২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী? কারা দেয় অর্থ?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী? কারা দেয় অর্থ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা - সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকি, চীনের মন্তব্যসহ নানাভাবে জাতিসংঘের এই সংস্থা নতুন করে বিশ্ববাসীর সামনে পরিচিত হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হল জাতিসংঘের এক বিশেষ সংস্থা। এটি ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই তারিখটি বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষদের প্রথম বৈঠকে সংস্থাটির প্রশাসনিক সংস্থা, ২৪ জুলাই ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এই সংস্থা আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের জন্য কাজ করে থাকে। এটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন দলের অংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংবিধান সংস্থাটির গভর্নিং বা প্রশাসনিক কাঠামো এবং নীতি স্থাপন করে।

এর প্রধান উদ্দেশ্যটি ‘সর্বোচ্চ সম্ভাব্য সকল মানুষের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা’। এটির অবস্থান সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে। এটির বিশ্বব্যাপী ছয়টি আধা-স্বায়ত্তশাসিত আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ১৬০টি ভূমি অফিসের সাথে সদর দফতর রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিস্তৃত কাজের মধ্যে রয়েছে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার পক্ষে পরামর্শ দেয়া। জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিরীক্ষণ করা, স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করা এবং মানবস্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্যের প্রচার করা।

এটি দেশগুলিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য মান এবং নির্দেশিকা নির্ধারণ করে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য জরিপের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে উপাত্ত প্রধান প্রকাশনা বিশ্ব স্বাস্থ্য প্রতিবেদন বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য বিষয়গুলির বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন এবং সমস্ত জাতির স্বাস্থ্যের পরিসংখ্যান সরবরাহ করে। এটি স্বাস্থ্য সম্মেলনে শীর্ষ সম্মেলন এবং আলোচনার ফোরাম হিসাবেও কাজ করে।

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির মহাসচিব টেড্রোনস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেন, ‘মার্কিন সরকার ও মানুষের সহায়তায় ডব্লিউএইচও বিশ্বের বহু গরিব ও সংবেদনশীল মানুষের স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করতে পারবে।’

২০১৯ সালে মোট অনুদানের পরিমাণ ছিল ৫.৬২ বিলিয়ন ডলার। সংস্থাটির মূল আর্থিক জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র দেয় ৫৫৩.১ মিলিয়ন ডলার, যা মোট আয়ের ১৪.৬৭ শতাংশ। এরপরই বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন দেয় ৯.৭৬ শতাংশ অর্থাৎ ৩৬৭.৭ মিলিয়ন ডলার।

গাবি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স দেয় ৮.৩৯ শতাংশ। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থান রয়েছে যথাক্রমে ব্রিটেন ৭.৭৯ শতাংশ, ১১ মিলিয়ন এবং জার্মানি ৫.৬৮ শতাংশ, ১৫ মিলিয়ন।

ট্রাম্প ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে চীনের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা এবং সত্য ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এককভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিলে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এ তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ৪০ কোটি ডলার। যা ছিল সংস্থাটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ।

এছাড়া করোনা মোকাবেলায় সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলার চেয়েছিল। ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের অভিযোগ, মানুষে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ রোগের বিষয়ে সতর্ক করতে বিলম্ব করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের পক্ষ থেকে যেখান থেকে ভাইরাসের উৎপত্তি সেখানে বিশেষজ্ঞ পাঠানো হয়নি এবং নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।

তাদের আরও অভিযোগ, ডব্লিউএইচও ত্বড়িত সিদ্ধান্ত না নিয়ে চীনের সাথে আমাদের সীমানা বন্ধ করার আগের দিনই জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছিল। গত সপ্তাহে ট্রাম্প ডব্লিউএইচওকে চীনঘেঁষা তকমা দিয়েছিলেন।
সূত্র: নিউজ গার্ডিয়ান


আরো সংবাদ



premium cement