ত্বকের রোগ ছুলি

ছইদ বা ছুলি আমাদের দেশে একটি পরিচিত ত্বকের রোগ। সাধারণত জনসংখ্যার ৮-১০ শতাংশ এতে আক্তান্ত হয়ে থাকে, যুব বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে এবং নারীদের চেয়ে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া এর জন্য অনুকূল পরিবেশ। হাল্কা চুলকানি এবং দেখতে খারাপ ছাড়া খুব একটা বেশি জটিলটা এ রোগে হয় না।
কি কারণে হয়
মেলাসেজিয়া নামে এক ধরনের ইস্ট বা ছত্রাক এর কারণ। মেলাসেজিয়া আবার কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। এরা ত্বকে কোনো প্রকারে অসুবিধা না করেই পরজীবী হিসেবে অবস্থান করে এবং ত্বক নিঃসৃত তেল ও মৃত ত্বকের কোষকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। কিন্তু গরম ও ঘর্মাক্ত ত্বকের কারণে এদের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটে, যার কারণে এরা রোগের সৃষ্টি করে।
কোথায় হয়
শরীরের বুক, পিঠ, গলা ও হাতে বেশি দেখা দিয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মুখেও দেখা দিতে পারে।
কেমন দেখতে
ছোপ ছোপ আকারে গোলাকার কিংবা একসাথে মিশে থাকতে পারে। রঙ অন্যান্য স্থানের চেয়ে হালকা বা খয়েরি বা গোলাপি হয়। অনেক সময় আঁশের মতো আবরণ থাকে। সাধারণত যাদের ত্বক ঘাঢ় বর্ণের তাদের ক্ষেত্রে হালকা ও ফর্সাদের গোলাপি বা খয়েরি রঙের হতে পারে। আক্রান্ত স্থানে হালকা চুলকানি অনুভূত হতে পারে।
চিকিৎসা
ক্স সেলেনিয়াম সালফাইড কিংবা ছত্রাকনাশক অন্যান্য ওষুধ, সাবান বা শ্যাম্পু বা ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করা;
ক্স মুখে ছত্রাকনাশক ওষুধ সেবন;
ক্স প্রপিওলিন গ্লাইকল বা সডিআম থায়ওসালফেত ব্যবহার।
গোলাপি বা খয়েরি ধরনের ছুলি চিকিৎসার দ্বারা পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব হলেও বিবর্ণ ধরনের ক্ষেত্রে অনেক সময় আশানুরূপ ফল নাও হতে পারে।
প্রতিরোধ
গরমে শরীরে ঘাম ও তেল নিঃসৃত হয়ে থাকে, যা মেলাসেজিয়ার বংশবিস্তারে অনুকূল। গোসল এবং সাবান ব্যবহারের মাধমে ঘাম ও তেল দূর করতে হবে।
চিকিৎসার মাধ্যমে এটি অনেক সময় দূর করা সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মনে রাখবেন, এ রোগ ছাড়াও ত্বকের আরো অনেক রোগে একই ধরনের রঙ পরিবর্তন হয়ে থাকে, কাজেই সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে সুস্থ জীবনযাপন করুন।