২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মহাকাশের গভীরে ‘মহাজাগতিক লেজারের’ সন্ধান লাভ

মহাকাশের গভীরে ‘মহাজাগতিক লেজারের’ সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা - ছবি : সংগৃহীত

মহাকাশের গভীরে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি রেডিও তরঙ্গের লেজার শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে কখনো এত গভীর মহাকাশে রেডিও তরঙ্গের বিচ্ছুরণ শনাক্ত হয়নি। বিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের তরঙ্গ হচ্ছে এক ধরনের ভরহীন মহাজাগতিক অবজেক্ট যা ‘মেগাম্যাসার’ নামে পরিচিত। এই আলো ৫ বিলিয়ন আলোকবর্ষ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীতে পৌঁছেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা মিরক্যাট রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে এই লেজারটি শনাক্ত করেন বিজ্ঞানীরা। এই মেগাম্যাসারের উৎসের নাম দেয়া হয়েছে এনকালাকাথা বা বিগ বস।

অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্সে এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়েছে। আবিষ্কারটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রনমি রিসার্চের জ্যোতির্বিজ্ঞানী মার্সিন গ্লোয়াকি বলেন, মাত্র এক রাত পর্যবেক্ষণের পরই আমরা এই রেকর্ড ভাঙ্গা মেগাম্যাসার আবিষ্কার করেছি।

এটি রীতিমতো অবিশ্বাস্য। এটি প্রমাণ করে আমাদের টেলিস্কোপ কত অসাধারণ।

ম্যাসার মূলত লেজারের মাইক্রোওয়েভ সংস্করণ। এটি দৃশ্যমান আলো নির্গত না করে মাইক্রোওয়েভ এবং রেডিও তরঙ্গ সৃষ্টি করে। গ্রহ, ধূমকেতু, মহাজাগতিক মেঘ এবং নক্ষত্ররাও ম্যাসার উৎপন্ন করে। আরো শক্তিশালী তরঙ্গ সৃষ্টিকারীকে বলা হয় মেগাম্যাসার। একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল মেগাম্যাসার উৎপন্ন করতে পারে।

সূত্র জানায়, বিজ্ঞানীরা ৩ হাজার ঘণ্টা মহাকাশ পর্যবেক্ষণের পরিকল্পনা করেন এবং প্রথম রাতেই এই অসাধারণ আবিষ্কার টেলিস্কোপে ধরা দেয়। মূলত দুটি ছায়াপথের মধ্যে সংঘাত কিংবা ছায়াপথের জন্ম বা মৃত্যুর সময় এ ধরনের মেগাম্যাসার নির্গত হয়। সম্প্রতি আবিষ্কার হওয়া মেগাম্যাসারটি WISEA J033046.26−275518.3 নামের একটি ছায়াপথ থেকে নির্গত হচ্ছে। বর্তমানে এটিকেই নাম দেয়া হয়েছে - এনকালাকাথা।

কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেরেমি ডারলিং বলেন, যদি মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির মধ্যে সংঘর্ষ হয় তাহলে সেখান থেকে আলোর বিম সৃষ্টি হবে এবং বহু দূর থেকে তা দেখা যাবে। এ ধরনের মেগাম্যাসার উজ্জ্বল আলো তৈরি করে। এই মেগাম্যাসার আমাদের বার্তা দেয় যে, এখানে গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং নতুন নক্ষত্রের জন্ম হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement