২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১, ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

জিহ্বার ক্যান্সার

-

ক্যান্সার তখনই সৃষ্টি হয় যখন শরীরের কোষ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিতভাবে হতে থাকে অস্বাভাবিকরূপে। জিহ্বার ক্যান্সারও একইভাবে হয়ে থাকে। মানবদেহে জিহ্বার দুটি অংশ রয়েছে। একটি হলো ওরাল টাং বা জিহ্বা যা আমরা সচরাচর সহজেই দেখতে পাই। জিহ্বার এ অংশ হলো জিহ্বার সামনের তিন ভাগের দুই ভাগ। জিহ্বার অন্য অংশকে জিহ্বার বেস বলা হয় অর্থাৎ জিহ্বার পিছনের তিন ভাগের এক ভাগ। জিহ্বার ক্যান্সার সাধারণত মুখ এবং ওরোফেরিংস (মুখের পিছনে গলার অংশ)কে আক্রান্ত করে থাকে। জিহ্বার পিছনের এই অংশে ক্যান্সার হলে তাকে ওরোফেরিনজিয়াল ক্যান্সার বলা হয়। জিহ্বায় যে ধরনের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তা হলো স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা। স্কোয়ামাস সেল মুখের লাইনিংকে আবৃত করে রাখে। স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা বলা হয় এই কারণেই যে, ক্যান্সারের শুরু হয় এ সেল বা কোষ থেকে।
জিহ্বার ক্যান্সারের কারণ: (ক) ধূমপান (খ) তামাক পাতা সেবন (গ) অতিরিক্ত এলকোহল সেবনের কারণে।
জিহ্বার ক্যান্সার কাদের হতে পারে?: (ক) পুরুষদের বেশি হয়ে থাকে (খ) যাদের মুখের স্বাস্থ্য খুবই খারাপ থাকে (গ) ৪০ বছরের উপরে বয়স হলে (ঘ) ধূমপান বা এলকোহল সেবনের কারণে মুখের মিউকাস মেমব্রেনের ক্রমাগত প্রদাহের কারণে (ঙ) যাদের ক্রমাগত মুখের আলসার হয়ে থাকে (চ) জেনেটিক কারণেও হতে পারে।
জিহ্বার ক্যান্সারের লক্ষণগুলো: * যদি জিহ্বায় দীর্ঘদিন যাবৎ সাদা অথবা লাল প্যাঁচ বা দাগের মতো থাকে যা কখনোই ভালো হচ্ছে না। * গলায় ক্ষত সহজে ভালো হচ্ছে না। * জিহ্বায় কোনো ক্ষতচিহ্ন যা কোনোভাবেই ভালো হচ্ছে না। * জিহ্বার ফোলাভাবের সাথে ব্যথা হলে। * জিহ্বায় কোনো গোটা বা পিণ্ড দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যমান থাকা। * কোনো কিছু গিলতে অসুবিধা হওয়া। * জিহ্বা নড়াতে অসুবিধা বা অবশভাব। * গলার স্বরের পরিবর্তন জিহ্বার নড়াচড়ার সমস্যার কারণে। * কথা বলার সময় বা বিচানোর সময় ব্যথা হলে। * কোনো কারণ ছাড়া জিহ্বা থেকে রক্তপাত হলে। * মুখের অবশভাব কোনোভাবেই নিরাময় না হওয়া। * খুব কম ক্ষেত্রে কানে ব্যথা। উপরের লক্ষণগুলো কারো জিহ্বায় থাকলেই যে, জিহ্বায় ক্যান্সার হয়েছে তা বলা ঠিক হবে না। তবে বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় এনে রোগ নির্ণয় করতে হবে।
জিহ্বার ক্যান্সারের চিকিৎসা: জিহ্বার ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যান্সারের আকার এবং ঘাড়ের লিম্ফনোড বা লসিকা গ্রন্থিতে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে কি না তার ওপর। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়াকে ডাক্তারী ভাষায় মেটাসটেসিস বলা হয়।
চিকিৎসার ধরন: (ক) সার্জারি (খ) রেডিও থেরাপি ও (গ) কেমোথেরাপি।
যদি জিহ্বার ক্যান্সার অনেক বড় হয় তবে সে ক্ষেত্রে জিহ্বা অপারেশন করে ফেলে দিতে হবে, যা গ্লসেকটমী নামে পরিচিত। এ ক্ষেত্রে রেডিও থেরাপি এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সারকে সঙ্কুচিত করার প্রচেষ্টা চালানো হয়। মাঝে মধ্যে এই প্রক্রিয়ায় গ্লসেকটমি না করলেও চিকিৎসা চালানো সম্ভব। ছোট ক্যান্সারের জন্য প্রথমেই সার্জারির প্রয়োজন। বড় ধরনের টিউমারের জন্য সার্জারি এবং রেডিও থেরাপির কম্বিনেশন চিকিৎসা প্রয়োজন।
তবে জিহ্বায় কিছু আলসার বা ঘাঁ পরিলক্ষিত হয় যা দেখতে অনেক সময় ক্যান্সারের মতো মনে হয়। তাই জিহ্বার আলসারের ধরন এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে সরাসরি বায়োপসি না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে জিহ্বায় যেকোনো ধরনের রোগের ক্ষেত্রে সবার আরো বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
ইমপ্রেস ডেন্টাল কেয়ার
মিরপুর-১৪ ব্যাটালিয়ন বউবাজার, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল : ফৎ.ভধৎঁয়ঁ@মসধরষ.পড়স


আরো সংবাদ



premium cement