বিনয় উত্তম চরিত্রের ভূষণ
- এ কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন
- ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ অচল। সমাজে চলার তাগীদেই মানুষকে বিভিন্ন লেনদেন এবং পারস্পরিক আদান প্রদান করতে হয় এবং এই আদান-প্রদান বা লেনদেনের ক্ষেত্রেই মানবিক চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। মানব চরিত্রের দু’টি দিক রয়েছে ভালো ও মন্দ। মানুষের যে স্বভাবটি প্রধান্য পায়, ঠিক সে দিকেই খ্যাতি লাভ করে মানুষ। কেউ হয় ভালো মানুষ আর কেউ হয়ে যায় মন্দ। যাদের চরিত্রে উত্তম গুণাবলির সমাবেশ ঘটে, সে হয় স্মরণীয় ও বরণীয়। আর যার চরিত্রে মন্দ দোষে দুষ্ট হয়, সে হয় মন্দ ও পরিত্যাজ্য।
বিনয় ইসলামের পরিচয় : বিনয়ের আসল অর্থ হচ্ছে সত্যকে দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নেয়া হোক তা যে কারো কাছ থেকে। এর আরেকটি অর্থ নিজেকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে না করা। প্রখ্যাত মনীষী হাসান বসরী বলেছেন, নিজের ঘর থেকে বের হওয়ার পর যে কারো সাথে সাক্ষাত হবে তকে নিজের চেয়েও ভালো মনে করার নামই বিনয়। হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম বলতেন, ‘এ পৃথিবীতে যারা বিনয়ী থাকবে, কিয়ামতের মাঠে তাদের জন্য কি আনন্দ! তারা সেদিন আসনে বসে থাকবে। মুসলিম শরিফে ইয়ায (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, এক দিন রাসুল আমাদেরকে বলেছেন, আল্লাহপাক আমার কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন, যাতে তোমরা বিনয়ী হও। একে অন্যের ওপর গর্ব করবে না এবং রাগও হবে না।’
বিনয় ও নম্রতা উত্তম চরিত্রের ভূষণ : মানুষের জীবনে যত উত্তম গুণাবলি রয়েছে তার মধ্যে উত্তম গুণ হলো-
বিনয় ও নম্র্রতা। বিনয় ও নম্র্রতা উত্তম চরিত্রের ভূষণ। যার মূর্ত প্রতীক হচ্ছেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা:) ও তার সাহাবিরা। বিনয় ও নম্রতা দ্বারাই তারা মানুষকে আপন করে নিয়েছে। বিনয়ী ব্যক্তিকে আল্লাহ যেমন ভলোবাসেন তেমনি মানুষ ও তাকে ভালোবাসেন। যে আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনয়ী হও, আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। বিনয় ও নম্রতা সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, যারা তোমার অনুসরণ করে সেসব বিশ্বাসীর প্রতি বিনয়ী হও। [ সূরা আশ শুআরা : ২১৫]
মহান আল্লাহতায়ালা আরো ইরশাদ করেন, তারাই তো আল্লাহর প্রকৃত বান্দা যারা জমিনে নম্রতার সাথে চলাফেরা করে আর যখন মূর্খ লোকেরা তাদের সাথে আল্লাহর বিষয়ে তর্ক করে তখন তারা বলে দেয় তোমাদের সালাম [ সূরা আল ফুরকান : ৬৩]
বিনয় ও নম্রতা সম্পর্কে হাদিস শরিফে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রাসূলূল্লাহ (সা:) বলেছেন, আল্লাহ স্বয়ং নম্র, তাই তিনি নম্রতাকে ভালোবাসেন। তিনি কঠোরতার জন্য যা দান করেন না ; তা নম্র্রতার জন্য দান করেন। নম্রতা ছাড়া অন্য কিছুতেই তা দান করেন না (মুসলিম)।
পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা কর না : মানবতার শ্রেষ্ঠ রাসূল [ সা:] বলেছেন, আল্লাহ মহান অহির মাধ্যমে আমার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন, নম্রতা ও হেয়তা অবলম্বন কর অর্থাৎ বিনয়ী হও। কেউ যেন অন্যের ওপর গর্ব ও অহঙ্কারের পথ অবলম্বন না করে এবং কেউ যেন কারো ওপর অত্যাচার না করে। (মুসলিম) আমাদের নবীজীর ৬৩ বছরের সুদীর্ঘ জীবনের গোটাটাই নম্র্রতা আর বিনয়ী আচরণে পরিপূর্ণ। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি ভূপৃষ্ঠে কখনই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত সমান হতে পারবে না। এসবের মধ্যে যেগুলো মন্দ কাজ সেগুলো তোমার পালন কর্তার কাছে অপছন্দনীয়। (বনি ইসরাইল : ৩৮,৩৯)
লেখক : প্রবন্ধকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা