকো এবং উত্তম অভিবাদন (সালাম পেশ) করো।’ (সূরা আহজাব : ৫৬)
দরুদ ও সালামের ওপর আমলের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক। দরুদ ও সালামের ওপর আমল করলে, আল্লাহ তায়ালা আমলকারী ব্যক্তির মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহপাক তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করবেন। এ ছাড়া তার ১০টি গোনাহ মাফ করা হবে এবং ১০টি দরজা বুলন্দ অর্থাৎ মর্তবা বাড়িয়ে দেয়া হবে। (নাসায়ি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
এ ছাড়া দুনিয়ার জিন্দেগিতে যে যাকে ভালোবাসবে বা মহব্বত করবে, কিয়ামতের দিন তার ভালোবাসার বা পছন্দের মানুষের সাথে হাশর হবে। কারো যদি ইচ্ছা হয় যে, আমি হাশরের দিন রাসূল সা:-এর সাথে থাকব, তাহলে ওই ব্যক্তিকে দরুদের ওপর আমল করতে হবে। হজরত ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতে আমার নিকটতম ব্যক্তি সেই হবে, যে আমার ওপর অধিক দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
পৃথিবীর যেকোনো স্থানে বসে, যে কেউ দরুদ ও সালাম পড়–ক না কেন, আল্লাহর কুদরতে দরুদ ও সালাম প্রেরণের খবর রাসূল সা:-এর কাছে পৌঁছে যায়। আল্লাহ তায়ালা এমন কিছুসংখ্যক ফেরেশতা নিয়োজিত করে রেখেছেন, তাদের দায়িত্ব হলো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে দরুদ ও সালাম প্রেরণের খবর সংগ্রহ করে রাসূল সা:-এর কাছে পৌঁছে দেয়া। হজরত ইবনে মাসউদ রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর কতেক ফেরেশতা রয়েছেন, যারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করেন এবং আমার উম্মতের সালাম আমার কাছে পৌঁছান। (নাসায়ি, দারেমি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৬)
দোয়া কবুলের আদব হলো দোয়া করার আগে রাসূল সা:-এর ওপর দরুদ পড়া। দরুদ পড়ার গুরুত্ব এতটাই বেশি, যতক্ষণ পর্যন্ত রাসূল সা:-এর ওপর দরুদ পড়া না হয়, ওই ব্যক্তির দোয়া আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। হজরত উমর বিন খাত্তাব রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, দোয়া আসমান ও জমিনের মধ্যে (শূন্যে) অবস্থান করতে থাকে, যতক্ষণ না তোমরা নবীর ওপর দরুদ পাঠ না করো তা ওপরে চড়ে না অর্থাৎ উঠে না। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৭)
রাসূল সা:-এর নাম মুবারক যেখানে উচ্চারিত হয়, শুনার সাথে সাথে তাঁর ওপর দরুদ পড়তে হয়। ওই সময়ে দরুদ না পড়লে গোনাহগার হতে হয়। হজরত আলী রা: থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, কৃপণ ওই ব্যক্তি যার নিকট আমার নাম উচ্চারণ করা হলো অথচ সে আমার প্রতি দরুদ পাঠ করল না। (তিরমিজি, মিশকাত পৃষ্ঠা-৮৭)
লেখক : প্রবন্ধকার


আরো সংবাদ



premium cement