০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`

শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে

শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে -

শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে যত দ্রুত শনাক্ত করা যায় ততো ভালো। আমাদের গলার ভিতর খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী পাশাপাশি থাকে। যখন আমরা খাবার খাই, তখন স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই আমাদের শ্বাসনালীর উপরের অংশ ঢাকা পড়ে যায়। এবার খাওয়ার সময় উত্তেজিত হয়ে পড়লে, কথা বললে বা তাড়াহুড়ো করে না চিবিয়ে গিলতে গেলে সেই খাবারের কিছু অংশ শ্বাসনালীতে ঢুকে যায়। তখনই ‘বিষম’ বা প্রচলতি কথায় ‘সটকা’ লাগে। শ্বাসনালীতে খাবার আটকে গেলে এবং যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আবার মাছের কাঁটা বা অন্য কোনো ছোট খাবার পুরো গিলে নিলে তা আটকে যায় খাদ্যনালীতেই। গলার মাংস খুব নরম হয় বলে মাছের কাঁটা ফুটে গিয়ে খচখচ করতে থাকে। আবার ধরুন বাচ্চা মার্বেল গিলে ফেললো বা আস্ট লিচু একবারে গিলে নিলো; সে ক্ষেত্রেও খাদ্যনালীতে খাবার মাঝখানে আটকে যায়। ক্ষতিগ্রস্ট হতে পারে খাদ্যনালীও। লক্ষণ শিশু নিজেই যখন বলে যে কিছু একটা আটকে গেছে, হঠাৎ কাশি শুরু হলে, শিশু কিছু নিয়ে খেলছিল দেখার পরে যদি বিশম খেতে শুরু করে, মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা বের হতে পারে, শিশু কাঁদবে, ওর কাঁদার ধরন দেখে বুঝবেন যে ওর কাঁদতেও অসুবিধা হচ্ছে। তবে, ভালো খবর যে শিশু কাঁদছে মানে ও শ্বাস নিতে পারছে। অস্ট্রস্টিতে কাঁদছে। শিশু হঠাৎ বিশম খেলে বুঝবেন ও কোনো কিছু নিয়ে খেলছিল তার অংশ মুখে নিয়ে গিলে ফেলেছে, শিশু একটু বড় হলে সে নিজেই গলার দিকে দেখিয়ে তার অস্বস্তির কথা জানাবে। গুরুত্ব বুঝে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিন। শিশুর মুখ থেকে বেশি পরিমাণে লালাও বেরোতে পারে এ সময়। একদম শিশু বা নবজাতক মায়ের বুকের দুধ খেতে গিয়ে তার গলাতেও আটকাতে পারে। শিশু নতুন নতুন সলিড খাবার খাওয়া শুরু করলে, মাঝেমধ্যে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুদের একটা অদ্ভুত প্রবণতা থাকে, যা পায় তাই কুড়িয়ে মুখে দেয়া। লিচু, বেদানা, বড়ই, চীনাবাদাম জাতীয় ছোট্ট আকারের খাবার ইত্যাদি। এবার বাবা-মায়ের ক্ষণিকের অসাবধানতায় শিশু যদি এগুলোর কোনোটা গিলে ফেলে, সেটা তার গলায় আটকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। খেতে খেতে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে গেলে বা হাসতে গেলে বা হঠাৎ হাঁচি বা কাশি পেলেও শিশুর গলায় খাবার আটকে যেতে পারে। ফার্স্টএইড - শিশুর মুখ খুলে জিনিসিটি দেখা গেলে সাবধানতার সঙ্গে বের করার চেষ্টা করুন। - তবে দেখা না গেলে খোঁচাখুঁচি করবেন না, এতে আটকে যাওয়া জিনিসটি আরও ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। - শিশু যদি কাশতে থাকে তাকে কাশতে দিন, কাশির সঙ্গে আটকে যাওয়া জিনিসটি বেরিয়ে আসতে পারে। - যদি শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে পিঠ চাপড়ে দিন। শিশুর বয়স ২-৩ বছর বা তার কম হলে - চেয়ারে বসে শিশুকে কোলের ওপর আড়াআড়িভাবে উপুড় করে শুইয়ে দিন। শিশুকে উল্টে বাম হাতের ওপর শোয়ান। এতে পিঠের দিকটা একটু উঁচু হয়ে থাকবে এবং মুখের দিকটা নিচে। এবার ডান হাতের তালু দিয়ে শিশুর পিঠের উপরের অংশে কাঁধের কাছে আস্তে আস্তে চাপড় দিন। এতে মুখ দিয়ে গলায় আটকে যাওয়া খাবার বেরিয়ে আসবে। - শিশুকে সোজা করে অর্থাৎ চিত করে শুইয়ে দিন। তার বুকের মাঝখান থেকে মালিশ করুন নিচ থেকে উপর দিকে। অর্থাৎ মালিশের পদ্ধতি হবে বুক থেকে মুখের দিকে। এর ফলে, শিশুর উপরের অংশে একটা চাপ সৃষ্টি হবে। এটা করার পরেই আগের পদ্ধতিতে শিশুকে হাতের ওপর উল্টে নিয়ে পিঠে চাপড় দিন। শিশুর পায়ু পথ দিয়ে খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসতে পারে। - একেবারে ছোট শিশুর ওপর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন। ৩-৪ বার চাপড় দিলেও যদি খাবার না আসে বা শিশু না কাঁদে; ডাক্তারের কাছে যান সঙ্গে সঙ্গে।
বয়স বেশি হলে - শিশুর পেছনে হাঁটু মুড়ে বা সোজা হয়ে দাঁড়ান, শিশুর বগলের নিচ দিয়ে দুই হাত ঢুকিয়ে, জাপটে ধরার ভঙিতে শিশুর পেটের উপরের অংশ বরাবর আপনার হাত রাখুন। এরপর এক হাত মুষ্টিবদ্ধ করে, শিশুর বুকের সামনে চওড়া হাড়ের নিচে, যেখানে দুই পাশের পাঁজরের শেষের হাড়টি মিলিত হয়েছে সে জায়গায় রাখুন। এবার অন্য হাত দিয়ে এই হাতটির কবজি চেপে ধরুন, দুই হাত দিয়ে উপর এবং ভেতর দিক বরাবর শিশুর পেটে জোরে চাপ দিন। পর পর পাঁচবার চাপ দিন। - এতে যদি কাজ না হয় কিংবা শিশুর যদি জ্ঞান না থাকে তবে কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকুন। - মুখ থেকে মুখে বা নাকে শ্বাস দিন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। - যদি গলায় মাছের কাঁটা আটকে যায়; সে ক্ষেত্রে শুকনো ভাত, মুড়ি বা চটকানো পাকা কলা একটু গিলে ফেলতে বলুন। কাঁটা নেমে যাবে। - হাল্কা গরম পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে শিশুকে গিলতে বলুন। এতে কাঁটা নরম হয়ে নেমে যায়। - শিশু মার্বেল, কয়েন জাতীয় কিছু গিলে ফেললে ওর পিঠে জোরে জোরে চাপড় দিন। এতে কাশি উঠে গলায় আটকে থাকা জিনিস বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে? - প্রাথমিকভাবে নিজে যদি আটকে যাওয়া জিনিস বের করতে না পারেন, তা হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। - মিশু যদি নেতিয়ে পড়ে। সতর্কতা - দুর্ঘটনা এড়াতে ছোট পুঁতি, মার্বেল, বোতাম, ফলের বিচি, ছোট পার্টসযুক্ত খেলনা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত। - শিশুদের খেলনা বা জামা কেনার সময়ও পুঁতি, ঘণ্টিওয়ালা না কেনাই ভালো। - যে সব শিশু মাত্র খেতে শিখেছে, তাদেরকে আঙুর, বেদানা বা লিচুর মতো ফল হাতে দেবেন না। একা একা খেতে বসিয়ে দিবেন না। - কিভাবে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে হয় তা বাসার বাকিদের শিখিয়ে রাখবেন। যাতে বিপদ ঘটলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কৃত্রিম অক্সিজেন জোগানো যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেবে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট : এম আবদুল্লাহ আকস্মিক ঝড়ে লন্ডভন্ড খাগড়াছড়ি টাইগারদের সিনিয়র সহকারী কোচ হলেন সালাহউদ্দিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে রাশিয়া, অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দাদের চুয়াডাঙ্গায় ২ নারীকে কুপিয়ে জখম, যুবক আটক টেকনাফে নৌকাসহ ২০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি কোটা সংস্কার আন্দোলন এতদূর যেতে দেয়াই সরকারের ভুল ছিল : হাছান মাহমুদ সিলেট সীমান্তে ৮ কোটি টাকার চোরাই পণ্যের চালান জব্দ ‘দেশকে নেতৃত্ব দিতে নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ প্রয়োজন’ সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সাক্ষাৎ রেগুলার শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের নেতৃত্বে আনা হবে : সাধারণ সম্পাদক

সকল