২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১, ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

শিশুর ডায়রিয়া ও কিডনি সমস্যা

-

শিশুর ডায়রিয়া বলতে আমরা বুঝি, যদি শিশু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনবার বা তার চেয়ে বেশি পাতলা পায়খানা করে। অন্য দিকে পায়খানার সাথে যদি রক্ত এবং আম থাকে, তবে তাকে আমাশয় বলা হয়। সাধারণত দুই বছরের নিচের শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সময়মতো এবং সঠিকভাবে ডায়রিয়ার চিকিৎসা না করলে শিশুর জীবনে মারাত্মক বিপদ দেখা দিতে পারে; তার মধ্যে পুষ্টিহীনতা এবং পানিস্বল্পতার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শিশু মৃত্যুর ২৫ শতাংশ ঘটে ডায়রিয়ার কারণে। ডায়রিয়া হলে দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বেরিয়ে যাওয়ার ফলে শরীরে পানিস্বল্পতার সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় সুস্থ খাদ্যনালী থেকে রক্তের মধ্যে পানি ও লবণ হজম হয়ে মিশে যায় এবং শরীরে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক অবস্থায় রাখে। কিন্তু ডায়রিয়া হলে বেশি পরিমাণ পানি ও লবণ রক্তের পরিবর্তে পায়খানার সাথে বেরিয়ে যায়। পাতলা পায়খানার সাথে সাথে বমি হলে শরীরে পানিস্বল্পতার পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। এর ফলে শরীরে রক্তের পরিমাণ এবং কিডনিতে রক্ত সঞ্চালন বা প্রবাহের পরিমাণ মারাত্মকভাবে কমে গিয়ে দু-তিন দিনের ভেতর প্রস্রাবের পরিমাণ কমতে কমতে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে কিডনির কার্যকারিতা আংশিক বা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। রক্তে স্ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ পরীক্ষা করে কিডনির কার্যকারিতা সম্বন্ধে ধারণা করা যায়। এ ধরনের অবস্থাকে অ্যাকিউট রেনাল ফেইলিউর বলা হয়। অতি তাড়াতাড়ি এ ধরনের শিশুদের চিকিৎসা না করলে অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো সম্ভব হয় না। মা-বাবার অসচেতনতার জন্য দেরি করে হাসপাতালে আসার ফলে শুধু পানিস্বল্পতার জন্য শিরায় স্যালাইন দিয়েও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। তখন একমাত্র ডায়ালাইসিস করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প রাস্তা থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সঠিকভাবে ডায়ালাইসিস করা গেলেও বেশির ভাগ শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তাই বাবা-মায়ের বিশেষ করে মায়েদের উচিত, শিশুর বমি অথবা পাতলা পায়খানা হলে, শিশুর প্রস্রাবের দিকে নজর দেয়া। ৮ ঘণ্টার বেশি প্রস্রাব বন্ধ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া এবং ১২ ঘণ্টার বেশি প্রস্রাব না হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, যেখানে শিশুদের ডায়ালাইসিসের বন্দোবস্ত আছে।
আমাদের দেশে অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা, বমি, শিশুদের অ্যাকিউট রেনাল ফেইলিউরের প্রধান কারণ। এর সাথে মা-বাবার দারিদ্র্য, অজ্ঞতা এবং সচেতনতার অভাব এ অবস্থাকে আরো জটিল করে তোলে। তাই ডায়রিয়া শুরু হলেই শিশুকে যথেষ্ট পরিমাণে ঘনঘন খাবার স্যালাইন ও তরল খাদ্য খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুর দেহের পানিস্বল্পতা পূরণে বিভিন্ন ধরনের তরল খাদ্য উপযোগী। যথাÑ মায়ের দুধ, লবণ-গুড়ের শরবত, খাবার স্যালাইন এবং নিরাপদ খাবার পানি। শিশুর ডায়রিয়ার প্রকোপ বহুলাংশে কমে যাবে অথবা হবে না যদি ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানো হয়, ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার পর শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দেয়া হয়, নিরাপদ উৎসের পানি ব্যবহার করা হয়, স্যানিটারি পায়খানা ব্যবহার করা হয়, খাবার গ্রহণের আগে এবং মলত্যাগ করার পর সাবান অথবা ছাই দিয়ে হাত ধোয়া হয়, খাবার ও পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রাখা হয় এবং তা ঢেকে রাখা হয়, শিশুকে বাসি খাবার না খাওয়ানো হয় এবং সময়মতো শিশুকে হামের টিকা দেয়া হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আরো ৫০ ভারতীয় বিমানে বোমাতঙ্ক পাকিস্তান বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে অবনমন শাহিনের জেতেনি আর্সেনাল-লিভারপুল, হেরেছে ম্যানইউ ৪ পণবন্দীর মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ২ দিনের মিনি যুদ্ধবিরতি! সিরিজ বাঁচাতে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ পাকিস্তানের নতুন অধিনায়ক রিজওয়ান, সাথে আছেন আগা সালমান ইউএস-বাংলার ফ্লাইটে মিলল ৭ কেজি স্বর্ণ কমলাপুরের ডিসপ্লে বোর্ডে ‘আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ’ স্ক্রল : ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ভাই গ্রেফতার সাবেক ডিএমপি কমিশনারকে বিমানবন্দরে আটকে দিলো পুলিশ নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

সকল