২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে করণীয়

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে করণীয় -

জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথার মূল কারণ এর প্রদাহ। বিশ্বব্যাপী আর্থ্রাইটিসের আক্রান্তের সংখ্যা অনেক। এদের কথা চিন্তা করে এ রোগ সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছরের মতো এবারও ১২ অক্টোবর বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস পালন করা হয়। আর্থ্রাইটিসকে বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। এদের মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। তাই এটি নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। সাধারণত নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। শরীরের ছোট ছোট জোড়া বলতে সাধারণত হাত ও পায়ের ছোট ছোট জোড়াকে বুঝায়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলো এ ধরনের একটি কারণ যেখানে জোড়া ব্যথার সাথে প্রদাহ হয়। আর এই রোগটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যার ফলে হাত ও পায়ের ছোট ছোট জোড়া এমনকি শরীরের অন্যান্য জোড়া আক্রান্ত হয়ে রোগীকে পঙ্গু করে দিতে পারে।

এ রোগের উপসর্গগুলি হলো-
জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা। ব্যথা সাধারষত আস্তে আস্তে বিস্তার লাভ করে। সাধারণত হাত ও পায়ের ছোট ছোট জোড়াগুলো বেশি আক্রান্ত হয়। প্রায়ই সমানভাবে দুই পার্শ্বের অর্থাৎ ডান ও বাম দিকের জোড়াগুলোতে ব্যথা হয়। বড় বড় জোড়া যেমন- কনুই, কাধ, হাঁটু ও গোড়ালিও আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় ঘাড়েও ব্যথা হতে পারে। এ রোগের ব্যথা কাজ করলে কমে কিন্তু বিশ্রাম নিলে বেড়ে যায় এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আস্তে আস্তে কমে আসে।
আক্রান্ত জোড়া ফুলে যায়।
সকালে ঘুম হতে জাগলে আক্রান্ত জোড়াগুলো শক্ত শক্ত মনে হয়। এই শক্তভাব এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে থাকে। নড়াচড়া করার পর এটা কিছুটা কমে যায়। ব্যথার সাথে রোগীর জ্বর হতে পারে। শরীরের ওজন কমে যেতে পারে। দুর্বলতা হতে পারে। রোগীর খুব অবসন্নতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময়-আক্রান্ত জোড়ার কাছাকাছি মাংস শুকিয়ে যেতে পারে।
রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। প্লীহা বড় হতে পারে। চোখ লাল হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
শ্বাসযন্ত্রের অসুবিধা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন এ রোগে ভুগলে শরীরের জোড়াগুলো তার নিজস্ব আকৃতি হারিয়ে ফেলতে পারে। ফলে রোগীর বিভিন্ন রকম অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসা-
চিকিৎসার শুরুতে রোগীকে রোগ সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। রোগের প্রকৃতি বুঝাতে হবে। অর্থাৎ জানাতে হবে যে রোগটি সম্পূর্ণভাবে হয়তো ভালো হবে না। তবে উপযুক্ত চিকিৎসা নিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং রোগের মারাত্মক ঝুঁকি যেমন-পঙ্গুত্ব থেকে নিজকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
ব্যথা কমানোর জন্য বেদনা নাশক ওষুধ হিসাবে ইনডোমেথাসিন, নেপ্রক্সেন, ডাইক্লোফেন বা সিলিককসিড-জাতীয় ওষুধ দেয়া যেতে পারে।
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে রোগীকে ডিএমআরডি জাতীয় ওষুধ দিতে হবে যাতে রোগ বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করতে না পারে।
প্রয়োজন হলে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দেয়া যেতে পারে।
অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম এ রোগের জন্য খুবই জরুরি। ওষুধের পাশাপাশি কিছু ফিজিক্যাল থেরাপি যেমন ওয়াক্সবাথ বা মোমথেরাপি, সাউন্ড থেরাপি, হাইড্রোথেরাপি এ রোগের জন্য খুবই উপকারী। এগুলো প্রয়োজন মতো করলে রোগী বেদনানাশক ওষুধ অনেক কমিয়ে দিতে পারে ফলে ওই অষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পেতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় এ রোগ হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা করাতে হবে। রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য রোগীকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে সে পঙ্গুত্ব হতে রেহাই পেতে পারে। সর্বোপরি রোগীকে পুনর্বাসন চিকিৎসার মাধ্যমে সমাজের একজন সক্রিয় মানুষ হিসাবে দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করতে হবে।
লেখক : বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন, বিএসএমএমইউ (পিজি হাসপাতাল)


আরো সংবাদ



premium cement
দারুল উলূম দেওবন্দের শাইখুল হাদিস আল্লামা কমরউদ্দিনের ইন্তেকাল নতুন মামলায় সালমান-ইনু-আনিসুলসহ গ্রেফতার ৮ নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে ২ পারের রোহিঙ্গাদের জাবালিয়ায় ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তাকে গুলি হামাসের বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বড় হুমকি রাশিয়া : মেলোনি মুক্তিযোদ্ধার মানহানির ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের নিন্দা গাজীপুরে বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও তার স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে মামলা আশুগঞ্জে গ্যারেজ মালিককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই

সকল