১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আর্জেন্টিনার নড়বড়ে ডিফেন্স, প্রতিরোধ মার্টিনেজের

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ - ছবি : নয়া দিগন্ত

কোপা আমেরিকার দুই আসর মিলে ১২ ম্যাচ অপরাজিত আর্জেন্টিনা। সাথে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নের খেতাব। কিন্তু এমন দলের ডিফেন্সলাইন কিভাবে এত নড়বড় হয়? গোল দিয়ে তার ধরে রাখতে পারছে না লিওনেল মেসির দল। এরপর হয় ফরোয়ার্ডরা তা উদ্ধার করছে, না হয় শেষ ভরসা তো গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

এমি খ্যাত এই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ একের পর এক দলকে পার করিয়ে নিচ্ছেন হার্ডল। যার উদাহরণ বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে। কানাডার মতো ছোট ফুটবল শক্তির কাছে কি করুণ অবস্থাই না হয়েছিল আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইনের।

ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোলের সুযোগ তৈরি করে উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা। শেষ পর্যন্ত পোস্টের নিচে আস্থার প্রতিদান দেন এমি মার্টিনেজ। সেই যোগ সূত্রেই লিওনেল মেসিরা আবারো কোপা আমেরিকার ফাইনালে।

গোল দিয়েও তা ধরে রাখতে না পারাটা নতুন কিছু নয় আর্জেন্টিনার জন্য। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ২ গোলে লিড নিয়েও তা দলে রাখতে পারেননি দিয়েগো ম্যারাডোনারা। দুই কর্নার থেকে ২ গোল পরিশোধ জার্মানদের। পরে ম্যারাডোনার পাসে জর্জ বুরুচাগার গোলে বিশ্বকাপ জয় কার্লোস বিলার্দোর দলের।

সবশেষ কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও হেরেছিল আর্জেন্টিনা। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২ গোলে লিড নিয়েও তাদের টাইব্রেকারে জিততে হয়েছিল। তা ডিফেন্ডারদের ভুলে খেলার শেষ ১০ মিনিটে ২ গোল হজম করায়। পরে টাইব্রেকারে এমি মার্টিনেজের প্রতিরোধই দলকে সেমিতে তোলে। এরপর ফাইনালেও একই অবস্থা। ফ্রান্সের বিপক্ষে ২-০ তে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। পরে কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোল খেলা অতিরিক্ত সময় নিয়ে যায়। সেখানে আবারো লিড নিয়েও আবার এমবাপ্পের গোলে স্কোর ৩-৩। পররর্তীতে জিতেই যেত ফ্রান্স যদি নিশ্চিত গোলের সুযোগ আটকে না দিতেন মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানেও মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাত তৃতীয় বিশ্বকাপ পাইয়ে দেয়। সেই বিশ্বকাপেই দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে ২ গোলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। অথচ এরপর শেষ ১৩ মিনিটের ঝড়ে সকারুজরা ১ গোল পরিশোধ করে ভীষণ চাপে ফেলে দেন লিওনেল মেসিদের। একেবারেই শেষ দিকে দ্বিতীয় গোলের খুব কাছে চলে গিয়েছিল এএফসির দেশটি। তখনও ত্রাতা এই এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। নিশ্চিত গোল রুখে দিয়ে দলকে জয় এনে দেন।

চলমান কোপা আমেরিকায় প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে দলের পোস্ট অক্ষত রাখেন অ্যাস্টন ভিলার এই কিপার। কয়েকটি সেভ করেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ১ গোলে এগিয়ে থেকেও তাদের জয়ের জন্য টাইব্রেকারের আশ্রয় নিতে হয়েছিল, এর কারণ ডিফেন্সের ভুল। ইনজুরি টাইমে সমতা আনে ইকুয়েডর। এরপর ইকুয়েডর মিস করে জয়ের সুযোগ। পরে টাইব্রেকারে এমি মার্টিনেজের ২ প্রতিরোধ আর্জেন্টিনাকে কানাডার প্রতিপক্ষ বানায়।

কানাডা শুরু থেকেই আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে ফাটল ধরিয়ে গোলের চেষ্টা চালায়। দ্বিতীয়ার্ধে মার্টিনেজের দুটি প্রতিরোধই দলের জয়কে নিশ্চিত করে। এই গোলরক্ষকের কৃতিত্বেই এবারের কোপা আমেরিকায় চার ম্যাচে জয় পেল আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের ৮৯ মিনিটে নিশ্চিত গোলের বল পা দিয়ে ঠেকিয়ে মাটিতে শুয়ে এক হাত ওপরে তুলে মার্টিনেজ জানান দেন, কেন তিনি সেরা গোলরক্ষক।

ভাষ্যকাররা তখন বারবার আর্জেন্টিনার ডিফেন্স লাইনের সমালোচনা করার পাশাপাশি এমিলিয়ানো মার্টিনেজের প্রশংসা করছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement