২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বজ্রপাতে কী করবেন

-


দিন দিন বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। কয়েক দিন আগে এক দিনে বজ্রপাতে ৯ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৫ জন। বেশ মর্মান্তিক ঘটনা। বজ্রপাতে মৃত্যুহার কমাতে সচেতনতার বিকল্প নেই।
আমাদের দেশে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত কালবৈশাখী হয়ে থাকে। এ সময়ই বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তবে এর আগে পরেও হতে পারে। তাই এ সময়টা চলতে হয়ে সাবধানতার সাথে। দুরের পথে বের হলে জেনে নিতে হবে আকাশের খবর মানে আবহাওয়ার খবর। মেঘের আনাগোনা দেখেও ধারণা করতে পারেন বজ্রপাত হতে পারে কিনা। পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর আকাশে মেঘের গর্জন শুরু হলে সাধারণত বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। পূর্ব, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে বজ্রপাতের সম্ভাবনা কম থাকে। মার্চ থেকে এপ্রিলে কালবৈশাখী দুপুরের পর হয়ে থাকে। এরপর মে মাসের শেষ পর্যন্ত সকালেও হতে পারে।
কালবৈশাখী শুরু হলে সাথে সাথে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে। নিরাপদ আশ্রয় বলতে পাকা ঘরকে বোঝানো হয়। অর্ধ শেড, পুরনো-জীর্ণ বাড়িতে আশ্রয় না নেয়াই ভালো। বাড়িতে অবস্থান করলে জানালা, সিঙ্ক, টয়লেট, বাথটাব, ইলেকট্রনিক্স থেকে দূরে থাকা ভালো। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে বিদ্যুতের সব সুইচ বন্ধ রাখুন। অনেক সময় এসবে বজ্রপাত হয়ে তা থেকে বিদ্যুৎ লাফিয়ে আপনার শরীরে আসতে পারে। গাছের নিচে, টেলিফোনের খুঁটির পাশে বা বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের খাম্বা বা উঁচু কোনো দালানের পাশে দাঁড়ানো মোটেই নিরাপদ নয়। টেলিফোনের লাইনে বজ্রপাত হলে সে সময় আপনি কথা বলতে থাকলে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এ সময় ফোনে কথা না বলাই ভালো। তবে মোবাইলে কথা বললে সমস্যা নেই। বজ্রপাতের সময় গোসল না করাই ভালো। এ সময় গাড়িতে থাকলে সমস্যা নেই। তবে গাড়ি থামিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে থাকুন।

অনেক সময় আছে যখন নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে না তখন নিজেকে যতটা সম্ভব গুটিয়ে নিন। মাথার চুল যদি একদিকে লম্বা হয়ে থাকে তাহলে বজ্রপাত পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ বজ্রপাত সব সময় উঁচুতে আঘাত করে। আপনার পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে বসুন। দু’পা যতটা সম্ভব কাছাকাছি আনুন। দু’হাত রাখুন হাঁটুর ওপর। এবার মাথা নিচু করুন যতটা সম্ভব। তবে কোনোভাবেই হাত বা হাঁটু মাটিতে লাগাবেন না। এটা করলে আপনি সহজেই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়বেন। অনেকে মনে করেন বজ্রপাতের সময় শুয়ে পড়তে হয়। এটা খুবই মারাত্মক ভুল ধারণা। এতে বজ্রপাতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। যদি নদীতে নৌকায় থাকেন তাহলে একই ভাবে নিজেকে গুটিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে ছইয়ের নিচে অবস্থান নিতে পারেন। বনের মধ্যে থাকলে বড় গাছের নিচে না অবস্থান করে ছোট গাছপালার নিচে নিজের গুটিয়ে রাখুন।
কেউ বজ্রপাতে আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে যতটা সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে। বজ্রপাতে আক্রান্তে পর তাকে ধরলে কোনো সমস্যা নেই কারণ এ সময় তার শরীরে বিদ্যুৎ থাকে না। যদি শ্বাস না নেয় তাহলে চিৎ করে শোয়ানোর পর মুখ হা করান। এবার আপনি বুক ফুলিয়ে বাতাস নিন। তার মুখের সাথে মুখ লাগান। তার না চাপ দিয়ে বন্ধ করে আপনি বাতাস দিন। যদি নাড়ির স্পন্দন না থাকে তাহলে বুকে চাপ দিতে থাকুন ও মুখে মুখে লাগিয়ে বাতাস দিন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement