২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সাপে কাটলে লক্ষণ

-

সাপে কাটলে বিষক্রিয়ার লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে, বিষধর সাপে কাটলে ক্ষতস্থানে দাঁতের দাগ দেখা গেলে, ক্ষতস্থান থেকে অনবরত রক্তপাত ও ক্ষতস্থান অস্বাভাবিক ফুলে উঠলে এবং প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হলে, মাথাব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, পিপাসা হওয়া, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, মাথা ঘোরা, লাল বেশি হওয়া, হাত-পা অবশ হওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হওয়া, ঘাম বের হওয়া, পায়ে হলে ফুলে যাওয়া, মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়া, ফোস্কা হওয়া, রক্ত জমে যাওয়া, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া, সাপ নির্বিষ হলে সামান্য ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা সামান্য ক্ষত দেখা দেওয়া। ফার্স্টএইড - প্রথমেই দেখুন শরীরের কোথায় কেটেছে, কতক্ষণ আগে কেটেছে এবং কী ধরনের সাপে কেটেছে। -শিশুকে সাহস দিন, বেশির ভাগ সাপই নির্বিষ হয়ে থাকে। আবার বিষধর সাপ হলেও দংশনের সময় বেশি বিষ ঢালতে পারে না। -হাতে, পায়ে অথবা অন্য কোনো অঙ্গে কামড়ালে দ্রুত ক্ষত স্থানটির একটু উপরে শক্ত করে দড়ি বা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিন। এতে বিষ রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। তবে বাঁধন এমনভাবে দিতে হবে যেন খুব আঁটোসাঁটো বা ঢিলে কোনোটাই না হয়। অন্তত একটু চেষ্টা করলে একটা আঙুল যেন বাঁধনের নিচ দিয়ে যেতে পারে। -বাঁধনটা যেন কনুই, কবজি বা গোড়ালি এবং গলা বা মাথায় না হয়। যে দড়ি বা কাপড় দিয়ে বাঁধবেন তা যেন চওড়ায় দেড় ইঞ্চি হয়, কখনো তা যেন সরু সুতোর মতো বা রাবার ব্যান্ডের মতো না হয়। তবে বাঁধনটি একটানা ২০ মিনিটের বেশি একভাবে রাখবেন না। প্রতি ১০ মিনিট পর তা আলগা করে দিন। -এবার ক্ষতস্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিন। -যদি বিষধর সাপের কামড় হয়, তাহলে তাৎক্ষণিক ছুরি বা ব্লেড ভালো করে জীবাণুমুক্ত করে দংশিত স্থানে ১ সে.মি. লম্বা ও ১ মি.মি. গভীরে চিরে দিয়ে টিপে রক্ত বের করে ফেলুন। এতে রক্তের সাথে বিষ বেরিয়ে আসবে। তবে আত্মবিশ্বাস না থাকলে এমনটি করতে যাবেন না। কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে? -প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান, বিষধর সাপ হোক বা নির্বিষ সাপ হোক। -হাসপাতালে নেওয়ার সময় শিশুকে হাঁটতে না দিয়ে কাঁধে বা কোনো যানবাহনে করে নিয়ে যান। -আত্রক্রান্ত স্থানে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে, রক্তক্ষরণ হলে, চোখের পাতা পড়ে গেলে, ঘাড় শক্ত রাখতে না পারলে, হাত-পা অবশ হয়ে এলে ও শ্বাসকষ্ট হলে একটুও দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। যা করবেন না -মুখে রক্ত চুষে বিষ বের করে আনার চেষ্টা করবেন না। -বেদে, ওঝা বা অন্য কোনো জাদুটোনা বা ঝাড়ফুঁকের সাহায্যে সাপে কামড়ানোর বিষ নামানোর ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করবেন না। -দংশিত স্থান কিছুতেই কাটাছেঁড়া করবেন না। -লোহার তার, সুতা, কারেন্টের তার বা অন্য সরু জিনিস দিয়ে বাঁধা যাবে না। -সাপে কাটার স্থান বেশি নড়াচড়া করবেন না। -ক্ষতস্থানে গোবর, শিমের বীচি, আলকাতরা, লালা, ভেষজ ওষুধ বা কোনো প্রকার রাসায়নিক লাগাবেন না। -আক্রান্ত ব্যক্তিকে বমি করানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ কিংবা কান বা চোখের ভেতর কিছু ঢেলে দেবেন না।
সতর্কতা -দংশনের ঘটনা বেশি হয়ে থাকে পায়ে। কাজেই সাপ থাকতে পারে এমন জায়গায়, যেমন- ঘাসের মধ্যে কিংবা ঝোপঝাড়ের ভেতর হাঁটার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন। -কখনো সাপ সামনে পড়লে ধীরস্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত। সাপ প্ররোচনা ছাড়া অনর্থক দংশন করে না। -বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখুন। শয়নকক্ষের সাথে খাদ্যসামগ্রী, যেমন- ধান-চাল কিংবা হাঁস-মুরগি, কবুতর ইত্যাদি না রাখাই ভালো। - কোনো গর্তে হাত কিংবা পা দেবেন না ও স্টক করা লাকড়ি অথবা খড় খুব সাবধানে নাড়াচাড়া করুন।


আরো সংবাদ



premium cement