২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পুতিনকে যুদ্ধে সহায়তার ফল ভোগ করবে চীন : ন্যাটো প্রধান

ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ - ছবি : সংগৃহীত

সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, চীন তার অবস্থান না বদলালে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন দেয়ার পরিণতি ভোগ করতে হবে দেশটিকে।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘চীন দু’দিকেই সুবিধা নিতে চাইছে।

তিনি বলেন, একদিকে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন দিচ্ছে, অন্যদিকে ইউরোপের মিত্রদের সাথেও সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে চীন।

তিনি আরো বলেন, ‘এটা দীর্ঘমেয়াদে কাজে আসবে না।’

ওয়াশিংটনে এক সফর চলাকালীন তার সাথে কথা হয় বিবিসির।

দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে পারমাণবিক অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষ ব্যয় নিয়েও কথা বলেন ন্যাটো প্রধান।

এক দিন আগেই সুইজারল্যান্ডে একটি শান্তি সম্মেলন শেষ হয়েছে, যেখানে কিয়েভকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে অনেক দেশ।

কিন্তু রাশিয়া সম্মেলনটিকে ‘সময়ের অপচয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করলেই কেবল তারা শান্তি আলোচনায় সম্মত হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার এমন অনমনীয় অবস্থানের মধ্যেই ন্যাটো মহাসচিবের মন্তব্যটি এলো।

রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের ব্যাপারে ন্যাটো দেশগুলো কী করতে পারে, এমন প্রশ্নে স্টলটেনবার্গ বলেন, নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্যতা নিয়ে একটি ‘আলোচনা চলমান’ আছে।

স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘চীন অনেক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। এর মধ্যে মাইক্রো-ইলেকট্রনিক্সের মতো প্রযুক্তিও আছে, যা দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে।

তিনি বলেন, ‘চীন যদি তাদের এই আচরণ না পাল্টায়, আমাদের কিছু অর্থনৈতিক পদক্ষেপ বিবেচনা করতে হবে।’

বেইজিং ইতোমধ্যেই কিছু নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে।

গত মাসে চীন এবং হংকং-ভিত্তিক ২০টি প্রতিষ্ঠানকে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র বিক্রি করছে না দাবি করে চীন মস্কোর সাথে তার বাণিজ্য সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে এবং আইন-কানুন মেনেই সুকৌশলে ডুয়াল-ইউজ (দ্বিমুখী ব্যবহারযোগ্য) ব্যবস্থায় পণ্য রফতানি করছে।’

এদিকে ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া যাচ্ছেন, মঙ্গলবার ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এটা নিশ্চিত করার পরই ওয়াশিংটন সফরে যান স্টলটেনবার্গ।

গত মাসে চীন সফরে গিয়েছিলেন পুতিন।

এর আগে, ২০২২ সালে ইউক্রেনের সাথে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া বিশ্ব মঞ্চে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে থাকে।

ভ্লাদিমির পুতিন বারবার বলে আসছেন, পাশ্চাত্যের ক্ষমতার ভারসাম্য সরে যাচ্ছে। আর তিনি সমমনা নেতাদের সাথে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করে যাচ্ছেন।

স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘রাশিয়া এখন আরো বেশি বেশি কর্তৃত্ববাদী শাসকদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

উদাহরণ হিসেবে ইরান, চীন এবং উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া গোলা-বারুদ পাঠাচ্ছে। বিনিময়ে দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিচ্ছে রাশিয়া।

তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধের আগ্রাসন চালাতে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে।’

চীন-রাশিয়া সম্পর্ক
দু’বছর আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চীন এবং রাশিয়া ‘আনলিমিটেড পার্টনারশিপ’-এর ঘোষণা দেয়। ওই মাসেই ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া।

এখনো সেই যুদ্ধে জড়িয়ে আছে রাশিয়া। দেশটির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত।

পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞার পর অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চীনের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে রাশিয়াকে।

তবে রাশিয়ায় চীনের সামরিক-বেসামরিক উভয় কাজে ব্যবহার করা যায় এমন দ্রব্য এবং অস্ত্র রফতানির সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ।

চীনের কাস্টমস্ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। এতে সময়ের অনেক আগেই পূরণ হয়েছে দেশ দু’টির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা। তাতে প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধের সময় রাশিয়ায় চীনের গাড়ি রফতানি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। সাড়ে নয় লাখ গাড়ি রফতানি হয়েছে গত বছর। আগের বছরের তুলনায় ৪৮১ শতাংশ বেড়েছে এই খাতের বাণিজ্য।

মে মাসে চীন সফরের সময় এক সংবাদ সম্মেলন পুতিন বলেন, ‘চীনা গাড়ি নির্মাতাদের আমাদের দেশের বাজারে স্বাগত জানাই।’

অন্যদিকে, রাশিয়া স্বল্প মূল্যে চীনের কাছে খনিজ জ্বালানি বিক্রি করছে। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রম এখন চীনের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী।

সিনহুয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, গত পাঁচ বছরে দু’দেশের বাণিজ্যের আকার দ্বিগুণ হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, দু’দেশের সম্পর্কটা মূলত বাজার চাহিদার ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে।

তাদের মতে, এই সুযোগটা যতটা না চীনের সহায়তার কারণে হচ্ছে, তারচেয়ে বেশি হচ্ছে পাশ্চাত্যের চাপের কারণে। এর ফলে, দু’দিকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আরো বেশি অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতার প্রণোদনা পাবে।

পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়ে পড়ার পর রাশিয়ার অর্থনীতি প্রাচ্যমুখী হয়েছে।

রুশ কূটনীতির খাতায় বন্ধু তালিকায় পাশ্চাত্যের চেয়ে পূর্বদিকের দেশের সংখ্যাই বেশি।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সকলেই ন্যায় বিচার পাবেন : মোবারক হোসেন জয়সাওয়ালের রেকর্ড ছক্কার দিনে পার্থে দাপট ভারতের তারেক রহমান ও কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুমকি ‘বাবা বলে ডাকতে পারি না’ বিএনপি নির্বাচন চায় দেশকে রক্ষার জন্য : মির্জা ফখরুল জাতীয় ঐক্যের মধ্যদিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : গোলাম পরওয়ার সাঙ্গু নদীতে নৌকা বাইচের মাধ্যমে শুরু হলো বান্দরবানে সপ্তাহব্যাপী ক্রীড়া মেলা ফার্মগেটে ৭ তলা ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের ডনেটস্ক অঞ্চলের গ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া পর্ণো তারকাকে অর্থ দেয়ার মামলা খারিজের আবেদনের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প দোহারে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর নামে ছাত্রলীগ নেতার মামলা

সকল