২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পোষা প্রাণীতে স্বাস্থ্যঝুঁকি

পোষা প্রাণীতে স্বাস্থ্যঝুঁকি -

অনেকেই পোষা প্রাণীর প্রতি আগ্রহ আছে। আমাদের দেশে একসময় এর হার কম হলেও এখন দিন দিন বাড়ছে। পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা কিন্তু আপনার বিপত্তির কারণ হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় তেমনটিই কিন্তু জানা গেছে।
কবুতরের প্রতি দেশের মানুষের টান যেন ঐতিহ্যগত। গ্রামের অনেক বাড়িতে এখনো কবুতব দেখা যায়। শুধু গ্রামে নয়, শহরেও কবুতরপ্রেমীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। ফুসফুসের একটি রোগ যার নাম ডিফিউজ প্যারেইকাইমাল লাঞ্চন ডিজিজ যা সংক্ষেপে ডিপিএলডি নামে পরিচিত। এ রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি শ্বাসকষ্ট ছাড়া কোনো কাজ করতে পারেন না। এ বুকের সিটি স্ক্যান করে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- এ রোগের চিকিৎসা নেই বললেই চলে। তাই কবুতর পোষা থেকে সাবধান। আপনি কবুতর না পুষলেও বাড়ির আশপাশে কেউ যদি পোষেণ আর সে কবুতর যদি আপনার বাসায় নিয়মিত আসে তাহলে কিন্তু আপনার ঝুঁকি বাড়বে।
পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির সাথে তাল মেলাতে গিয়ে কুকুর আমাদের বেডরুমে ঢুকেছে। এটি কিন্তু হতে পারে আপনার জন্য ক্ষতিকর। কুকুরের মলের সাথে গোলকৃমিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া মারাত্মক রোগ যেমন- হাইডাটিড সিস্ট বিভিন্ন অঙ্গকে যেমন- ফুসফুস, যকৃত, মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করতে পারে।
বিড়াল পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয়তা বেশ। কিন্তু গর্ভাবস্থায় বিড়াল বাসা থেকে ছাঁটাই করুন। টক্সোপ্লাজমোসিস নামক পরজীবীঘটিত রোগ গর্ভাবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত হলে গর্ভপাত হতে পারে। গর্ভস্থ সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। যক্ষ্মা উন্নত বিশ্বে নেই বললেই চলে। গেল বছর পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড যক্ষায় আক্রান্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করে। তাদের মধ্যে দু’জন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের সাথে জড়িত ছিলেন আর আক্রান্ত দু’জনের পোষা প্রাণী হিসেবে ছিল বিড়াল। তাই মনে করা হচ্ছে, পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল যক্ষ্মার ঝুঁকি বাড়ায়।
কুকুর, বিড়ালের সংস্পর্শে থাকলে আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েডে আক্রান্তের হার বাড়ে। পোষা এ প্রাণীর মল, লালা, আচড়ের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে রোগবালাই করতে পারে। তাই সাবধান। পোষা প্রাণী স্পর্শ করার পর অবশ্যই ভালো করে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।
পোষা প্রাণী বাড়িতে থাকলে অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্তের হার বাড়ে। অ্যাজমা অনিয়ন্ত্রণের জন্য কিন্তু এরাই দায়ী বলে মনে করেন গবেষকরা। তাই বাসায় শ্বাসকষ্টে কেউ থাকলে পোষা প্রাণী না থাকাই শ্রেয়।
পোষা প্রাণীর সংস্পর্শে এলে অবশ্যই ভালো করে হাত ধুতে হবে। বেডরুমে প্রাণীর প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। প্রাণীদের নিয়মিত টিকা দিতে হবে। প্রাণী অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা করাতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement