আল্লাহর সাহায্য তালাশ করা
- ফিরোজ আহমাদ
- ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
উসিলা হলো মাধ্যম, কর্ম বা আমল। দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর সাহায্য লাভের জন্য উসিলা তালাশ বা কর্ম করা ফরজ। আল্লাহর সাহায্য লাভের জন্য উসিলা তালাশ বা কর্ম হলো, কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী ফরজ আমলের পাশাপাশি নফল নামাজ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, নফল রোজা, দান-সাদকা, কুরআন তিলাওয়াত, মোরাকাবা-মোশাহেদা করা এবং সৎকর্মশীল ব্যক্তির সাথে থাকা। আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে নবী-রাসূল ছাড়াও মানুষকে হেদায়েতের জ্ঞান দিতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তা করেননি। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর জন্যই একটি নিয়ম ও সময় ঠিক করে দিয়েছেন। যেমন: নবী-রাসূলগণ হজরত জিব্রাইল আ:-এর মাধ্যমে আল্লাহর সব আদেশ-নির্দেশ সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। অতঃপর নবীগণ আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নির্দেশ উম্মতদের কাছে প্রচার করেছেন। এখানে আল্লাহ তায়ালা ও নবীর সেতুবন্ধনের মাধ্যম হলেন হজরত জিব্রাইল আ:। মানুষ এবং আল্লাহর সেতুবন্ধন নবী আ:। তাই আমাদেরও আল্লাহর কাছে উত্তম কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে সাহায্য চাইতে হবে। উসিলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহকে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য তোমরা উপায় অনুসন্ধান কর এবং তাঁর পথে সংগ্রাম করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদাহ : ৩৫)।
আল্লাহ ছাড়া দ্বিতীয় আর কোনো সাহায্যকারী নেই। তিনি বিপদ-আপদে সবাইকে সাহায্য করেন। পৃথিবীর সব কিছু মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুমের আজ্ঞাবহ। তাই বিপদ-আপদ থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য, পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাইতে হবে। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ধৈর্যশীল মানুষদের সাথে আছেন।’ (সূরা বাকারা : ১৫৩)।
আমরা বিপদে পড়ে আছানির জন্য, যখন আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করে, তাকে স্মরণ করি। তখন তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসেন। কুরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘কে আছে অসহায় ও বিপন্নের ডাকে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে এবং কষ্ট ও বিপদ দূরীভূত করে দেয়?’ (সূরা নমল : ৬২)। অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে ‘তোমরা ভয় ও আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাক। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সূরা আরাফ : ৫৬)। ‘আর আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, আমি নিকটেই আছি। আমি দোয়াকারীর দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করি।’ (সূরা বাকারা : ১৮৬)।
আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্যে উছিলা হিসেবে কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া-দুরূদ পড়তে হবে। এবং আল্লাহর কাছে দোয়া, ফরিয়াদ ও কান্নাকাটি করতে হয়। যেমন কেউ অসুস্থ হলে সুস্থতার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই, কথোপকথনের জন্য ফোন ব্যবহার করি, জীবিকার প্রয়োজন মেটানোর জন্য কৃষিকাজ করি, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও চাকরি করি ইত্যাদি। দুনিয়াবি এসব কর্মে কামিয়াবি লাভের ক্ষেত্রেও আল্লাহর সাহায্য থাকতে হয়। আল্লাহর সাহায্য কিংবা রহমত ছাড়া যেকোনো কাজে সাফল্যে লাভ করা অসম্ভব। হজরত আলী (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, দোয়া মোমিনের হাতিয়ার, দ্বীনের স্তম্ভ এবং আসমান জমিনের নূর। (মু. হাদিস : ৪৬৫ পৃ.)। হজরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা:) এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া অপেক্ষা কোনো জিনিসই অধিক ফজিলত ও সম্মানের নেই। (তিরমিজি : ৩৩৭)।
আল্লাহর সাহায্য লাভের জন্য কুরআন-হাদিস অনুযায়ী উসিলা তালাশ করতে হবে। কুরআন-হাদিসের বাইরে গিয়ে কোনো প্রকার উসিলা তালাশ বা খোঁজ করলে ঈমান হারাতে হবে। আমাদের সারা জীবনের সব আমল ইবাদত বরবাদ হয়ে যাবে।
লেখক : প্রবন্ধকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা