০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

তোতলাদের নিয়ে ঠাট্টা নয়

তোতলাদের নিয়ে ঠাট্টা নয় -

মা-বাবা তোতলা শিশুকে নিয়ে খুব হতাশ হয়ে যান। সমাজের অন্যদের থেকে দূরে রাখেন। এতে সমস্যা আরো বাড়ে। এমনটা করবেন না। শিশুকে অন্যদের সাথে মিশতে দিন। কেউ উত্ত্যক্ত করলে ব্যবস্থা নিন। শিশুকে সাহস দিন। তার মনোবল চাঙ্গা করুন। দেখবেন সে আত্মবিশ্বাসী হলে সমস্যা কমে যাবে

তোতলামি অনেক পুরনো একটি সমস্যা। এর ইতিহাস অনেক আগের। বনি ইসরাইলদের রাসূল মুসা আ: ছিলেন তোতলা। কুরআন মাজিদে আল্লাহ সে বর্ণনা দিয়েছেন। বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের নাম জানেন না এমন কেউ নেই। স্কুলে বন্ধুরা তাকে উত্ত্যক্ত করত তোতলানোর জন্য। অ্যারিস্টটলও কিন্তু তোতলা ছিলেন। শুধু তারাই নন বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ তোতলামির সমস্যায় ভুগছেন। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।
তোতলামির কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু বিষয়কে এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। বংশগত কারণ আসে প্রথমে। বাবা-মা, ভাই-বোন, মামা, চাচা এমন কারো থাকলে এ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। গবেষকরা বলেছেন তিন গুণ বেশি। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বংশগতির ধারক জিনের মিউটেশন বা রূপান্তরের কারণেও হতে পারে তোতলামি।
অনেক দিন ধরে গবেষণা করেও মস্তিষ্কের কোনো কারণে এ সমস্যা হয় কিনা তা জানাতে পারেননি গবেষকরা। সম্প্রতি বলা হচ্ছে মস্তিষ্কের যে অংশ কথা বলার জন্য কাজ করে তোতলা ব্যক্তিদের সে অংশটি কম কাজ করে। মানসিক চাপ, ভীতি তোতলামির জন্য সরাসরি দায়ী না হলেও এ সমস্যাকে বেশ বাড়িয়ে দেয়।
তোতলামির এ সমস্যা শিশু বয়সে বেশি দেখা দেয়। কিন্তু ভালো হলো তা আবার আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। প্রায় ৮০ শতাংশ তোতলা শিশু ৮-১০ বছরের মধ্যে পুরোপুরি সুস্থতা লাভ করে। বাকি ২০ শতাংশ আজীবন তোতলাতে পারে।
এদের মধ্যে আবার কারো সমস্যা খুব বেশি থাকে কেউ আবার অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই কথা বলে। এদের তোতলামি ধরা পড়ে না সহজেই।
তোতলামি হলে সবচেয়ে যে সমস্যা হয় তা হলো কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা কঠিন হয়। এদের কথা বলতে বেশি সময় লাগে। মনের ভাব প্রকাশ করা কষ্টকর হয়। অনেকে এতে বিরক্ত হন। ফলে তোতলানো ব্যক্তি দমে যান। বিষণ্নতায় ভোগেন। সব সময় মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। কর্মক্ষেত্রে এরা সুবিধা করতে পারেন না বলে হতাশ হয়ে পড়েন।
মা-বাবা তোতলা শিশুকে নিয়ে খুব হতাশ হয়ে যান। সমাজের অন্যদের থেকে দূরে রাখেন। এতে সমস্যা আরো বাড়ে। এমনটা করবেন না। শিশুকে অন্যদের সাথে মিশতে দিন। কেউ উত্ত্যক্ত করলে ব্যবস্থা নিন। শিশুকে সাহস দিন। তার মনোবল চাঙ্গা করুন। দেখবেন সে আত্মবিশ্বাসী হলে সমস্যা কমে যাবে।
তোতলামি দূর করার চিকিৎসা নেই। তবে কিছু ব্যায়াম বেশ ভালো কাজ করে। স্পিচ থেরাপি ভালো কাজ করে। এভাবে তোতলামি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে।
অনেকে মনে করেন তোতলামি পাপের ফসল। এটা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা। এমন হলে কোনো নবীকে আল্লাহ কেন তোতলা করে সৃষ্টি করবেন।
অনেকে শিশুর চিকিৎসার জন্য মুখের মধ্যে পয়সা রাখেন। এটাও কুসংস্কার। কোনো গবেষণায় এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি। উল্টো শিশু পয়সা গিলে ফেললে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারাও যেতে পারে। তাই সাবধান।


আরো সংবাদ



premium cement
সাভারে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদনসহ আমু-কামরুলকে ১৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেশের ৬৯ কারাগারের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ : কারা মহাপরিদর্শক আমরা হিন্দু-মুসলমান একসাথে লড়াই করে দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেবো : রিজভী আজমির শরিফ : খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহের ইতিহাস জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও আমেরিকার বাকবিতণ্ডা ‘শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে’ পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ১২ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর দেনার দায়ে শক্ত অবস্থান হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র? বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে : প্রধান উপদেষ্টা নতুন মামলায় আনিসুল-ইনু-রাশেদ-পলকসহ গ্রেফতার ৯

সকল