ইসলাম প্রচারে ওয়াজ
- সাকী মাহবুব
- ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
বিশ্বব্যাপী কায়েমী স্বার্থবাদীদের শাসন-শোষণের অবসান ঘটিয়ে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করার ল্েয মহাপ্রভুর সার্বভৌমত্ব¡ ও ইসলামের চিরন্তন শাশ্বত বিধানের প্রতি আহ্বান করা, ঈমানের অনিবার্য দাবি। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণের আগমন ঘটেছে। নবীদের আগমনের ধারা বন্ধ হলেও দাওয়াতের কাজ বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের কাজ এখনো এগিয়ে চলছে। মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত প্রচার ও প্রসারের জন্য যতগুলো মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে বক্তৃতা অন্যতম মাধ্যম। মহান আল্লাহ বলেন, তোমার রবের পথে আহ্বান জানাও হিকমতের সাথে (সুকৌশলে) এবং উত্তম ভাষণের মাধ্যমে। আর তর্ক করো সর্বোত্তম পন্থায়।’ (সূরা নাহল : ১২৫)
ইসলাম প্রচারের জন্য বক্তৃতা একটি শক্তিশালী কৌশল। বক্তৃতা একটি আর্ট। ইসলাম প্রচারের একটি বিশেষ মাধ্যম হচ্ছে বক্তৃতা। বক্তৃতাতে আছে মানুষের মনকে আকর্ষণ করার বিশেষ শক্তি। বক্তৃতা আদর্শ প্রচারের বিশেষ হাতিয়ার। বক্তৃতা শ্রোতাদের নিজ মতে বা আদর্শে আনার একটি বিরাট শক্তি। বক্তৃতা শ্রেষ্ঠ যোগাযোগ মাধ্যম। বক্তৃতায় আছে অদ্ভুদ আকর্ষণ শক্তি। বক্তৃতা তাই মানব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বয়ং রাব্বুল আলামীন বক্তৃতার অসাধারণ গুরুত্বের কথা ও সুবক্তা হওয়ার প্রশংসা করে ইরশাদ করেনÑ ‘আমি তার সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম। এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী বাগ্মীতা।’ (সূরা সোয়াদ : ২০)
মানব জীবনে বক্তৃতার গুরুত্ব সীমাহীন। মহানবী সা: বলেছেন ‘নিশ্চয়ই কোনো কোনো বয়ান ও বক্তৃতায় জাদু রয়েছে।’ (বুখারি ও মুসনাদে আহমদ)
পবিত্র কুরআন ও বেশ কিছু হাদিসের দ্বারা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, বয়ান ও বক্তৃতার েেত্র বিশেষ পারঙ্গমতা অর্জন, ভাষার মাধুর্যতা, সুুন্দর উপস্থাপনা ও হিকমতপূর্ণ বক্তব্য নিঃসন্দেহে একটি বিশেষ গুণ। দ্বীনের প্রচার প্রসারের জন্য বক্তৃতা একটি প্রশংসনীয় দিক।
মানবজাতির শ্রেষ্ঠ বক্তা ছিলেন নবী রাসূলরা। মানুষকে সত্যের জ্ঞান দান, সঠিক পথ প্রদর্শন এবং আল্লাহর বিধানের ভিত্তিতে আদর্শ সমাজ গড়ার জন্যই প্রেরিত হয়েছিলেন তাঁরা। এ কাজ তাঁরা করেছিলেন মানুষকে বুঝাবার মাধ্যমে। তাই তাঁদের সবাইকে সারাজীবন বক্তৃতা করতে হয়েছে। তাঁদের বক্তৃতা ছিল সবচেয়ে সুুন্দর, চমৎকার ও আকর্ষণীয়। পবিত্র হাদিস ও সিরাত সাহিত্যের মাধ্যমে জানা যায়, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বক্তা ছিলেন বিশ্বনবী সা:। তাঁর বক্তব্য ছিল সব দিক থেকেই অনন্য, হৃদয়গ্রাহী, বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।
বিশ্বনবী সা:-এর মক্কার উকায ও যুলমাযায বাজারে উপস্থিত জনতার সামনে তাওহিদ রিসালাত ও আখিরাতের ওপর মাধুর্যপূর্ণ বক্তৃতা তাদের আজীবনের লালিত আকিদা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বজ্র কুঠারাঘাত হানত। ফলে তাঁর ভাষা বাণী ও উপস্থাপনের একেকটি উচ্চারণ নাড়া দিয়ে উঠত বিশ্বাসের সৌধ চূড়া। ভেঙে চুরমার হয়ে যেত হাজার বছরের লালিত আদর্শের ইট, বালু, খোয়া। সমাজের আমূল পরিবর্তন এমনিতেই তিনি আনতে পারেননি। এর পেছনে রাসূল সা:-এর অসাধারণ বাকশক্তি ও সাহিত্যপূর্ণ বক্তৃতার বিরাট প্রভাব ছিল। যুগ যুগ ধরে বিশ্বনবী সা:-এর অনুসরণে সাহাবিরা, তাবে, তাবেইন, আমাদের আকাবিররাও ছিলেন সরব। হজরত আবু বকর রা:, হজরত ওমর রা:, হজরত উসমান রা:, হজরত আলী রা:, হজরত জাফর বিন আবু তালিব রা: ও অন্যান্য সাহাবায়ে কেরাম রা:ও ছিলেন বক্তৃতায় বাকপটু। ওমর ইবনে আবদুল আজিজ, আবু হানিফা রহ:, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রহ:, মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহ:, আশরাফ আলী থানভী রহ:, আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ:, আল্লামা ইকবাল রহ:, আল্লামা শিবলী নোমানী, জাস্টিস মাওলানা তকী উসমানী, আহমদ দিদাত, বিলাল ফিলিপ্স, ডা: জাকির নায়েক, ড. খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর প্রমুখ বিশ্ব কাঁপানো বক্তা কুরআন ও হাদিসের আলোকে ‘হৃদয়স্পর্শী’ বক্তৃতার মাধ্যমে দেশ- বিদেশে ইসলামী জাগরণ সৃষ্টি করতে সম হয়েছেন। তাই আসুন একবিংশ শতাব্দীর প্রভাত লগ্নে দাঁড়িয়ে বিশ্বময় ইসলামের বাণী প্রচার ও প্রসারের ল্েয কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমে যুক্তিসঙ্গতভাবে হেদায়েতের আলোকে বক্তৃতা করি এবং হকের আওয়াজ সর্বত্র ছড়িয়ে দেই।
লেখক : প্রাবন্ধিক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা